আসামে বন্যায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: টানা ভারী বৃষ্টিতে ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্য আসামের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। অবিরাম বৃষ্টিতে রাজ্য জুড়ে নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। যদিও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ১২ জেলায় কমপক্ষে সাড়ে ৩৩ হাজারে নেমে এসেছে। এদিকে নেপালে ভারী বৃষ্টিতে হড়কা বানে ১ জনের মৃত্যু ও ২৫ জন নিখোঁজ রয়েছে।
আসাম রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (এএসডিএমএ) বন্যা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাছাড়, দাররাং, ধেমাজি, ডিব্রুগড়, গোলাঘাট, হোজাই, লখিমপুর, নগাঁও, নলবাড়ী, সোনিতপুর, তিনসুকিয়া এবং উদালগুড়ি জেলায় বন্যার কারণে ৩৩ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
লখিমপুরে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। এ জেলায় ২৫ হাজারের বেশি মানুষ বন্যায় ভুগছেন। তারপরেই আছে ডিব্রুগড়। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার ৮০০। আর তিনসুকিয়ায় প্রায় ২ হাজার ৭০০ জন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রশাসন তিন জেলায় ১৬টি ত্রাণ বিতরণকেন্দ্র ছাড়াও একটি ত্রাণশিবির চালু করেছে। তবে সেখানে বর্তমানে কেবল ৯ জন অবস্থান করছেন।
এএসডিএমএ জানিয়েছে, বন্যায় বর্তমানে ১৪২টি গ্রাম পানির নিচে রয়েছে। আসাম জুড়ে ১ হাজার ৫১০ দশমিক ৯৮ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে আরো বলা হয়েছে, বিশ্বনাথ, বোঙ্গাইগাঁও, ডিব্রুগড়, কোকরাঝাড়, লখিমপুর, মাজুলি, মরিগাঁও, নগাঁও, শিবসাগর, সোনিতপুর, দক্ষিণ সালমারা এবং উদালগুড়ি জেলায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভারী বৃষ্টির কারণে ডিমা হাসাও ও করিমগঞ্জ থেকে ভূমিধসের খবর পাওয়া গেছে।
এ ছাড়া সোনিতপুর, লখিমপুর, কাছাড়, ধেমাজি, গোয়ালপাড়া, নগাঁও, উদালগুড়ি, চিরাং, ডিব্রুগড়, কামরুপ, কার্বি আংলং, করিমগঞ্জ, বোঙ্গাইগাঁও, মাজুলি, মরিগাঁও, শিবসাগর এবং দক্ষিণে বন্যার পানিতে বাঁধ, রাস্তা, সেতু এবং অন্যান্য অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, নেয়ামতিঘাটে ব্রহ্মপুত্র নদ, এনএইচ রোড ক্রসিংয়ে এর উপনদী পুথিমারি এবং কামপুরের কপিলি বিপত্সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে নেপালের পূর্বাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিতে সৃষ্ট হড়কা বান ও ভূমিধসে এক জনের মৃত্যু ও অন্তত ২৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন। গত সপ্তাহে বর্ষা ঋতু শুরু হওয়ার পর থেকে এটি জানামতে দেশটিতে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। সরকারি কর্মকর্তা বিমল পউডেল জানান, সঙ্খুয়াসভা জেলায় হিউয়া নদীতে নির্মাণাধীন জলবিদ্যুত্ প্রকল্প ভেসে গিয়ে ১৬ শ্রমিক নিখোঁজ হন। এর মধ্যে এক জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ শ্রমিকদের সন্ধানে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ বলে জানান তিনি।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পার্শ্ববর্তী তাপ্লেজুং ও পাঁচথর জেলায় হড়কা বান ও ভূমিধসে আরো ৯ জন নিখোঁজ হয়েছেন। রাতভর বৃষ্টিতে মেচি মহাসড়কের দুটি সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এতে প্রত্যন্ত তাপ্লেজুং জেলার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তাপ্লেজুংয়ে চার জন নিখোঁজ রয়েছেন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.