আল-জাজিরা সাংবাদিকের শেষকৃত্যে হামলা, তদন্তের আশ্বাস ইসরাইলের

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্কআল-জাজিরার নারী সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহর শেষকৃত্যানুষ্ঠানে পুলিশি হামলার তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে ইসরাইল। তবে ইসরাইলি প্রশাসনের তদন্তের আশ্বাস প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা। সাংবাদিক হত্যার ঘটনায় কোনো পক্ষকে দায়ী না করে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে নিরাপত্তা পরিষদও।
আল-জাজিরার সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহর শেষকৃত্যের মিছিলে হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি নিরাপত্তা বাহিনী। একপর্যায়ে ইসরাইলি নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের সংঘর্ষ বাধলে, কাঁধে থাকা কফিনটি অল্পের জন্য মাটিতে পড়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পায়।
শুক্রবার (১৩ মে) অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের শেখ জাররাহ এলাকার পাশেই সেইন্ট লুইস ফ্রেঞ্চ হসপিটাল থেকে সাংবাদিক শিরিনের মরদেহ সরিয়ে নেওয়ার সময় মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের ওপর লাঠিচার্জ করা হয়। যদিও উত্তেজনা আর সংঘর্ষের মধ্যেই চলে শেষকৃত্যানুষ্ঠান।
শুক্রবারের ওই ঘটনায় বিশ্বব্যাপী আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই, পুলিশি হামলার সুষ্ঠু তদন্তের ঘোষণা দিয়েছে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে শিগগিরই বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হবে বলেও জানানো হয়। যদিও এরই মধ্যে ইসরাইলি বাহিনীর যে কোনো ধরনের তদন্তের আশ্বাস প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ।
সম্প্রতি অধিকৃত পশ্চিম তীরে সহিংসতা বেড়ে যাওয়ায় ফিলিস্তিনি অধ্যুষিত এলাকা জেনিনে অভিযান জোরদার করে ইসরাইল। সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের নামে অসংখ্য ফিলিস্তিনিকে হত্যার পাশাপাশি চলছে ব্যাপক ধরপাকড়। বুধবার (১১ মে) এমনই এক অভিযানের সময় সংবাদ সংগ্রহে যান শিরিন আকলেহ। এ সময় ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে নিহত হন তিনি। আল-জাজিরার দাবি, শিরিন আকলেহকে ঠান্ডা মাথায় খুন করেছে ইসরাইলি বাহিনী।
ইসরাইলি সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, শিরিনের ভাইকে ইসরাইলি পুলিশ সতর্ক করে বলেছে, শেষকৃত্যে যেন কোনো রকম বাড়তি আনুষ্ঠানিকতা করা না হয়। তা নাহলে তার বোনের শেষকৃত্যের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হবে।
সাংবাদিক শিরিন ফিলিস্তিনিদের প্রতিবাদের কণ্ঠস্বর ছিলেন। জেরুজালেমে জন্ম হলেও মার্কিন নাগরিকত্ব ছিল তার। বন্ধু ও সহকর্মীরা শিরিনকে একজন সাহসী ও দয়ালু সাংবাদিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন। প্রায় তিন দশকের পেশাগত জীবনে ফিলিস্তিনিদের সংগ্রাম তুলে ধরেছিলেন এ সাংবাদিক।
তবে হামলার দায় নিতে অস্বীকার করেছে ইসরাইল। দেশটির সেনাবাহিনী সর্বশেষ বিবৃতিতে বলেছে, তাকে (সাংবাদিক শিরিনকে) কারা গুলি করেছে, এটা স্পষ্ট নয়। এর আগে ইসরাইল বলেছিল, ফিলিস্তিনি বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত হয়েছেন ওই সাংবাদিক।
এদিকে সাংবাদিক হত্যার ঘটনায় কোনো পক্ষকে দায়ী না করে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। হত্যাকাণ্ডের স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থাও।
ফিলিস্তিনিদের আর্তনাদ আড়াল করতে সাংবাদিক হত্যা ইসরাইলের নতুন কৌশল বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা। ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফার তথ্য অনুযায়ী, দুই দশকে অর্ধশতাধিক গণমাধ্যমকর্মীকে হত্যা করেছে ইসরাইলি সেনারা। (সূত্র: আল জাজিরা)। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.