আড়াই কোটি টাকার হেরোইন মামলায় গ্রেফতার হয়নি… গোদাগাড়ীর মাদক মাফিয়া শীষ মোহাম্মদ ও তার হায়দার!

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে ২ কেজি ৪০০ গ্রাম হেরোইনসহ মাদক সম্রাট আমিনুল ইসলামকে (৪৭) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে হেরোইনের মূল মালিক মাদক মাফিয়া শীষ মোহাম্মদ ও তার ভাই হায়দার আলী গ্রেফতার হয়নি আজও।
সোমবার (১০ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে গোদাগাড়ী পৌর এলাকার মহিশালবাড়ী (পুরাতন মহিউদ্দিন কলেজ) গ্রামের আরেক হেরোইন সম্রাট হায়দার আলীর বাড়ী থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার হেরোইন ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম গড়ের মাঠ এলাকার মৃত সোলেমান বিশ্বাসের ছেলে। এই ঘটনায় হায়দার আলী ও তার বড় ভাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভূক্ত মাদক সম্রাট শীষ মোহাম্মদ শিশুকে পলাতক আসামী করে গোদাগাড়ী মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত হেরোইনের মূল্য ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি কামরুল ইসলাম।
তিনি জানান, গত সোমবার (১০ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে গোদাগাড়ী থানার প্রেমতলী পুলিশ কেন্দ্রের ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম জানতে পারেন, মহিশালবাড়ী গ্রামের মাদক কারবারী শীষের ভাই হায়দার আলীর বাড়ীতে কয়েকজন হেরোইন বেচাকেনার জন্য অবস্থান করছে। ওই সময় পুলিশ অভিযান চালালে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দুইজন পালিয়ে গেলেও মাদক কারবারী আমিনুল ইসলামকে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়।
এসময় তার দেওয়া আরো তথ্য মতে হায়দারের আলিশান বাড়ীর দ্বিতীয় তলার ড্রয়িং রুমের ৩টি ড্রয়ার থেকে এবং বাড়ীর বিভিন্ন জায়গা তল্লাসী চালিয়ে মোট ১০টি প্যাকেটে দুই কেজি ৪০০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত হেরোইনগুলোর আনুমানিক মূল্য ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
এ ব্যপারে গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি কামরুল ইসলাম বলেন, আসামীরা তালিকাভূক্ত মাদক সম্্রাট। তারা দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর ধরে হেরোইনের কারবার চালিয়ে আসছে।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত মাদক সম্্রাট আমিনুল ও তার দুই চাচা পলাতক আসামী মাদক মাফিয়া শীষ মোহাম্মদ শীশু ও শীশুর ছোট ভাই হয়দার আলী দীর্ঘদিন থেকেই মাদক ব্যবসা করে অল্পদিনে হাজার হাজার কোটি টাকা ও ধন-সম্পদের মালিক হয়েছেন। মহিশালবাড়ীর হায়দারের বাড়ীতে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ হেরোইন বেচা কেনা চলে। এছাড়াও শীষ মোহাম্মদ শীশুর নামে একাধিক মামলা আছে। সে রাজশাহীসহ বিভিন্ন জায়গায় বাড়ী কিনে প্রচুর অর্থ বিত্তের মালিক হয়েছেন।
উল্লেখ্য, গোদাগাড়ীর মাদক মাফিয়া শীষ মোহাম্মদ এখন রাজশাহী মহানগরীতে থেকেই নিয়ন্ত্রণ করছে হেরোইনের কারবার। এমনই অভিযোগ নগরীর মানুষের মুখে মুখে। সম্প্রতি তিনি দাম্ভিকতা প্রকাশ করে বলেছেন, গোদাগাড়ী থানার ওসি থেকে শুরু করে ওই থানার সাবেক ওসি, বিভিন্ন কর্মকর্তা ও নেতারা আমার চেম্বারে ওঠা বসা করে। অতএব আমাকে কেউ কিছুই বলবে না। তাছাড়া সেইরকম ক্ষমতাধর লোকজনের সাথে সম্পর্ক করেই রাজশাহী মহানগরীতে বসবাস করছি।
তারই ঘনিষ্টজনের কাছে সম্প্রতি এমন গাল গল্প দিয়েছেন, মাদকের রাজধানী গাদাগাড়ী উপজেলার শীর্ষ মাদক মাফিয়া “গড ফাদার” শীষ মোহাম্মদ।
গোদাগাড়ী জেলা থেকে কেজি, কেজি হেরোইন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাচার হচ্ছে। নেপথ্যে থেকে মাদকের চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করছে মাদক মাফিয়া শীষ মোহাম্মদ। একধিক মাদক ও অস্ত্র মামলার আসামী এই মাদক মাফিয়া। তিনি গোদাগাড়ী থানার তালিকাভ‚ক্ত শীর্য মাদক কারকারি বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। বর্তমানে তিনি রাজশাহী মহানগরীতে বসবাস করছে। রয়েছে একাধিক বাড়ি। সিটি ভবনের পাশে সানডায়াল কোচিং সেন্টারের গলিতে তার নিজ ভবনে রয়েছে সিসি ক্যামেরা নিয়ন্ত্রিত আলিশান চেম্বার। সেই চেম্বারে বসে মদ পান করা আর কোটি কোটি টাকার হেরোইনের চালান দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাচার ও নিয়ন্ত্রণ করাই শীষ মোহাম্মদের কারবার বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
ওই ব্যক্তি আরও বলেন, তিনি কয়েকটি মোবাইলে একাধিক সিম কার্ড ব্যবহার করেন।
কথা বলার সময় বিভিন্ন কোর্ড ব্যবহার করেন। খুব কাছে থেকেও তার কথা কেউ বুঝতে পারবে না। তার ভাই মাদক মাফিয়া হায়দার আলী ওমর থিম প্লাজায় মোবাইলের দোকান খুলে লোক দেখানো ব্যবসার আড়ালে চালাচ্ছে কোটি কোটি টাকার হেরোইন ব্যবসা। তারপরও তাদের কোনস সমস্যা নাই। খোর, চোর’রা থাকছে জেলে। মাফিয়ারা থাকছে ধরা ছোয়ার বাইরে।
গোদাগাড়ীর আর এক মাদক মাফিয়া শহীদুল ইসলাম ভোদড়। তারও একই কর্মকান্ড। ছিলেন শিদ্ধ ডিম ব্যবসায়ী। পরে হেরোইনের খুচরা কারবার। পরে পাইকারী কেজি কেজি হেরোইনের চালান দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাচার করে হয়েছেন হাজার কোটি টাকার মালিক। এরশাদ শিকদারের ন্যায় নির্মান করেছেন স্বর্ণ কোমল বাড়ী। কিনেছেন শত শত বিঘা জমি। রাজশাহীতেও রয়েছে একাধিক বাড়ি।
গোদাগাড়ির উল্লেখ যোগ্য মাদকের ডিলার ও গডফাররা হলো: গোদাগাড়ী থানার জনৈক শহিদুল ইসলামের নাসির, বারুই পাড়া গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে হোসেন আলী, মাদারপুর গ্রামের আব্দুল গনি’র ছেলে গোলাম মোস্তফা টিয়া, ইসরাইলের ছেলে ইব্রাহীম, মহিশাল বাড়ি সাগর পাড়া গ্রামের নাজিমুল ইসলামের ছেলে রায়হান ওরফে ভন্ডল, মহিশাল বাড়ি সাগর পাড়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে সনি, মহিশাল বাড়ি সাগর পাড়া গ্রামের মৃত: আবুল হোসেনের ছেলে হেলাল উদ্দিন, একই এলাকার মৃত মুরশেদ ফাটার ছেলে সাদিকুল ইসলাম, তোফায়েল।
জনৈক মোঃ মেকাইল, মোঃ গোলাম মোস্তফা, মোঃ সিরাজ, মোঃ আমিনুল ইসলাম বাবু , মোঃ আব্দুল করিম, মোঃ শফিকুল ইসলাম লুঠু, বিপ্লব , মইদুল ইসলাম ন্যাংড়া, মোসা: নুর নাহার, মোসা: মরিয়ম, মোসা: ফুরকান, হৃদয়, আরিফ, পিয়ারুল, রবি, আনারুল হাজী, জোহাক, জিয়া, সুইটি, ধুলা, মানিক, আব্দুল্লাহ, ভনডল, বিসু, সাগর, ইসাহাক, নাহিদ, টিপু, সোহেল।
গোদাগাড়ী থানার ৬নং মাটিকাটা ইউনিয়নের প্রেমতলী, পিরিজপুর, গোপালপুর, সোনাদিঘী, কালিদিঘী সহ পুরো এলাকার মাদক সিন্ডিকেটের মূল হোতা শফিউর রহমান শুভ, শুভোর আপন ভাই সনি, উভয়ের পিতা: আব্দুল হামিদ (সাবু) , নূরু মাঝি ও তাদের সহযোগী, সুজন, সোহাগ, মশিউর, সোহাগ-২, বাকি সহ ৭/৮জন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মো. মাসুদ রানা রাব্বানী / রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.