ইসলামপুরে যমুনার বামতীর সংরক্ষণ প্রকল্পে আবারো ধস, আতঙ্কে এলাকাবাসী

ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি: উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আবারো জামালপুরের ইসলামপুর যমুনার বামতীর সংরক্ষণ প্রকল্প বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। এতে যমুনা নদীর বামপাড়ের বাসিন্দাদের মধ্যে ভাঙন আতঙ্ক বিরাজ করছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এর আগে গত ৭ এপ্রিল প্রায় ১০০ মিটার নদীতে বিলীন হয়। গত বুধবার রাতে তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কুলকান্দী-মুরাদাবাদ অংশে কবি-সাহিত্যিক, সাংবাদিক হাসন হাফিজুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত কুলকান্দী অংশে আবারো ধস দেখা দিয়েছে। বাঁধের ধস ঠেকাতে অতিদ্রুত যেনো কর্তৃপক্ষ টেকসই ব্যবস্থা গ্রহণ করেন দাবি এলাকাবাসীর।
জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্রে জানা যায়, যমুনার ভাঙন প্রতিরোধে জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার ফুটানী বাজার থেকে সরিষাবাড়ী উপজেলার পিংনা পর্যন্ত তিনটি পয়েন্টে ৪৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৬ দশমিক ৫৫ কিলোমিটার যমুনার বাম তীর সংরক্ষণ প্রকল্প বাঁধ নির্মাণ করা হয়।
২০১০ সালে শুরু হয়ে ২০১৭ সালে বাঁধ নির্মাণ শেষ হওয়ার পরেও কোটি কোটি টাকার মেনটেনেন্স কাজ চলমান রয়েছে। তার পরেও বারবার বাঁধে ধস মানুষের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে।
বাঁধ এলাকা বাসিন্দারা বলেন, বাঁধ নির্মাণ করায় বেলগাছ, কুলকান্দী, পার্থশী ও চিনাডুলী ইউনিয়নসহ উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন নদী ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ মে) সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উজানের পাহাড়ী ঢলে যমুনায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায়  থেকে হার্ড পয়েন্টের কুলকান্দী গ্রামের মিয়াপাড়া পুরাতন পাইলিংঘাট এলাকায় ব্যাপক ধস দেখা দিয়েছে।
ইতিমধ্যে বাঁধের অন্তত ২৫ মিটার অংশ যমুনার গর্ভে ধসে গেছে। বাঁধের সিসি ব্লক ধসে পড়ছে। হুমকির মুখে পড়েছে কুলকান্দী শামছুন্নাহার উচ্চ বিদ্যালয়, কুলকান্দী বাজার, একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, বসতবাড়িসহ কয়েক শত শত একর ফসলি জমি ও বিভিন্ন স্থাপনা। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বাঁধের ধস ঠেকাতে অতিদ্রুত যেনো কর্তৃপক্ষ টেকসই ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
স্থানীয় হাফিজ উদ্দিন বিটিসি নিউজকে বলেন, পানির প্রচন্ড চাপে বৃহস্পতিবার রাত থেকে হঠাৎ করে বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। আকবর আলী, সুজন, মিজান, সাইফুল মিজান বলেন, ‘নিম্নমানের কাজ হওয়ায় নির্মাণের দেড় বছরেই বাঁধ ধসে পড়ছে।
এছাড়া একটি শক্তিশালী বালু সিন্ডিকেটরা দীর্ঘদিন যাবৎ নদী থেকে বালু উত্তোলন করায় যমুনার বামতীর সংরক্ষণ প্রকল্প বার বার ধসে যাচ্ছে। বাঁধে ভাঙন রোধে অতিদ্রুত টেকসই পদক্ষেপ না নিলে বাঁধসহ যমুনার তীরবর্তী এলাকার ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে।
কুলকান্দী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ওবায়দুল হক বাবু বিটিসি নিউজকে জানান, বাঁধে ভাঙন ধরায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মু. তানভীর হাসান রুমান বিটিসি নিউজকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলা হয়েছে বালু ভর্তি ড্রাম পিংয়ের প্রস্তুতি চলছে।
জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাঈদ বিটিসি নিউজকে বলেন, ভাঙ্গন ঠেকাতে বালুভর্তি বস্তা ডাম্পিং এর কাজ শুরু করা হয়েছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি লিয়াকত হোসাইন লায়ন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.