আরেকটি বড় জয়ে বার্সেলোনার ছয়ে ছয়

বিটিসি স্পোর্টস ডেস্ক: চ্যাম্পিয়ন্স লিগে হারের হতাশা পেছনে ফেলে লা লিগায় ফিরে আবারও নিজেদের বিধ্বংসী রূপে মেলে ধরল বার্সেলোনা। এবার তাদের আগুনে পুড়ল ভিয়ারেয়াল। আরেকটি বড় জয়ে শীর্ষস্থান মজবুত করল হান্সি ফ্লিকের দল।
প্রতিপক্ষের মাঠে রোববার লিগ ম্যাচটি ৫-১ গোলে জিতেছে বার্সেলোনা।
প্রথমার্ধে রবের্ত লেভানদোভস্কির জোড়া গোলের পর ব্যবধান কমান আয়োসে পেরেস। দ্বিতীয়ার্ধে পাবলো তোরে ব্যবধান আবার বাড়ানোর পর জোড়া গোল করেন রাফিনিয়া। মাঝে পেনাল্টি মিস করে হ্যাটট্রিকের সুযোগ হাতছাড়া করেন লেভানদোভস্কি।
লা লিগায় প্রথম পাঁচ ম্যাচে জয়ের পর গত সপ্তাহে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে প্রথম ম্যাচে মোনাকোর মাঠে ৮০ মিনিট ১০ জন নিয়ে খেলে ২-১ গোলে হেরে বসে বার্সেলোনা। ঘরোয়া লিগে ঠিকই জয়ের ধারা ধরে রাখল তারা।
লিগে সবশেষ তিন ম্যাচে তারা গোল করল মোট ১৬টি, বিপরীতে হজম করল মাত্র দুটি।
জয়ের আনন্দের মাঝেই বার্সেলোনার জন্য অস্বস্তির কাঁটা হয়ে এসেছে মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেনের চোট। হাঁটুর মারাত্মক চোটে প্রথমার্ধে স্ট্রেচারে মাঠ ছাড়েন জার্মান গোলরক্ষক।
ধারণা করা হচ্ছে, লম্বা সময় মাঠের বাইরে থাকতে হবে বার্সেলোনা অধিনায়ককে।
ষষ্ঠ মিনিটে ম্যাচের প্রথম পরিষ্কার সুযোগ পায় ভিয়ারেয়াল। বাম দিক থেকে সতীর্থের ক্রসে বক্সে হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি সাবেক আর্সেনাল ফরোয়ার্ড নিকোলাস পেপে। দুই মিনিট পর ইয়েরেমি পিনো বার্সেলোনার জালে বল পাঠালেও অফসাইডের কারণে গোল মেলেনি।
দ্বাদশ মিনিটে সুযোগ পায় বার্সেলোনা। লামিনে ইয়ামালের কোনাকুনি শট ফেরান ভিয়ারেয়াল গোলরক্ষক। পরের মিনিটে পাল্টা আক্রমণে যায় স্বাগতিকরা। বক্সের ভেতর থেকে পেপের নেওয়া শট ফিরিয়ে দেন টের স্টেগেন।
সপ্তদশ মিনিটে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিলেন ইয়ামাল। তার চমৎকার কোনাকুনি শট দূরের পোস্টে লাগে। একটু পর পেদ্রির নিচু শট পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।
২০তম মিনিটে গোলের অপেক্ষা ফুরায় বার্সেলোনার। পাবলো তোরে দারুণ থ্রু বল বাড়ান বক্সে, প্রথম স্পর্শে ডান পায়ের শটে দলকে এগিয়ে নেন লেভানদোভস্কি।
আট মিনিট পর আরেকটি গোল পেতে পারতেন তিনি। এবার কাছ থেকে তার প্রচেষ্টা ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক।
৩৫তম মিনিটে দ্বিতীয় গোল পেয়ে যান লেভানদোভস্কি। ইয়ামালের ক্রসে দূরের পোস্টে এরিক গার্সিয়ার হেড গোলরক্ষক ঠেকানোর পর কাছ থেকে ওভারহেড কিকে জালে পাঠান সাবেক বায়ার্ন মিউনিখ স্ট্রাইকার।
এবার লা লিগায় ৬ ম্যাচে পোলিশ তারকার গোল হলো ৬টি, সঙ্গে অ্যাসিস্ট আছে দুটি।
দুই মিনিট পর ব্যবধান কমায় ভিয়ারেয়াল। রক্ষণ অনেকটাই উন্মুক্ত হয়ে পড়েছিল বার্সেলোনার। বক্সে পেপের পাসে ঠিকানা খুঁজে নেন পেরেস।
৪৪তম মিনিটে ওই ধাক্কা খায় বার্সেলোনা। প্রতিপক্ষের একটি কর্নারে লাফিয়ে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বাজেভাবে মাটিতে পড়ে ডান হাঁটুতে চোট পান টের স্টেগেন। মাঠে প্রাথমিক চিকিৎসার পর স্ট্রেচারে বাইরে নিয়ে যাওয়া হয় জার্মান গোলরক্ষককে। তার বদলি নামেন ইনাকি পেনা।
দ্বিতীয়ার্ধের পঞ্চম মিনিটে পেপে বার্সেলোনার জালে বল পাঠালেও আক্রমণের শুরুতে অফসাইডে ছিলেন তিনি। পরের মিনিটে তার শটে বল ক্রসবারের ওপর দিয়ে পাঠান পেনা।
৫৮তম মিনিটে দুই গোলের লিড পুনরুদ্ধার করেন তোরে। পেদ্রির পাস বক্সের বাইরে পেয়ে জোরাল শট নেন তরুণ এই স্প্যানিশ মিডফিল্ডার। বল প্রতিপক্ষের একজনের শরীরে লেগে জালে জড়ায়।
৬৪তম মিনিটে ইয়ামাল ভিয়ারেয়ালের বক্সে ফাউলের শিকার হলে ভিএআরের সাহায্যে পেনাল্টি দেন রেফারি। কিন্তু স্পট কিকে বল পোস্টে মারেন লেভানদোভস্কি।
চার মিনিট পর আরও একবার বল জালে পাঠিয়েও অফসাইডের কারণে গোল পায়নি ভিয়ারেয়াল।
৭৪তম মিনিটে স্কোরলাইন ৪-১ করেন রাফিনিয়া। বক্সে পাউ ভিক্তরের পাস পেয়ে বাঁ পায়ে জোরাল শট নেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড, প্রতিপক্ষের একজনের পায়ে লেগে বল জালে জড়ায়।
৮৩তম মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোলের দেখা পান তিনি। ম্যাচজুড়ে দারুণ খেলা ইয়ামাল চমৎকারভাবে উঁচু করে বল বাড়ান বক্সে, ছুটে গিয়ে বাঁ পায়ের শটে লক্ষ্যভেদ করেন রাফিনিয়া।
আসরে ৬ ম্যাচে তার গোল হলো ৫টি, অ্যাসিস্ট ৩টি।
৬ ম্যাচে শতভাগ সাফল্যে বার্সেলোনার পয়েন্ট হলো ১৮। সমান ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে শিরোপাধারী রেয়াল মাদ্রিদ।
১১ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচ নম্বরে আছে ভিয়ারেয়াল। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.