বিশেষ (ঢাকা) প্রতিনিধি: জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পরবিরোধী ও উত্তেজিত ভূমিকা নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। দলগুলোর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা যদি এ রকম ভূমিকা নেন, সরকার কী করবে, আমরা ঠিক বুঝতে পারছি না। এত দিন আলোচনার পর যদি ঐকমত্য না আসে, তো আমরা আসলে কীভাবে কী করব, সত্যি আমাদের চিন্তা করতে হচ্ছে।’
আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথাগুলো বলেন আইন উপদেষ্টা। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
জুলাই সনদ নিয়ে ২৭০ দিন যাবৎ আলাপ–আলোচনার পর প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর বক্তব্যের মধ্যে অনৈক্যের সুর হতাশাব্যঞ্জক বলে উল্লেখ করেন আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, এই তীব্র বিরোধের মধ্যে কীভাবে সমঝোতার দলিল পাস হয়, এটা দুরূহ একটা চ্যালেঞ্জ সরকারের সামনে এনে দিয়েছে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, এর আগে (জুলাই সনদের) বিষয়বস্তু নিয়ে বিরোধ ছিল। এখন আরও দুই ধরনের বিরোধ তৈরি হয়েছে। একটা হচ্ছে, কী পদ্ধতিতে পাস করা হবে। আরেকটি হচ্ছে, গণভোট হলে, গণভোট কবে হবে। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পক্ষে থাকা দলগুলো পরস্পরবিরোধী ও উত্তেজিত ভূমিকা নিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো, যারা জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পক্ষে ছিল।
এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন দুটি বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছে। একটা হচ্ছে, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ, গণভোট, তারপর ২৭০ দিনের মধ্যে না হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধান সংশোধন হয়ে যাবে। তো এমন কোনো নজির আছে কি না, আদৌ সম্ভব কি না, এটা তারা দেখবে। দ্বিতীয় প্রস্তাব হলো, এই দায়দায়িত্ব নির্বাচিত সংসদের হাতে ছেড়ে দেওয়া।
এই দুই বিকল্পের মধ্যে কোনটা বেশি গ্রহণযোগ্য, সেটা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তীব্র মতবিরোধ রয়েছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘গণভোট কবে হবে, এটা নিয়ে বিরোধ তীব্রতম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে বোধ হয়। তো একটা সময়ে এটা নিয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা। প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে আমরা থাকব, ওনাকে সহায়তা করার জন্য থাকব। আমরা যে সিদ্ধান্ত নেব, আমরা খুব দৃঢ় থাকব। আর সিদ্ধান্ত খুব দ্রুত নেওয়া হবে।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান সরকার একধরনের ঐকমত্যের সরকার। এই সরকারের প্রত্যেক সদস্যের ক্ষেত্রে প্রধান তিনটি রাজনৈতিক শক্তির এবং যারা গণ–অভ্যুত্থানের পক্ষে ছিল, তাদের সবার সম্মতি ছিল। তীব্র অনৈক্য বা বিভাজন থাকলে রাজনৈতিক দলগুলো আর ‘কনসেপচুয়ালি’ ঐকমত্যের সরকারের অবস্থানে থাকতে পারে না। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিগুলো ঐক্যবদ্ধ থাকলে সরকারের কাজ অনেক সহজ হতো উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বড় দুটি দল প্রায় ৪০–৫০ বছর রাজনীতি করার পরেও কিছু ক্ষেত্রে এই ঐক্য বজায় রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে।’
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ (ঢাকা) প্রতিনিধি মো: আমিনুল ইসলাম শিকদার। #

















