আল-আকসায় ইসরায়েলি পুলিশের তাণ্ডবে ২ শতাধিক ফিলিস্তিনি আহত

(আল-আকসায় ইসরায়েলি পুলিশের তাণ্ডবে ২ শতাধিক ফিলিস্তিনি আহত–ছবি: সংগৃহীত)
বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ফিলিস্তিনের জেরুজালেমে আল-আকসা মসজিদে জুমাতুল বিদায় মুসল্লিদের জমায়েতকে কেন্দ্র করে ইসরায়েলি পুলিশের সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত ২০৫ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জানায়, গত শুক্রবার জুমাতুল বিদার পর থেকেই ইসরায়েলি দখলদারিত্বের প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ করা হয় শেখ জাররাহসহ পূর্ব জেরুজালেমের বিভিন্ন স্থানে। ইফতারের পর রমজানের বেজোড় রাত্রিতে, লাইলাতুল কদর সন্ধানে নামাজ আদায়ের জন্য আল আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে জড়ো হতে থাকেন ফিলিস্তিনিরা। এ সময়ই তাদের ওপর হামলা চালায় ইসরায়েলি পুলিশ। এমনকি নামাজরতদের লক্ষ্য করে গুলিও চালানো হয়। মসজিদ থেকে পিটিয়ে বের করে দেওয়া হয় অনেককে। ছোড়া হয় টিয়ার শেল। এ সময় বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনিকে আটকও করা হয়।

আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গত শুক্রবার (০৭ মে) জুমাতুল বিদার নামাজ আদায় করতে ফিলিস্তিনিরা মসজিদে জড়ো হয়েছিলেন। তখন জোর করে মুসল্লিদের মসজিদ থেকে বের করে দেয় ইসরায়েলি পুলিশ। এ সময় ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে ইসরায়েলি পুলিশের সংঘর্ষ হয়। জেরুজালেমের পুরনো শহরাঞ্চল আল জাররাহ থেকে কয়েকটি ফিলিস্তিনি পরিবারকে ইহুদিবাদী দখলদারেরা উচ্ছেদ করবে এমন খবরে উত্তেজনা ছড়ায়। পরে ইসরায়েলি পুলিশ আল-আকসা মসজিদে মুসল্লিদের ওপর চড়াও হয়।

এ ঘটনায় মুসল্লিদের বেশিরভাগ মসজিদের অভ্যন্তরেই আহত হন। সংঘর্ষে ইসরায়েলি বাহিনী রাবার বুলেট ও স্ট্যান গ্রেনেড ছোড়ে। আর ফিলিস্তিনিরা পাথর ও বোতল ছোড়ে। স্থানীয় হাসপাতালের ওপর চাপ কমাতে গুরুতর নয় এমন আহতদের চিকিৎসায় অস্থায়ী হাসপাতাল বসায় রেড ক্রিসেন্ট কর্তৃপক্ষ।

ফিলিস্তিনি মানবাধিকার কর্মীরা বলেন, মুসল্লিদের ছত্রভঙ্গ করে দিতে ইসরায়েলি বাহিনী লাঠিপেটা করেছে, রাবার বুলেট ছুড়েছে। এমনকি স্টান গ্রেনেড নিক্ষেপও করেছে তারা। মুসল্লিদের ঘিরে রেখে তাদের ওপর অমানবিক আচরণ করেছে দখলদার দেশটির পুলিশ। ওই এলাকায় বেশ কিছুদিন ধরেই উত্তেজনা চলছিল। আল-আকসা মসজিদ ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কাছে অন্যতম শ্রদ্ধার স্থান। এ স্থানটিতে আগেও একাধিকবার সহিংসতা হয়েছে, যা আবার দেখা গেল শুক্রবার।

ইসরায়েলি পুলিশের দাবী, নামাজের পর ‘হাজার হাজার ধর্মাবলম্বী দাঙ্গা শুরু করলে’ তারা ‘আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য’ শক্তি প্রয়োগ করতে বাধ্য হয়। হামলার সময় আল-আকসার একজন কর্মকর্তা মসজিদের লাউড স্পিকারে সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান। লাউড স্পিকারে তিনি পুলিশ বাহিনীকে অবিলম্বে মুসল্লিদের উদ্দেশে স্টান গ্রেনেড নিক্ষেপ বন্ধ করার অনুরোধ করছিলেন এবং মুসল্লিদের শান্ত হতে বলছিলেন।

এ সহিংসতার পর সবাইকে উত্তেজনা প্রশমন করার আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। সেই সঙ্গে জেরুজালেমের শাইখ জারাহ এলাকা থেকে উচ্ছেদের হুমকিতে ক্ষোভও বাড়ছে।

জাতিসংঘের একজন মুখপাত্র ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যেন যেকোনো ধরনের উচ্ছেদের কর্মকাণ্ড বন্ধ করা হয়। বিক্ষোভকারীদের প্রতি যেন সর্বোচ্চ সহনশীলতা দেখানো হয় বলেও আহ্বান জানান তিনি। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.