ইমরান খানের সমর্থকদের সেনা আইনে বিচার করবে সরকার

 


বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইমরান খানের গ্রেফতারে পাকিস্তানজুড়ে সহিংসতায় অংশ নেয়া বিক্ষোভকারীদের সেনা আইনে বিচার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ সরকার। তবে এতে উদ্বেগ জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো। তারা বলছে, এ আইনে বিচার করা হলে মানবাধিকার লঙ্ঘন হতে পারে।
মঙ্গলবার (১৭ মে) সহিংসতায় জড়িতদের সেনা আইনের অধীনে বিচারে সামরিক সিদ্ধান্তকে অনুমোদন দিয়েছে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি (এনএসসি)।
গত ৯ মে গ্রেফতার ইসলামাবাদ হাইকোর্ট থেকে গ্রেফতার করা হয় পাকিস্তাননের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দল তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) ইমরান খানকে। এরপরই গ্রেফতারের প্রতিবাদে দেশজুড়ে শুরু হয় বিক্ষোভ।
প্রথমে শান্তিপূর্ণ থাকলেও পরবর্তীতে পুলিশের বাধার কারণে বিক্ষোভ সহিংস রূপ নেয়। পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের বেশ কয়েকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ৮ বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়। আহত হয় আরও কয়েক ডজন।
বিক্ষোভকারীরা রাওয়ালপিন্ডিতে সেনাবাহিনীর সদর দফতর ও লাহোরে সেনাবাহিনীর কর্পস কমান্ডারের বাসভবনে হামলা চালায়। এসব ঘটনার পর ১০ মে রাজধানী ইসলামাবাদসহ, পাঞ্জাব, বেলুচিস্তান ও খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে সেনা মোতায়েন করা হয়। পরদিন (১১ মে) এক বিবৃতিতে ৯ মে-কে ‘কালো অধ্যায়’ হিসেবে স্মরণ করার ঘোষণা দেয় পাক সেনাবাহিনী।
ওই বিবৃতিতেই সেনাবাহিনী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলে, সেনাবাহিনী চরম সহনশীলতা, ধৈর্য ও সংযমের পরিচয় দিয়েছে এবং দেশের সর্বোত্তম স্বার্থে অত্যন্ত ধৈর্য ও সহনশীলতার সঙ্গে কাজ করেছে। পরিকল্পনা ও রাজনৈতিক উসকানিতে জড়িতদের চিহ্নিত করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গত সপ্তাহের ওই বিক্ষোভের পর পাকিস্তানজুড়ে ইমরান খানের দলের কয়েক হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থককে আটক করা হয়। এর মধ্যে শুধুমাত্র পাঞ্জাবেই আটক করা হয় ৩ হাজার ২০০ জনকে। বন্দি পিটিআই’র এই নেতাকর্মীদের বেসামরিক আদালতের বদলে সামরিক আদালতে বিচার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শাহবাজ শরিফ সরকার।
বুধবার (১৮ মে) পাঞ্জাব প্রদেশের প্রদেশের অন্তর্বর্তীকালীন তথ্যমন্ত্রী আমির মির সাংবাদিকদের জানান, শীর্ষ সামরিক কমান্ডারের বাসভবন ও সামরিক ভবনে হামলার অভিযোগে ৩ হাজার ২০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যাদের সামরিক আদালতে বিচার হবে।
গ্রেফতারকৃতদের বিষয়ে তিনি জানান, আক্রমণে তাদের জড়িত থাকার বিষয়টি শতভাগ নিশ্চিত হওয়ার পরই তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। আমারা এ বিচার কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে একটা উদাহর সৃষ্টি করতে চাই যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন পুনরাবৃত্তি করার সাহস না করে।
সামরিক আদালত বেসামরিক বিচার ব্যবস্থা থেকে আলাদা। যেখানে বিচারক সেনাবাহিনীর আইনি শাখার সদস্যরা। সামরিক আদালতে শুনানির সময় গণমাধ্যমে প্রবেশের অনুমতি নাই। ওই আদালতে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে অন্য কোনো আদালতে তিনি আর আপিল করার সুযোগ পাবেন না।
এদিকে আন্তর্জাতিক অধিকার সংস্থাগুলো সামরিকক আদালতে সাধারণ মানুষের বিচার ব্যবস্থার এমন সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেছেন। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছেন, এটি মানবাধিকার লঙ্গণ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.