ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্র একসাথে শক্তিশালী : স্টলটেনবার্গ

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রকে একে অপরের প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন পশ্চিমা সামরিক জোট ‘ন্যাটো’র প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ। এমনকি ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্র ‘একসাথে শক্তিশালী’ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। ন্যাটোর ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি একথা বলেন।
স্টলটেনবার্গ বলেন, ‘আমি একা আমেরিকায় বিশ্বাস করি না, একইভাবে একা ইউরোপেও বিশ্বাস রাখি না। আমি ন্যাটোতে ইউরোপ ও আমেরিকার একজোটে বিশ্বাস রাখি। কারণ, একসঙ্গে আমরা অধিক শক্তিশালী ও অধিক নিরাপদ।’
ন্যাটো প্রধান আরও বলেন, ইউক্রেনকে আরও দীর্ঘ সময় ধরে সামরিক সহায়তা প্রদানের জন্য জোট থেকে পাঁচ বছরে মেয়াদে ১০০ বিলিয়ন ইউরোর একটি তহবিল গঠনের কথা বিবেচনা করা হচ্ছে। যাতে যুক্তরাষ্ট্র বা ন্যাটো জোটের সদস্য রাষ্ট্রগুলোতে সরকার বা রাজনীতিতে পরিবর্তন আসলেও কিয়েভ যাতে আর্থিক সহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো ঝুঁকিতে না পড়ে।
বক্তৃতার সময় স্টলটেনবার্গ বলেন, ন্যাটো অবশ্যই ‘সঠিক কিছু করছে’, নিজেদের সূচনাকালে এই জোটটিতে ১২টি দেশ থাকলেও বর্তমানে তা ৩২টিতে উন্নীত হয়েছে। ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের কারণে সুইডেন এবং ফিনল্যান্ড তাদের দীর্ঘদিনের নিরপেক্ষতা পরিত্যাগ করেছে এবং ন্যাটো জোটে নতুন সদস্য হিসেবে যোগ দিয়েছে।
এদিকে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, রাশিয়া এবং ন্যাটোর মধ্যকার সম্পর্ক ‘সরাসরি সংঘর্ষের পর্যায়ে চলে গেছে’। কারণ সামরিক এই জোটটি ইতিমধ্যেই ইউক্রেনের চারপাশে সংঘাতে ‘জড়িত’ রয়েছে।
যদিও ন্যাটো একটি প্রতিরক্ষামূলক জোট, তারপরও পেসকভ অভিযোগ করেছেন, ‘সংঘাতের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহারের জন্য যুক্তরাষ্ট্র এই জোট গঠনের ধারণা সামনে এনেছিল। পরে জোটটি সজ্জিত করা, তৈরি এবং নিয়ন্ত্রণ করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র’ এবং বর্তমানে এটি একটি ‘অস্থিতিশীল উপাদান’।
এদিকে ৩২ সদস্যের এই জোট ইউক্রেনের জন্য দীর্ঘমেয়াদী সামরিক সহায়তার পরিকল্পনা শুরু করতে সম্মত হয়েছে। বেশ কয়েকটি দেশ শুধুমাত্র তত্ত্বগতভাবে এই উদ্যোগকে সমর্থন করেছে।
তবে রাশিয়ার সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখে চলা হাঙ্গেরি সতর্ক করেছে, তারা ‘ন্যাটোর এমন কোনো প্রস্তাবকে সমর্থন করবে না যা জোটটিকে যুদ্ধের কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারে বা এটিকে প্রতিরক্ষামূলক থেকে আক্রমণাত্মক জোটে রূপান্তরিত করতে পারে’।
এছাড়া হাঙ্গেরিয়ান সরকার দীর্ঘদিন ধরে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের লড়াইয়ে অর্থায়নের জন্য আন্তর্জাতিক উদ্যোগ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে চেয়েছে এবং কিছু সময়ের জন্য ইউক্রেনের জন্য ৫০ বিলিয়ন ইউরোর সহায়তা প্যাকেজ প্রদানে ইইউয়ের পরিকল্পনাও অবরুদ্ধ করেছে।
স্টলটেনবার্গ স্বীকার করেছেন, (ইউক্রেনকে) সমর্থনের কাঠামোর বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে ন্যাটো পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এই নীতিতে একমত হয়েছেন: ‘(তারা) কোনও ভুল করবেন না, ইউক্রেন এখন এবং দীর্ঘ সময়ের জন্য ন্যাটো সমর্থনের ওপর নির্ভর করতে পারে।’ #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.