আমিরাতে আসাদ: স্বাগত জানালো যুদ্ধবিমান, পেলেন কামান স্যালুট

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ রাষ্ট্রীয় সফরে সংযুক্ত আরব আমিরাত পৌঁছেছেন। রবিবার (১৯ মার্চ) তিনি আবুধাবিতে পৌঁছান। আসাদের সঙ্গে রয়েছেন তার স্ত্রী আসমা আল-আসাদ। এমন সময় এই সফর অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন আরবের অনেক দেশ দামেস্কর সঙ্গে সম্পর্ক পুনরায় চালু করতে রাজি থাকার ইঙ্গিত দিচ্ছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
গত বছর আসাদের আমিরাত সফরের তুলনায় এবার আনুষ্ঠানিকতা ছিল বেশি। তখন ওই সফর ছিল ২০১১ সালে সিরীয় গৃহযুদ্ধ শুরুর পর তার প্রথম কোনও আরব দেশ সফর। ওই গৃহযুদ্ধের শুরুতে সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ উপসাগরীয় আরব দেশগুলো আসাদবিরোধী বিদ্রোহীদের সমর্থন দিয়েছিল।
রাষ্টীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, আবুধাবিতে পৌঁছার পর আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল-নাহিয়ানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন আসাদ। সিরীয় প্রেসিডেন্টের গাড়ির বহর যখন রাজ প্রাসাদে প্রবেশ করে তখন কামান দেগে অভিবাদন জানানো হয়। এছাড়া আসাদকে বহনকারী বিমানকে অভ্যর্থনা জানায় আমিরাতের যুদ্ধবিমান।
শেখ মোহাম্মদ পরে এক টুইট বার্তায় বলেছেন, দুই দেশের সম্পর্কোন্নয়নের লক্ষ্যে আমরা গঠনমূলক আলোচনা করেনি। সিরিয়া ও এতদ অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ও অগ্রগতি ত্বরান্বিত করতে সহযোগিতা বৃদ্ধির উপায় নিয়ে আমাদের আলোচনা হয়েছে।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট কার্যালয় বলেছে, ২০১১ সালের পর আসমা আল-আসাদের এটিই প্রথম রাষ্ট্রীয় বিদেশ সফর। এই সফরে তিনি আমিরাতের প্রেসিডেন্টের মা শেইখা ফাতিমা বিনতে মুবারকের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তাকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ‘জাতির জননী’ হিসেবে মনে করা হয়।
মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্র মিত্র আমিরাত সিরিয়া ও দেশটির প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরায় স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তুরস্ক ও সিরিয়ার বিপর্যয়কারী ভূমিকম্পের পর গত মাসে প্রথম বিদেশ সফরে ওমানে যান আসাদ। পরে এই মাসের শুরুতে তিনি রাশিয়া সফর করেন।
এক সময় সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত আসাদবিরোধী বিদ্রোহীদের সমর্থন দিয়েছিল। তবে মার্কিন আপত্তির পরও গত কয়েক বছর ধরে আবুধাবি দামেস্কর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির দিকে এগিয়ে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, ইরানের প্রভাব মোকাবিলায় এই পথে হাঁটছে তারা। রাশিয়া ও ইরান গৃহযুদ্ধের সময় আসাদকে সহযোগিতা দিয়ে ক্ষমতায় থাকতে ভূমিকা রেখেছিল।
আঞ্চলিক পরাশক্তি সৌদি আরব সম্প্রতি তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে একটি চুক্তিতে সম্মত হয়েছে। এতে করে দামেস্কর সঙ্গে মানবিক ইস্যুতে আলোচনার দ্বার উন্মুক্ত হচ্ছে।
ওয়াশিংটনের মতো কাতারও আসাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিরোধিতা করছে। বিশেষ করে সংঘাতের সময় সরকারের নৃশংসতার অভিযোগ তুলে এই অবস্থান নিচ্ছে দেশটি। দোহা চায় রাজনৈতিক সমাধানে অগ্রগতি।
সিরীয় সংঘাতে কয়েক লাখ মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। আসাদকে উৎখাতে শুরু হওয়া গণবিক্ষোভ গৃহযুদ্ধে গড়ায়। এতে জড়িয়ে পড়ে একাধিক আন্তর্জাতিক শক্তি। এখনও বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে কিছু অঞ্চল। #

 

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.