আটোয়ারী লক্ষীপুর মাদরাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

পঞ্চগড় প্রতিনিধি: পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার লক্ষীপুর ইসলামিয়া আলিম মাদরাসা অধ্যক্ষ আব্দুল মতিনের বিরুদ্ধে, শিক্ষা বোর্ডের কাগজ জাল করে মাদরাসা পরিচালনা কমিটি অনুমোদন।
প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাত,শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ বানিজ্যেসহ ধর্ষন চেষ্টার অভিযোগ তুলে সম্প্রতি আনছারুল ইসলাম বাদী হয়ে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। যা শিক্ষা বোর্ড ১২ মার্চ গ্রহনের প্রমানপত্রসহ জাল কাগজ সৃষ্টির কপিসহ বেশকিছু অভিযোগের কাগজ শুক্রবার বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদকের হাতে আসে।
অভিযোগ পত্র থেকে জানা যায়, লক্ষীপুর ইসলামিয়া আলিম মাদরাসার নিয়মিত পরিচালনা কমিটি শেষ হওয়ার পর ২০২১ সালের ১৪ জুলাই ৬ মাসের জন্য এডহক কমিটির অনুমোদন দেন বোর্ড। প্রবিধান নিয়মানুযায়ী এডহক কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার ৩০ দিন পূর্বে নিয়মিত কমিটির নির্বাচন করতে হবে।
নীতিমালার তোয়াক্কা না করে ৩৪ দিন পূর্বে পরিচালনা কমিটি গঠন করার জন্য প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেন। প্রিজাইডিং অফিসার পাওয়ার পর ঘোষনা পত্রের মাধ্যমে ২০২১ সালের ২৬ ডিসেম্বর প্রার্থী নির্বাচন করেন কিন্তু অধ্যক্ষ স্বাক্ষরিত ২৫ ডিসেম্বর মাদরাসার নোটিশে বলা হয় ২৬ ডিসেম্বর বৈধ প্রার্থীগণ স্ব-শরীরে উপস্থিত হয়ে প্রতীক বরাদ্দ নিতে হবে।
নোটিশে ১২ জনের নাম উল্লেখ থাকলেও ৮ জন বহিতে উপস্থিতির স্বাক্ষর করেন। তাদের মধ্যে ২ জনকে বাদ দিয়ে অনুপস্থিত ৩ জনসহ মোট ৯ জনকে কমিটির সদস্য করা হয় যা অবৈধ।
এ বিতর্কিত কমিটি অনুমোদনের জন্য অধ্যক্ষ মাও. আব্দুল মতিন সরকার বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষের কাছে ২০২২ সালের ১৮ জানুয়ারী আবেদন করেন।বোর্ড যাচাই-বাছাই করে মেয়াদ শেষের ৯ দিন পূর্বে নির্বাচন করেছেন মর্মে গভর্নিং বডি গঠন প্রক্রিয়া সঠিক না হওয়ায় সভাপতিসহ গভর্নিং বডি অনুমোদন দেয়া গেল না। পত্র জারি করে প্রকাশ করেন, এবং অধ্যক্ষকে এডহক কমিটি অনুমোদনের জন্য আবেদন করতে নির্দেশনা দেন।
কিন্তু এডহক কমিটির জন্য আবেদন না করে কৌশলে ২০২১ সালের ১৪ জুলাই এডহক কমিটির পত্রের স্মারক ব্যবহার করে অনুরুপ জাল কাগজ সৃষ্টি করে ২০২১ সালের ১৪ আগস্ট অনুমোদন দেখান।
পুনরায় পরিচালনা কমিটি অনুমোদনের জন্য ২০২২ সালের ২১ জুলাই বোর্ডে আবেদন করেন। আবেদন বিলম্বের কারন হিসেবে দেখান অধ্যক্ষ নির্বাচনের পর ৩ মাস অসুস্থ ছিলেন। পরবর্তীতে বোর্ড কর্তৃপক্ষ ২৯ আগস্টে কমিটি অনুমোদন দেন।কিন্তু তিনি অসুস্থ ছিলেন না এবং নিয়মিত মাদরাসায় এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেছেন।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করেন, নিয়োগ দূর্নীতি প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাতসহ বিভিন্ন কারনে আগে অধ্যক্ষ তিনবার সাময়িক বরখাস্ত ছিলেন। ধর্ষন চেষ্টার অভিযোগে মামলাও হয়েছে, পরে সেটি আপোষ করা হয়।
এছাড়াও ২০১৫ সালে আলিম শাখায় বিজ্ঞান বিভাগে ৫ জন শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে প্রায় ৩০ লাখ টাকা আত্মসাত করেন।অথচ মাদরাসা বোর্ড কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞান শাখায় পাঠদানের কোন অনুমোদন নাই।
বর্তমানে অধ্যক্ষ একজন উপাধক্ষ্যসহ ৪ পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞাপ্তি প্রকাশের পর প্রার্থীদের কাছ থেকে প্রায় ৪০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন ওই অধ্যক্ষ। কয়েকদিনের মধ্যে নিয়োগ দিবেন তার কাজ চলমান। মাদরাসা পরিচালনা কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করে বিধিগত ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবী জানান।
অভিযুক্ত অধ্যক্ষ আব্দুল মতিন সরকার সব অভিযোগ অস্বীকার করে বিটিসি নিউজকে বলেন, আমি বোর্ডের কাগজ জাল করেছি সেটা বোর্ড বুঝবে।
মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো.খাদেমুল ইসলাম বিটিসি নিউজকে জানান,অধ্যক্ষ যদি কাগজ জাল করে কমিটি অনুমোদন নেয় তাহলে সেটা তিনিই বুঝবেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর পঞ্চগড় প্রতিনিধি শেখ সম্রাট হোসাইন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.