ইসরাইলি প্রেসিডেন্টের আমিরাত সফর, হুতিদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের ছোড়া একটি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করার দাবি করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। এমন এক সময়ে এই হামলা হয়েছে, যখন ইসরাইলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগ উপসাগরীয় দেশটিতে প্রথমবারের মতো সফরে এসেছেন।
গেল দুসপ্তাহের মধ্যে তৃতীয়বারের মতো মার্কিনমিত্র আমিরাতে হামলা চালিয়েছেন হুতিরা। বিদ্রোহীদের সামরিক মুখপাত্র বলেন, আবুধাবিতে তারা জুলফিকার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছেন।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের গুরুত্বপূর্ণ কার্যালয় ও স্থাপনা থেকে বাসিন্দাদের দূরে থাকতে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
নিরাপদ ব্যবসা ও বৈশ্বিক পর্যটনের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে প্রশংসিত হয়ে আসছে আমিরাত। কিন্তু ইয়েমেনের হুতিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোটের অংশ দেশটি এবার হামলার নিশানায় পরিণত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে। এর আগে গেল ১৭ জানুয়ারি আবুধাবির একটি জ্বালানি স্থাপনায় হামলা চালালে দুই ভারতীয় ও এক পাকিস্তানি নাগরিক নিহত হয়েছেন।
হুমকি নিরসনে আমিরাতের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্টে জো বাইডেনের প্রশাসন। পেন্টাগন বলছে, আমিরাতে মার্কিন বাহিনী প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা সক্রিয় করেছে। ভূমি থেকে আকাশের ক্ষেপণাস্ত্রকে ধ্বংস করে দিতে এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। আমিরাতকে অতিরিক্ত সামরিক সহায়তার সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
এক সংবাদ সম্মেলনে পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, আমাদের প্রতিরক্ষা ও আমিরাতের মতো মিত্রদের সুরক্ষা ব্যবস্থা কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়, আমরা অব্যাহত সেই সুযোগ খুঁজছি।
হুতিদের এই হামলাকে বেহুদা উসকানি বলে আখ্যায়িত করেছেন আমিরাতের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। তিনি বলেন, যারা আমিরাতকে পরীক্ষা করতে চাচ্ছেন, তারা ভুল করবেন।
কিন্তু হুতিদের হামলায় অস্বাভাবিক নিরাপত্তা সংকট দেখা দিয়েছে। অভিবাসনপ্রধান দেশটিতে প্রাত্যহিক জীবনে হামলার কোনো প্রভাব দৃশ্যমান হয়নি। মৃদু শীত মৌসুমে সৈকত ও রেস্তোরাঁগুলোতে ভিড় উপচে পড়তে দেখা গেছে।
হামলার পর আমিরাতের বাজারের প্রচলিত ধারা কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়লেও অর্থনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই হামলায় দেশটির ব্যবসা ও বিনিয়োগের আস্থায় কোনো ভাটা পড়বে না।
হুতিদের অধিকাংশ ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করে দিতে পেরেছে আমিরাত। আরব দেশটি বলছে, গতকাল সোমবার (৩১ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালে সেটি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। জনবসতিহীন এলাকায় ধ্বংসাবশেষ পড়ে আছে।
সফরে আমিরাতের সিংহাসনের উত্তরসূরি শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল-নাহিয়ানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করেছেন ইসরাইলি প্রেসিডেন্ট। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, সম্পর্কের সেতু নির্মাণ ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় যখন ইসরাইলি প্রেসিডেন্ট আমিরাত সফরে, তখন বেসামরিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে ভীতি তৈরি করতে হুতিরা অব্যাহত হামলা চালিয়ে আসছে।
গতকাল সোমবার (৩১ জানুয়ারি) আমিরাত ছাড়েন আইজ্যাক হারজগ। তাকে বিমানবন্দরে এগিয়ে দেন আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল-নাহিয়ান। (সূত্র: রয়টার্স)। #

 

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.