আজ ২৫শে মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবস

নিজস্ব প্রতিবেদক: আজ সেই ভয়াল ২৫ মার্চ। জাতীয় গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এই কালরাতে পাকিস্তান সামরিক বাহিনী কাপুরুষের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর। জনগণের রায় উপেক্ষা করে ক্ষমতা আকঁড়ে থাকতে তারা আন্দোলনের শক্তি বিশেষ করে ছাত্র-তরুণ ও বস্তিবাসীদের নির্বিচারে হত্যা করে। ২৫ মার্চের এই গণহত্যাই বাঙালিকে প্রতিরোধ যুদ্ধে শামিল করে। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে জন্ম নেয় স্বাধীন বাংলাদেশ।
স্বাধীনতার পর দীর্ঘদিন এই দিনটি উপেক্ষিতই ছিল। ২৫ মার্চের নাম না জানা শহিদেরা ছিলেন দৃষ্টির আড়ালে। ২০১৭ সালে জাতীয় সংসদে ২৫ মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর থেকেই রাজশাহীসহ সারাদেশে যথাযথ মর্যাদায় দিনটি পালিত হয়ে আসছে। নানা অনুষ্ঠানে ২৫ মার্চের শহিদদের অকাতরে জীবনদানকে স্মরণ করা হয়। তাদের রূহের মাগফিরাত কামনা করে প্রার্থনা করা হয়। তবে এই গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এখনও পাওয়া যায়নি।
একথা অস্বীকার করা যাবে না যে, একাত্তরের ২৫ মার্চ যারা অকাতরে আত্মদান করেছেন তাদের নাম এর মধ্যেই অনেকাংশেই তলিয়ে গেছে বিস্মৃতির অতলে। একইভাবে পরবর্তী প্রতিরোধ যুদ্ধ ও নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধের অনেক শহিদের নামও ইতিহাসের পাতায় স্থান পায়নি। তবে গণহত্যা দিবসসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে জাতি তাদের আত্মদান নানাভাবেই স্মরণ করে। স্বাধীনতার পরপরই উদ্যোগ নেয়া হলে এই শহিদদের পূর্ণাঙ্গ তাীলকা প্রণয়ন পরিবারবর্গের পুনর্বাসন ও ঘটনার বিবরণ সংগ্রহ করে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা যেত। যুদ্ধ বিদ্ধস্ত দেশে তা সম্ভব হয়নি। তবে ইদানিং মুক্তিযুদ্ধকালে গণহত্যা ও নির্যাতনের তথ্যাদি সংগ্রহের যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে ২৫ মার্চের কালরাতের স্থান যেখানে হবে এটাই সবার কাম্য।
একাত্তরের ২৫ মার্চ ঢাকাসহ সারাদেশেই গণহত্যা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন যারা তারা অনেকেই ছিলেন আন্দোলনের বীর সৈনিক। তাদের রক্তের বিনিময়েই বাঙালির অসহযোগ আন্দোলন প্রতিরোধ যুদ্ধের পথ বেয়ে মুক্তির যুদ্ধে রূপ নেয়। তাই ২৫ মার্চকে মুক্তিযুদ্ধের সূচনা বলাই যায়। ২৫ মার্চের শোকই বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামের শক্তিতে পরিণত হয়েছে। আজ স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের শত্রুদের রুখে দাঁড়াতে, স্বাধীন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে ২৫ মার্চের অকাতরে আত্মত্যাগ আমাদের প্রেরণা যোগাবে। তরুণ প্রজন্মকে পথ দেখাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়তে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মোঃ মাইনুর রহমান (মিন্টু) রাজশাহী।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.