বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সম্প্রতি ইসলামাবাদে যে আত্মঘাতী হামলা হয়েছে, সেই হামলাকারী আগে ফৈজাবাদ চেকপয়েন্টকে লক্ষ্যবস্তু করে একটি ব্যর্থ হামলা চালিয়েছিল বলে রোববার (১৬ নভেম্বর) সূত্র জানিয়েছে। সোমবার (১৬ নভেম্বর) জিও নিউজের প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়।
হামলাকারীর সহায়তাকারী এবং ‘হ্যান্ডলার’ সম্পর্কে চলমান তদন্ত করতে গিয়ে দেখা যায় যে, আত্মঘাতী বোমারু ফৈজাবাদ চেকপয়েন্টে আগে হামলার চেষ্টা করে। হামলাকারী সেখানে পৌঁছেছিল কিন্তু বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য বিস্ফোরকের পিনটি সরাতে পারেনি।
সূত্র আরও জানায়, পিনটি না সরাতে পেরে সে রাওয়ালপিন্ডিতে ফিরে আসে এবং কয়েকদিন পর ইসলামাবাদের আদালত ভবনের বাইরে ওই হামলা চালায়।
আদালতে ওই আত্মঘাতী বিস্ফোরণে ১২ জন নিহত এবং আইনজীবী ও আবেদনকারীসহ কমপক্ষে ৩৬ জন আহত হন এবং আদালতের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নাকভি বলেন, আদালতে প্রবেশ করতে ব্যর্থ হওয়ার পর হামলাকারী পুলিশের গাড়ির কাছে বিস্ফোরণ ঘটায়।
পুলিশ জানায়, ওই বিস্ফোরণে আশেপাশের গাড়িগুলোতে আগুন লেগে যায় এবং এলাকা জুড়ে ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে পড়ে।
পুলিশের তৈরি একটি তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, বোমা হামলাকারী গত শুক্রবার ইসলামাবাদে এসেছিল এবং মোটরসাইকেলে করে পিরওয়াধাই থেকে আদালতে পৌঁছেছিল।
২০২২ সালের ডিসেম্বরের পর থেকে প্রায় তিন বছরের মধ্যে রাজধানীর প্রথম আত্মঘাতী বোমা হামলাটি ঘটে সেদিন। যখন ইসলামাবাদ আন্তঃসংসদীয় স্পিকার সম্মেলন এবং ষষ্ঠ মারগালা সংলাপসহ বড় বড় আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এদিকে, ঘটনার পর ফেডারেল সরকার, জি-১১-এর ইসলামাবাদ জেলা বিচার বিভাগীয় কমপ্লেক্সে আত্মঘাতী হামলার সাথে জড়িত তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান/ফিতনা আল-খাওয়ারিজ (টিটিপি/এফএকে) সেলের চার সদস্যকে গ্রেফতারের ঘোষণা দেয়।
জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীর ‘হ্যান্ডলার’ সাজিদুল্লাহ ওরফে শিনা স্বীকার করেছেন, টিটিপি/এফএকে কমান্ডার সাঈদ-উর-রেহমান ওরফে দাদুল্লা (বর্তমানে আফগানিস্তানের বাজাউরের বাসিন্দা এবং বাজাউরের নাওয়াগাইতে টিটিপির গোয়েন্দা প্রধান হিসেবে কর্মরত) টেলিগ্রাম অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে তার সাথে যোগাযোগ করেছিলেন ইসলামাবাদে আত্মঘাতী হামলা চালানোর জন্য, যাতে সর্বাধিক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
সরকারের এক্স হ্যান্ডেল থেকে প্রকাশিত সরকারী বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যে দাদুল্লা আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী (এসবি) উসমান ওরফে কারির ছবি সাজিদুল্লাহ ওরফে শিনার কাছে পাঠিয়েছিলেন তাকেও এই অভিযানে নেয়ার জন্য।
এতে আরও বলা হয়, দাদুল্লার নির্দেশে, সাজিদুল্লাহ ওরফে শিনা পেশোয়ার থেকে একটি সুইসাইড জ্যাকেট সংগ্রহ করে ইসলামাবাদে নিয়ে আসেন। বিস্ফোরণের দিন, সাজিদুল্লাহ শিনা, এসবি উসমান ওরফে কারির উপর সুইসাইড জ্যাকেটটি লাগিয়ে দেন।
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে তীব্র উত্তেজনার পটভূমিতে এই হামলাটি ঘটে, যার ফলে গত মাসে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে চরম সীমান্ত সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন নিহত হন। #















