ইসরাইলে নেতানিয়াহু সরকারের বিরুদ্ধে ফের বিক্ষোভ

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে ফের তুমুল বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। নেতানিয়াহু সরকারের পদত্যাগের দাবিতে রাজপথে নেমেছে দেশটির বিক্ষুব্ধ জনতা। রাজধানী তেল আবিব ও আরও কয়েকটি শহরে অবস্থান নিয়েছে তারা।
আল জাজিরার প্রতিবেদন মতে, বিচার ব্যবস্থা সংস্কারের নামে বিচার বিভাগের ক্ষমতা খর্ব করার পরিকল্পনার প্রতিবাদে টানা নয় সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার (৪ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজধানী তেল আবিব ও অন্যান্য স্থানে বিক্ষোভ শুরু হয়। শান্তিপূর্ণ এই বিক্ষোভ এখনও অব্যাহত রয়েছে।
এদিন রাজধানী তেল আবিবে আরও কয়েক হাজার নাগরিকের সঙ্গে বিক্ষোভে অংশ নেন ৫৩ বছর বয়সী ইতিহাসের শিক্ষক রনেন কোহেন। রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমি বিক্ষোভে এসেছি সরকারের (বিচার ব্যবস্থা) পরিকল্পনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে। আশা করি, বিশাল এই বিক্ষোভ সফল হবে এবং প্রমাণ করবে, আমরা হাল ছেড়ে দিই না।’
বিচার ব্যবস্থা সংস্কারের নামে ইসরাইলের সুপ্রিম কোর্টকে দুর্বল করা নেতানিয়াহুর বহুদিনের পরিকল্পনা। সম্প্রতি আরেকবার সরকার গঠনের পরই সেই পরিকল্পনা উন্মোচন করেন তিনি। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে ইসরাইলের পার্লামেন্টে সুপ্রিম কোর্টের রায়গুলো বাতিল করা সরকারের জন্য সহজ হবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, নেতানিয়াহু সরকারের এই সংস্কার পরিকল্পনা ইসরাইলের বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতাকে পঙ্গু করবে। দুর্নীতি ও দুর্নীতিবাজকে আরও উৎসাহিত করবে। সংখ্যালঘুদের অধিকার নষ্ট করবে ও ইসরাইলের আদালত ব্যবস্থায় বিশ্বাসযোগ্যতা বলে কিছু থাকবে না।
রয়টার্স বলছে, প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার সংস্কারের জন্য সুপ্রিম কোর্টকে লক্ষ্যবস্তু করার পর চলতি বছরের জানুয়ারির শুরু থেকে প্রায় প্রতি সপ্তাহেই নিয়ম করে বিক্ষোভ হচ্ছে। এসব বিক্ষোভে সোৎসাহে অংশ নিচ্ছে অসংখ্য ইসরাইলি। কোনো কোনো বিক্ষোভে বিক্ষোভকারীর সংখ্যা লাখ ছাড়িয়েছে।
বিচার ব্যবস্থা সংস্কারের লক্ষ্যে একটি আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। ওই আইন পাস হলে আইনসভা ও নির্বাহী বিভাগের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতাকে সীমিত হয়ে যাবে। একইসঙ্গে বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্তমূলক ক্ষমতা পাবেন পার্লামেন্টের আইনপ্রণেতারা।
বিতর্কিত এই আইনের সমর্থকরা বলছেন, সুপ্রিম কোর্টকে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করা থেকে লাগাম টানতে হবে। অন্যদিকে বিরোধীরা বলছেন, এই পরিকল্পনা আদালতকে দুর্বল করবে, নাগরিক স্বাধীনতাকে বিপন্ন করবে। এমনকি গণতন্ত্র হুমিকর পড়ে পড়বে।
রয়টার্সের প্রতিবেদন মতে, গত বুধবার থেকে বিক্ষোভের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ওইদিন ইসরাইলি পুলিশ বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে স্টান গ্রেনেড নিক্ষেপ করে।
শনিবার ৬৮ বছর বয়সী ওফির কুবিটস্কি নামে এক শিক্ষক বলেছেন, ‘ইসরায়েল একটি স্বৈরাচার দেশে পরিণত হওয়ার মতো বড় বিপদের মুখে রয়েছে। আমরা এখানে জয়ী না হওয়া পর্যন্ত বারবার বিক্ষোভ করতে আসব।’ #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.