আবাসিক হল খোলার দাবীতে ঢাবি প্রশাসনের কুশপুতুল দাহ

ঢাবি প্রতিনিধি: আবাসিক হল খুলে দিয়ে পরীক্ষা গ্রহণ, বেতন-ফি মওকুফ ও টিএসসি ভবন না ভেঙে সংস্কারের দাবীর বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পকুশপুতুল দাহ করেছে প্রগতিশীল ছাত্র জোটের নেতাকর্মীরা।

পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারী) দুপুরে উপাচার্য বাসভবনের সামনে ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অগণতান্ত্রিক’ উল্লেখ করে এই কর্মসূচি পালন করেন জোটের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতাকর্মীরা।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা।
সমাবেশে আগামী ২৪ জানুয়ারি দুপুর ১২টায় রাজু ভাস্কর্যে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয় সংগঠনটি। এর আগে এসব দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচিও পরিচালনা করেন তারা।
এর আগে ৫ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সংহতি সমাবেশ করে জোটের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। একই দাবিতে ৭ জানুয়ারি উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচিও পালন করেন তারা। পরে তাদের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতীকী কুশপুতুল পোড়ানোর ঘোষণা দেন তারা।
সেশনজট নিরসন ও ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষার কথা বিবেচনা করে মহামারীর মধ্যেই স্নাতক ফাইনাল ও স্নাতকোত্তরের পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীরা ইতিবাচকভাবে দেখলেও আবাসিক হল বন্ধ থাকায় ঢাকায় এসে কোথায় থেকে পরীক্ষা দেবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।
কুশপুতুল পোড়ানোর আগে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জোটের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সমন্বয়ক সোহাইল আহমেদ শুভ বলেন, করোনার বিশেষ পরিস্থিতিতে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শিক্ষার্থীদের জোর করে নিয়ে এসে কোনো ধরণের আয়োজন ছাড়াই পরীক্ষায় বসিয়ে দেয়া হচ্ছে।
‘এই সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের উপর জুলুমের শামিল। ইতোমধ্যে অনেক বিভাগে পরীক্ষা শুরু হয়ে গেছে, অনেক বিভাগে পরীক্ষার ঘোষণা দেয়া আছে। ঢাকার বাইরে থাকা বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ঢাকায় এসে কোথায় থাকবেন, কী করবেন- তার কোনো নিশ্চয়তা না দিয়ে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি ও যুগের চাহিদা অনুযাযী টিএসসিকে আধুনিকায়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় সরকারের গণপূর্ত অধিদপ্তর (পিডব্লিউডি) এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।
ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সাখাওয়াত ফাহাদ বলেন, টিএসসি ভবন কেবল ইট-পাথরের কোনো ভবন নয়। দেশের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কেন্দ্র এই টিএসসি। সব মত ও পথের মানুষের মিলনকেন্দ্র এই টিএসসি।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা সঙ্কট চলছে। হলে জায়গা নেই, ‘শিক্ষার্থীরা ঘুমাতে’ পারেন না। তারা হলের বারান্দা, মসজিদ ও ক্যানটিনে ঘুমান। গ্রন্থাগারে শিক্ষার্থীদের বসার জায়গা নেই। এসবের সুরাহা না করে প্রশাসন ২০তলা ভবন নির্মাণের যে প্রকল্প নিচ্ছে, তার পুরোটাই বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে। এখানে শিক্ষার্থীদের কোনো স্বার্থ নেই। ছাত্রসমাজ এই চক্রান্ত মেনে নেবে না।
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ছাত্র ফন্টের ঢাবি শাখার সভাপতি সালমান সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক প্রগতি বর্মণ তমা, সহ-সভাপতি সাদেকুল ইসলাম সাদিক।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ঢাবি প্রতিনিধি আবির সাদাত অন্তিম। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.