ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণে পশ্চিমা ট্যাংকের ভূমিকা কেমন হবে?

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউক্রেনে পৌঁছাতে শুরু করেছে পশ্চিমা যুদ্ধের ট্যাংক। তবে ধারণা করা হচ্ছে, রাশিয়ার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সম্ভাব্য পাল্টা আক্রমণে খুব তাড়াতাড়ি এসব অত্যাধুনিক ট্যাংক কাজে লাগানো হবে না।
মঙ্গলবার জার্মানি নিশ্চিত করেছে, ১৮টি লেপার্ড ২এ৬ ট্যাংক ইউক্রেনে পাঠানো হয়েছে। এগুলোর সঙ্গে ছিল গোলাবারুদ, অতিরিক্ত যন্ত্রাংশ এবং দুটি আর্মর্ড রিকভারি ভেহিক্যাল।
জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস বলেছেন, প্রতিশ্রুতি অনুসারে আমাদের ট্যাংক যথাসময়ে ইউক্রেনীয় বন্ধুদের হাতে পৌঁছেছে। আমি নিশ্চিত এগুলো দিয়ে তারা রণাঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ কিছু করতে পারবে।
পশ্চিমা ট্যাংকের জন্য দীর্ঘদিন ধরে অনুরোধ জানিয়ে আসছে ইউক্রেন। দেশটি এখন সোভিয়েত আমলের ট্যাংক ব্যবহার করছে। এগুলোর তুলনায় জার্মানির লেপার্ড ২ ট্যাংক অনেক বেশি আধুনিক।
জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, লেপার্ড ১এ৫ ট্যাংকও যথাসময়ে পৌঁছে যাবে। ২০২৩ সালের মধ্যে ৮০টি পুরনো ট্যাংক পাওয়ার প্রত্যাশা রয়েছে।
মঙ্গলবার ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেক্সি রেজনিকভ বলেছেন, যুক্তরাজ্য থেকে চ্যালেঞ্জার ২ ট্যাংক কিয়েভে পৌঁছেছে। এর আগের দিন যুক্তরাজ্য সরকার নিশ্চিত করেছে, ইউক্রেনীয় সেনাদের এই ট্যাংক পরিচালনার প্রশিক্ষণ সমাপ্ত হয়েছে এবং তারা ইউক্রেন ফিরে গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব ট্যাংকের কার্যকারিতা নির্ভর করছে সমন্বিত সশস্ত্র অভিযানের ওপর কিংবা যুদ্ধক্ষেত্রের পরিস্থিতির ওপর।
যুক্তরাজ্যের কিং’স কলেজ লন্ডনের ওয়ার স্টাডিজ ডিপার্টমেন্টের গবেষক ম্যারিনা মিরন বলেছেন, শুধু তাই নয়, আগামী সপ্তাহগুলোর আবহাওয়া পরিস্থিতির ওপর এসব ট্যাংকের কার্যকারিতা নির্ভর করছে। এসব ট্যাংকের জন্য আবহাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এগুলো অনেক ভারী এবং কাদায় আটকে যায়।
তিনি বলেন, এই মুহূর্তে এগুলো ব্যবহার করার কোনও অর্থ হয় না। প্রধান সড়কে চলাচলের উপযুক্ত হওয়ায় এগুলোর ব্যবহার সীমিত থাকবে।
সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের এক সিনিয়র উপদেষ্টা মার্ক কানসিয়ান বলেছেন, ইউক্রেনীয়রা হয়ত আক্রমণ শুরুর আগে মাটি শক্ত হওয়ার অপেক্ষা করবে।
যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব বার্মিংহামের আন্তর্জাতিক রাজনীতির অধ্যাপক ডেভিড ডুন বলেছেন, মার্চ মাসে তারা এগুলো ব্যবহার করবে বলে মনে হয় না। এই মুহূর্তে পশ্চিমা ট্যাংক যুদ্ধে মোতায়েন করতে না পারলেও এগুলো ইউক্রেনের কাছে থাকার অর্থ হলো তারা যেকোনও সময় এগুলো ব্যবহার করতে পারবে। রণক্ষেত্রে মোতায়েনের আগে অপর সামরিক অভিযানের সঙ্গে এসব ট্যাংকে যুক্ত করার সময় পাবে তারা।
কানসিয়ান বলছেন, এগুলো যত দ্রুত পাওয়া ছিল সঠিক পথ। কারণ এগুলোকে সামরিক অভিযানে যুক্ত করতে কিছু সময় লাগে। এটি সম্পন্ন হলে পাল্টা আক্রমণে ইউক্রেন এগুলো ব্যবহার করতে পারবে।
বেশ কিছু দিন ধরে পশ্চিমা বিশ্লেষক ও ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে সম্ভাব্য পাল্টা আক্রমণের কথা বলে আসছেন। যদিও ইউক্রেনের পক্ষ থেকে পাল্টা আক্রমণ নিয়ে সামরিক পরিকল্পনা গোপন রাখা হয়েছে।
কানসিয়ান যুক্তি দিচ্ছেন, যখন পাল্টা আক্রমণ শুরু হয়ে যাবে ইউক্রেন হয়ত প্রথমে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা রেখায় ফাটল ধরাতে চাইবে। এরপর পশ্চিমা ট্যাংক নিয়ে উন্মুক্ত স্থানে আক্রমণে যাবে তারা।
ডুন যুক্ত করে বলছেন, এটি হলো গ্রীষ্মের শেষ দিকের জন্য সক্ষমতা বাড়ানো। আবহাওয়ার যখন উন্নতি ঘটবে সেনারা ট্যাংকগুলোর সঙ্গে আরও পরিচিত হয়ে নেবে এবং এই পাল্টা আক্রমণের জন্য ইউক্রেন অনেক সময় নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে পশ্চিমা ট্যাংকের মানসিক প্রভাব রয়েছে। ইউক্রেনীয় সেনাদের মনোবল বাড়াতে সহযোগিতা করবে। (সূত্র: নিউজ উইক)। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.