আমার দেখা সামাজিক দূরত্ব

দেলোয়ার হোসেন: এ বছরের গত ২৬ মার্চ থেকে বাংলাদেশ সরকার সরকারি ছুটি ঘোষণা করে। করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) ভয় বিশ্বের বড় বড় মোড়লের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। তেমনি করে করোনাভাইরাসের আক্রমণ থেকে বাংলাদেশও রক্ষা পায়নি।
করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সরকার সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য সবাইকে নিজ নিজ ঘরে থাকার জন্য ২৬ মার্চ থেকে সরকারি ছুটি ঘোষনা করে। ছুটি ঘোষণার পর থেকে যে যার অবস্থান থেকে যেমন কর্মজীবী তার কর্মস্থান, শিক্ষার্থী তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে নিজ নিজ গন্তব্যে যায়। ছুটি দেওয়ার উদ্দেশ্য কি ছিল?
সবাই যেন বাড়িতে থাকুক, নিরাপদ থাকুক। দেখা যাচ্ছে ছুটি ভোগ করতেছে সবাই ঈদের আনন্দের মতো। সরকার কর্তৃক বার বার বলা হচ্ছে ঔষধের দোকান, নিত্যপণ্যের দোকান ছাড়া সব দোকান বন্ধ রাখতে। নিজেকে নিরাপদ রাখুন, অন্যকে নিরাপদ রাখুন, জরুরী প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হবেন না। কে কার কথা মানে যেনো সব কিছু আগের মত আছে। শুধু দেশে করোনায় আক্রান্তের চিত্র দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। সবাই তাদের মতো করে জীবন কাটাচ্ছে, গ্রামে প্রায় দোকান খোলা। গ্রামের জনগণ এখনো অনেক অসচেতন।
যেখানে সারা বিশ্বের নজিরবিহীন ভয়াবহ পরিণতি ও অশান্তি অাছে তখন আমরা শির উঁচু করে বুক নিয়ে আনন্দে মাতোয়ারা। অদ্ভুত জনসংখ্যা! সবাই তার ইচ্ছা মত বাজারে যাচ্ছে, চা খাচ্ছে, মাঠে চলছে খেলাধুলা, কৃষক তার চাষবাস নিয়ে ব্যস্ত, দোকানী তার দোকান নিয়ে আছে, সমাজ তার সামাজিক বিচার নিয়ে ব্যস্ত, জনপ্রতিনিধি তার গুণগান চালাচ্ছে ফেইসবুকে, কেউ জীবিকা নির্বাহের জন্য খাদ্যদ্রব্যের পিছনে ছুটছে, কেউ সম্পত্তি দখল, ছেলে -মেয়ের বিয়ে, বিকালে চা দোকানে মিলনমেলা,মসজিদের ইমাম মানতেছে না ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কথা, আবার দুষ্টচক্রের কয়েকজন ফেইসবুক সমালোচনা,গুজব। তাদের এ গুজবে আর কতকাল এভাবে ঝরবে কষ্ট। মানবতার দুশমন মুখোশধারী গুজবের দল।
যতটুকু দেখলাম কারো মনে মৃত্যু ভয় আছে বলে মনে হয় না। আমার, আপনার কারনে দেশের জনসংখ্যার যে মৃত্যু ঘন্টা বাজতেছে, এই বিষয় কারো মাথা ব্যথা নেই।
হাঁচি-কাশি,জ্বর, শ্বাসকষ্ট যাদের আছে তারা যেন মসজিদে না আসে, দেখা যাচ্ছে প্রথম কাতারে তারা আছে। বলা তো যাবেই না, কেউ আবার মসজিদের দায়-দায়িত্বপ্রাপ্ত লোক, কেউ সমাজের বড় কর্তা ।
ইমাম সাহেবরা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের টাকা খেয়ে যাবে ইসলামিক ফাউন্ডেশনেরও সব কথা মানছে না।
তবে জনসাধারনকে জনপ্রতিনিধিরা সঠিক ভাবে মানুষ হিসাবে গড়ে তুলতে পারে নাই। জনপ্রতিনিধি তাদের দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালনে ব্যর্থ। সঠিক পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী দিচ্ছে না। কেউ সহায়তা সরকারি,সামাজিক ভাবে পাচ্ছে, আবার কেউ কোন ভাবে পাচ্ছে না। কাগজে লিখে দিলে এই শেষ, না! অতএব খাদ্যসামগ্রী দিয়ে কিন্তু দায়-দায়িত্ব শেষ নয়। জনগণকে মানুষ হিসাবে রুপান্তর করতে হবে। কিভাবে করবেন সেটা আপনার দায়িত্ব ?
একটি পরিবারের কাছে চাল, লবন, তেল পেঁয়াজ, হলুদ-মরিচ,আলু থাকলে এই পরিবার খাদ্য নিয়ে সংকটে থাকবে না। অতএব গ্রামের পরিবার গুলোর কাছে উপরোক্ত দ্রব্য ৬৫ শতাংশ থাকে। তাদের কে আর্থিক সহায়তা দিলে তাদের আর্থিক সংকট দূর হবে।
উইলিয়াম শেক্সপিয়ার বলেন আমাকে নিষ্ঠুর হতে হচ্ছে কোমলতার স্বার্থে। এটা খারাপের শুরু, তবে এর চেয়েও খারাপ কিছু দূরে রইল।
সরকারের নিষ্ঠুরতা আমাদের জীবনের স্বার্থে, আমাদের দেশে খারাপের শুরু, তবে এর চেয়েও খারাপ হতে পারে।
একজন মমতাময়ী দেশরত্ন নেত্রীর দীপ্ত কণ্ঠে শপথ, আমার আপনার পালন করতে হবে।
এই করোনাভাইরাস(কোভিড-১৯) থেকে রক্ষা পেতে আমরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখি । বাড়িতে থাকুন, নিরাপদ থাকুন। মহান আল্লাহকে স্বরণ করি। ক্ষমা করো মালিক আল্লাহ।
লেখক-দেলোয়ার হোসেন, ফেনী সরকারি কলেজ, ব্যবস্থাপনা বিভাগ, ফেনী। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.