আমরা কারো দয়া চাচ্ছি না, আমরা ন্যায্য হিস্যা চাচ্ছি, ঐতিহাসিক ফারাক্কা লংমার্চের ৪৯তম বর্ষপূতি অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

প্রেস বিজ্ঞপ্তি: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, আমরা আমাদের চুক্তি শেষ হয়ে গেলে নতুন করে পানির হিস্যা চাইবো। আমরা কারো দয়া চাচ্ছি না, আমরা আমাদের ন্যায্য হিস্যা চাচ্ছি। সে ন্যায্য অধিকার তাদেরকে দিতে হবে।

উপদেষ্টা আজ বিকেলে ঐতিহাসিক ফারাক্কা লংমার্চের ৪৯তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে রাজশাহী কলেজ মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, পরিসংখ্যান অনুযায়ী ফারাক্কা বাঁধের কারণে চার কোটিরও বেশি মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাহলে তো তারা হত্যাকারী, তারা অপরাধী তাদের বিচার করতে হবে। ভারতকে এখানে অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করা যায় কারণ তারা এত বছর ধরে আমাদের অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছে। তারা আমাদের প্রাণীকে আমাদের মানুষকে তিলে তিলে হত্যা করছে।
ফারাক্কা বাঁধকে মরণ ফাঁদ উল্লেখ করে ফরিদা আখতার বলেন, এ মরণ বাঁধের কারণে আমাদের কী ক্ষতি হচ্ছে তা চিহ্নিত করতে হবে। ফারাক্কা বাঁধের কারণে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে গড়াই নদীর মাধ্যমে লবণাক্ততার অনুপ্রবেশ বেড়ে যাচ্ছে। ফলে মাছের বৈচিত্র কমে যাচ্ছে, এমনকি মাছ বিলুপ্তও হয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, গড়াই নদীর অববাহিকার বড় অংশ শুকিয়ে গেছে। নবগঙ্গা নদীতে ১৮টি পরিবারের ৩৫ গণের ৪১টি মাছের প্রজাতি পাওয়া যেত। বর্তমানে সেখানে ৩৫টি প্রজাতি আছে। ১৬টি প্রজাতির মাছ সংকটাপন্ন অবস্থায় আছে এবং কিছু কিছু সেখানে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এ সকল অঞ্চলে মাছের আহরণ কমে যাচ্ছে এবং মাছের সাথে জড়িত জেলেরাও পেশা হারাচ্ছেন। এর সাথে কৃষিও সংকটাপন্ন অবস্থায় আছে কেননা কৃষি খাতে বেশি পানির প্রয়োজন।
পদ্মার ইলিশ আমাদের বড় সম্পদ ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইলিশের কথা যখন বলি তখন সবাই পদ্মার ইলিশের কথাই বলি। ভারতের অনেক মানুষই বলে থাকেন, পদ্মার ইলিশ গঙ্গার ইলিশের চেয়ে সুস্বাদু। কিন্তু ফারাক্কা বাঁধের কারণে বর্তমানে পদ্মার ইলিশ আর নেই।
মাওলানা ভাসানীর কথার প্রতিধ্বনি করে তিনি বলেন, গঙ্গার পানিতে আমাদের ন্যায্য অধিকার, এটা আমাদের প্রাকৃতিক অধিকার। এ অধিকার পশু-পাখি, গাছপালা, কীট-পতঙ্গ, প্রাণী, মানুষ সব কিছুর জন্মগত অধিকার। এ অধিকার হরণ করার ক্ষমতা কারো নেই। যে হরণ করেছে সে প্রাণীর বিরুদ্ধে জুলুম করেছে। বাংলাদেশের মানুষ তা কোনো দিন মেনে নেবে না। আল্লাহ নিশ্চয়ই আমাদের বাঁচার পথ খুলে দেবেন।
এসময় প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহŸান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে ফারাক্কা লং মার্চের ৪৯ বর্ষপূর্তি উদ্যাপন কমিটির আহ্বা য়ক মাহবুব সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সালেহ হাসান নকীব, লেখক ও গবেষক বেনজিন খান, প্রেস ইন্সটিটিউট অব বাংলাদেশের মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ, রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মু. যহুর আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. ইফতেখারুল আলম মাসউদ।
সংবাদ প্রেরক স্বা/-জনসংযোগ কর্মকর্তা, পিআইডি, রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.