আদালতেই নির্দেশেই গ্রেফতার হওয়ার দিনই জামিন পেয়ে গেলেন ফিরহাদরা

(আদালতেই নির্দেশেই গ্রেফতার হওয়ার দিনই জামিন পেয়ে গেলেন ফিরহাদরা–ছবি: প্রতিনিধির)
কলকাতা প্রতিনিধি: গ্রেফতার যেদিন হলেন, সেদিনই জামিন পেয়ে গেলেন ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়রা। আর স্বাভাবিক কারণেই আদালতে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা জামিন পেয়ে যাওয়ায় মুখ পুড়ল CBI-এর।
যদিও রাজনৈতিক মহলের বড় অংশই বলছে, সিবিআই নয়, গোটা ঘটনায় মুখ পুড়ল বিজেপির। রাজ্যে চূড়ান্ত করোনা পরিস্থিতি। তার মধ্যেই সোমবার সকাল হতেই তোলপাড় পড়ে যায় রাজ্য রাজনীতিতে। নারদ কেলেঙ্কারিতে সিবিআই-এর হাতে গ্রেফতার হয়েছেন নতুন সরকারের পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim), পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় (Subrata Mukherjee), তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র (Madan Mitra) ও প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় (Sovan Chatterjee)। আর এরপরই সটান নিজাম প্যালেসে, সিবিআই দফতরে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
সেখানে প্রায় ৬ ঘণ্টা ছিলেন তিনি। প্রথমে সিবিআই-এর কর্তাদের উদ্দেশে তাঁকে গ্রেফতার করার দাবি জানান মমতা। এরপর অবশ্য দীর্ঘ ৬ ঘণ্টা বাদে নিজাম প্যালেস থেকে বেরোনোর সময় বলে যান, ‘আদালতেই যা হওয়ার হবে।’ সেই আদালতেই নির্দেশেই গ্রেফতার হওয়ার দিনই জামিন পেয়ে গেলেন ফিরহাদ, সুব্রতরা।
কোভিড পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ফিরহাদ, মদনদের জন্য ভার্চুয়াল শুনানির আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে অভিযুক্তদের পক্ষে সওয়াল করেন তৃণমূল সাংসদ তথা আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
নারদ কাণ্ড স্টিং অপারেশনে টাকা নিতে দেখা যাওয়া শুভেন্দু অধিকারী বা অপর অভিযুক্ত মুকুল রায়কে কেন গ্রেফতার করা হল না, সেই প্রশ্ন এদিন আদালতে তুলেছেন কল্যাণ। শুরুতেই চারজনের জামিনের আবেদন করেন তিনি। যদিও তার বিরোধিতা করেছেন সিবিআইয়ের আইনজীবী। তাঁর দাবি, জামিনে ছাড়া পেলে ধৃতরা বাইরে বেরিয়ে প্রমাণ নষ্ট করে দিতে পারেন। এতে পাল্টা যুক্তি আসে অপর পক্ষ থেকে।
ফিরহাদ, সুব্রতরা রাজ্যের মন্ত্রী, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে আমজনতার জন্য তাঁদের কাজ করতে হবে বলে দাবি করেন কল্যাণ। প্রায় ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট ধরে চলে সওয়াল-জবাব।
আদালতে এদিন ওই চারজনের বিরুদ্ধে চার্জশিটও জমা দিয়েছেন সিবিআই। বিধানসভার অধ্যক্ষের অনুমতি ছাড়াই এই গ্রেফতারির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেও অভিযুক্তদের আইনজীবী কল্যাণ বলেন, ‘রাজ্যপাল যা করেছেন পিছনের দরজা দিয়ে করেছেন।’ সওয়াল জবাবের মধ্যেই বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক অনুপম মুখোপাধ্যায় প্রশ্ন করেন “যেখানে ইতিমধ্যেই চার্জশিট প্রস্তুত হয়ে গিয়েছে, সেখানে এই নেতা মন্ত্রীদের হেফাজতে রাখার প্রয়োজনীয়তা কোথায়?’ সিবিআই অবশ্য এরপর অভিযুক্তদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতে রাখার আবেদন জানান।
অপরদিকে, বিচারকের কাছে অভিযুক্তদের আইনজীবী প্রশ্ন তোলেন, ‘সিবিআই-এর আইনজীবী সওয়াল না করে সিবিআই-এর হয়ে এসপি কেন সওয়াল করছে?’ দিনভর চূড়ান্ত উত্তেজনার পর অবশ্য চার রাজনীতিককেই জামিন দিল আদালত। যদিও এদিন শুনানি শেষের পর বেশ কিছুক্ষণ রায় স্থগিত রাখেন বিচারক। সেই সময় দুই সিবিআই অফিসার গিয়ে বিচারকের কাছে গিয়ে কিছু নথি দেখিয়ে আসেন। এরপরই রায়ে তিন তৃণমূল নেতা ও শোভন চট্টোপাধ্যায়কে জামিন দেন বিচারক।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ (বাংলাদেশ) এর বিশেষ (কলকাতা) প্রতিনিধি রাজশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.