ইউরেশিয়ায় নিরাপত্তা সহযোগিতা গভীর করবে রাশিয়া ও চীন

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউরোপ ও এশিয়াজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগ মোকাবিলায় নিরাপত্তা সহযোগিতা গভীর করার উপায় নিয়ে আলোচনা করতে সম্মত হয়েছে রাশিয়া ও চীন। মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) বেইজিংয়ে চীনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর এ কথা বলেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। দুই দিনের চীন সফরে রয়েছেন তিনি। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এখবর জানিয়েছে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে চীন ও রাশিয়া ‘সীমাহীন’ অংশীদারিত্ব ঘোষণা করেছিল। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বেইজিং সফরে এমন ঘোষণা দেওয়া হয়। এর কয়েক দিন পর ইউক্রেনে সর্বাত্মক আক্রমণ করে রুশবাহিনী। এর ফলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ও বড় যুদ্ধের সূত্রপাত হয়। যা এখন তিন বছরে গড়িয়েছে।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ের সঙ্গে আলোচনার পর ল্যাভরভ বলেছেন, পুতিন ইউরেশীয় নিরাপত্তা জোরদার করার পরামর্শ দিয়েছেন এবং চীন ও রাশিয়া এই বিষয়ে আমাদের মতো সমমনাদের নিয়ে একটি সংলাপ শুরু করতে সম্মত হয়েছে।
ল্যাভরভ বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে ন্যাটোর মাধ্যমে ইউরো-আটলান্টিক নিরাপত্তা কাঠামো রয়েছে, রয়েছে ওএসসিই। কিন্তু স্বার্থের ভারসাম্যের ভিত্তিতে অর্থপূর্ণ আলোচনা ও সম্মতিতে এই কাঠামো আর কার্যকর হচ্ছে না।
রুশ বার্তা সংস্থা চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বলেছে, এশিয়া-প্রশান্ত অঞ্চলে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো জোটের কর্মকাণ্ড সম্প্রসারণ করা বা সংঘাতকে উসকানি দেওয়া উচিত হবে না।
বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে ওয়াং নির্দিষ্টভাবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা ইউক্রেনে যুদ্ধের কথা উল্লেখ করেননি। তবে রাশিয়া-চীন সম্পর্কের সর্বদা পাঁচনীতির কথা তুলে ধরেছেন বলেছেন চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
ওয়াং বলেছেন, দুই দেশের উচিত আধিপত্যবাদ এবং ক্ষমতার রাজনীতি করা এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ে কয়েকটি দেশের একচেটিয়া ক্ষমতার বিরোধিতা করা।
চীনকে সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচনা করে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিকে রাশিয়াকে বৃহত্তম রাষ্ট্রীয় হুমকি মনে করে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মনে করেন, এই শতাব্দী গণতন্ত্র ও স্বৈরাচারের মধ্যে লড়াইয়ের জন্য পরিচিত হবে।
পুতিন ও শি উভয়েই একটি বিস্তৃত বিশ্ব দৃষ্টিভঙ্গি ধারণ করেন। তারা পশ্চিমা বিশ্বকে অধঃপতিত ও ক্ষয়িষ্ণু হিসেবে বিবেচনা করেন। কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, কৃত্রিম জীববিজ্ঞান থেকে শুরু করে গুপ্তচরবৃত্তি ও সামরিক শক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রেষ্ঠত্বকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে চীন।
২০২৩ সালে চীন ও রাশিয়ার বাণিজ্য রেকর্ড ২৪০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়। এক বছরে আগের তুলনায় তা ২৬ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে। ২০২৩ সালে চীন থেকে রাশিয়ায় পণ্য সরবরাহ ৪৬ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছে। আর রাশিয়া থেকে চীনের আমদানি বেড়েছে ১৩ শতাংশ।
একই বছরে চীন ও রাশিয়ার বাণিজ্য ১১ শতাংশ কমে ৬৬৪.৫ বিলিয়নে নেমেছে।
ইউক্রেন যুদ্ধের প্রথম বার্ষিকীতে রাশিয়া ১২ দফার একটি শান্তি পরিকল্পনার প্রস্তাব দেয়। রাশিয়া চীনের প্রস্তাবকে যুক্তিসংগত বলে উল্লেখ করেছে। পশ্চিমারা তা প্রত্যাখ্যান করেছে। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.