বিটিসিআন্তর্জাতিকডেস্ক: পাটিয়া পাথর গ্রামের বছর তেতাল্লিশের মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘অস্হায়ী একটা আস্তানার নিচে ঠাঁই নিয়েছিলাম। কিন্তু সেটাও জলের তোড়ে ভেসে গেছে। শেষমেশ প্রাণ বাঁচাতে বাচ্চাদের নিয়ে রেললাইনে উঠে এসেছি’।
শেষ সম্বলটুকুও হারিয়েছেন তারা। প্রাণ বাঁচাতে এই অসহায় মানুষগুলো এখন খোলা আকাশের নিচে রেলালাইনের দুই পাশে আশ্রয় নিয়েছেন। ভিটেমাটি হারিয়ে তাদের আর অন্য কোথাও থাকার জায়গা মেলেনি। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বন্যায় ভিটেমাটি হারানো ৫০০টি পরিবারের এখন ঠাঁই মেলেছে সেখানে।
আসামের যমুনামুখ জেলার দুই গ্রাম চাংজুরাই এবং পাটিয়া পাথর গ্রামের এই চিত্র। মাথা গোঁজার মতো কোনো জায়গা না থাকায় তারা এখন এভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। শিশু সন্তানদের নিয়ে আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের। খাবার বলতে সে রকম কিছুই জুটছে না। অভিযোগ, সরকারি সাহায্যও মিলছে না ঠিক মতো।
পাটিয়া পাথর গ্রামের বছর তেতাল্লিশের মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘অস্থায়ী একটা আস্তানার নিচে ঠাঁই নিয়েছিলাম। কিন্তু সেটাও জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে। শেষমেশ প্রাণ বাঁচাতে বাচ্চাদের নিয়ে রেললাইনে উঠে এসেছি।
গত তিন দিন ধরে খোলা আকাশের নিচে কাটাতে হয়েছে। খাবার বলতে কিছুই ছিল না। ছিল না পানীয় জলও। কোনো রকমে একটা ত্রিপল পেয়ে তার নিচেই মাথা গুঁজেছি।’ চার দিন পর স্থানীয় প্রশাসনের তরফে কিছু চাল, ডাল এবং তেল দেওয়া হয়। কেউ পেয়েছেন, কেউ আবার পাননি। ফলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হয়ে উঠছে বলে দাবি আরো এক গ্রামবাসী নাসিবুর রহমানের।
চাংজুরাই গ্রামের বাসিন্দা বিউটি বলেন, ‘চোখের সামনে ঘর জলের তোড়ে ভেসে যেতে দেখলাম। ধান চাষ করেছিলাম। সব শেষ হয়ে গেল।’ যমুনামুখ জেলার মতো আসামের ২৯টি জেলার ছবিটাও একই রকম। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত আড়াই হাজারের বেশি গ্রাম। ৬ লাখ মানুষ প্রভাবিত। ৩৪৩টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে রাজ্যে। সেখানে প্রায় ৮৭ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.