ইয়েমেনে মার্কিন-ব্রিটিশ হামলা নিয়ে বিভক্ত ইউরোপ

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের ওপর বিমান ও নৌ হামলা শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন। তাদের এই হামলার যৌক্তিকতা তুলে ধরে একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেনসহ ১০টি দেশ। তবে এ যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেনি ইতালি, ফ্রান্স ও স্পেন। এই তিন দেশের এমন পদক্ষেপে ইয়েমেনে মার্কিন-ব্রিটিশ হামলা নিয়ে ইউরোপীয়দের মাঝে বিভক্তির বিষয়টি সামনে চলে আসে।
গতকাল শুক্রবার ভোরে ইয়েমেনে ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীটির বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় বিমান হামলা শুরু করার কথা জানায় যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন। দুই দেশের এই হামলায় লজিস্টিক ও গোয়েন্দা সহায়তা প্রদান করেছে নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও বাহরাইন।
এ ছাড়া ইয়েমেনে নৈশকালীন এই হামলার পক্ষে সাফাই গেয়ে এই ছয় দেশের সঙ্গে একটি যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছে জার্মানি, ডেনমার্ক, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ কোরিয়া। এমনকি লোহিত সাগরে হুতিরা হামলা বন্ধ না করলে জাহাজ চলাচল নিশ্চিতে আরও পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে এসব দেশ।
তবে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির কার্যালয়ের এক সূত্রের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, রোম এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করতে রাজি হয়নি। এ জন্য তাদের এ হামলায় অংশ নিতে বলা হয়নি।
আরেকটি সরকারি সূত্র বলেছে, ইতালিকে হামলায় যোগদানের কথা বলা হয়েছিল। তবে দুই কারণে তারা এতে অংশগ্রহণ করেনি। প্রথমটি হলো এতে অংশগ্রহণ করতে হলে আগে দেশের সংসদ থেকে অনুমতি নেওয়া লাগবে। বিষয়টি অনেক সময়সাপেক্ষ। দ্বিতীয় কারণ হলো লোহিত সাগরে শান্তির নীতি বেছে নিয়েছে রোম।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ফরাসি কর্মকর্তা বলেছেন, মার্কিন নেতৃত্বাধীন হামলায় যোগদান করলে হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনের ক্ষমতা হারাতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে অংশ নেয়নি ফ্রান্স। সম্প্রতি গাজা যুদ্ধ ঘিরে লেবাননে সংঘাত এড়াতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করেছে প্যারিস।
ইয়েমেনে হামলায় অংশগ্রহণ করতে ফ্রান্স অস্বীকার করেছে কি না জানতে চাইলে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, দুই দেশের কূটনৈতিক আলাপ-আলোচনা নিয়ে কথাবার্তা দীর্ঘ করবেন না। তিনি বলেন, যারা এই হামলায় অংশগ্রহণ করেছে তাদের তালিকা আপনারা দেখেছেন।
এ ছাড়া স্পেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্গারিটা রোবেলস বলেছেন, লোহিত সাগরে সামরিক অভিযানে মাদ্রিদ যোগ দেয়নি। কারণ তারা এই অঞ্চলে শান্তি নিশ্চিত করতে চায়।
লোহিত সাগরে হুতিদের হামলা ঠেকানো নিয়ে পশ্চিমাদের বিভক্তির বিষয়টি গত মাসেই প্রকাশ্যে আসে। ডিসেম্বরে লোহিত সাগরে জাহাজ চলাচল নিশ্চিত করতে একটি বহুজাতিক নৌজোট গঠনের কথা জানায় যুক্তরাষ্ট্র। তবে মার্কিন নেতৃত্বাধীন এই নৌজোটে অংশ নেয়নি ইতালি, স্পেন ও ফ্রান্স। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.