নিজস্ব প্রতিবেদক: নির্বাচনের কোন পরিবেশ ছিল না। প্রহসনের নির্বাচন, বিনা ভোটের নির্বাচন, পরের দিনের ভোট আগের রাতে হওয়া সবাই দেখেছে। তুমি-আমি, আমি-ডামি নির্বাচনও হয়ে গেছে। এ সমস্ত নির্বাচনে জনগণের কোন অংশগ্রহণ ছিল না। কিন্তু ৫ আগস্টের পরে জনগণের উপরে থেকে ঐ খরক নেমে গেছে। অত্যাচারী ফ্যাসিস্ট সরকার পালিয়ে গেছে। নির্যাতন অনেক কমে গেছে। ৫আগস্টের পূর্বে দীর্ঘ সতের বছওে বিএনপি নেতাকর্মীর নামে লক্ষ লক্ষ মামলা হয়েছে। যার উদাহরণ হচ্ছে তারা কেউ রাতে বাড়িতে ঘুমাতে পারেনি।
এই সভায় অনেক নেতাকর্মী আছেন তারা বিনা কারনে জেল খেটেছেন বলে সোমবার বিকেলে বাকশিমইল ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড বিএনপি কর্তৃক আয়োজিত আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন-২০২৬ উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং পবা-মোহনপুর আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এডভোকেট শফিকুল হক মিলন এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, শুধু জেল খাটেনি। বিশ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। এক হাজার সাতশতজন নেতাকে গুম করা হয়েছে। অনেককে মেরে ফেলা হয়েছে। এছাড়াও অনেক নেতাকর্মী পুলিশি নির্যাতনের পরে অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন। এছাড়াও নেতাকর্মীরা পুকুরপাড়, টঙ্গ ঘর, গভীর নলকুপের ঘরে দিনের পর দিন শুয়ে রাত কাটিয়েছে। অনেক নেতাকর্মী জেলে গিয়ে বলতো এখন একটু নিরাপদে ঘুমাতে পারবো। আর টেনশন ভালো লাগেনা।
তিনি বলেন, পাপ কাউকে ছাড়েনা। পতিত সরকারের প্রধান খুনি হাসিনার নির্যাতনের মাত্রা এতটাই বেড়ে গিয়েছিলো যে, সে সময় নমরুদকে হার মানিয়েছে।
২০২৪ সালের ৫ই আগস্ট এর পূর্ব মুহুর্ত জনগণ ও বিএনপির বুকের উপর একটা জগদ্দল পাথর চাপা দেওয়া ছিলো। সেই জগদ্দল পাথরের নাম খুনি হাসিনা। তার খুনের দায়ে ফঁািসর রায় হয়েছে। পতিত সরকার গণতন্ত্রকে চাপা দিয়ে রেখেছিলো। গণতন্ত্রকে লুট করা হয়েছিল। যে গণতন্ত্র মানুষের মাঝে হচ্ছে স্থিতিশীলতার সৃষ্টি করেছিলো সে গণতন্ত্রকে ফেরত পাওয়ার আন্দোলন হচ্ছে আগামী নির্বাচন। সবাইকে সজাগ থাকতে হবে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে ঘনঘট সৃষ্টি করার পাঁয়তারা করা হচ্ছে তা জনগণ মেনে নেবেনা।
মিলন বলেন, নির্বাচনের ট্রেন এখন চালু হয়ে গেছে। এই নির্বাচনে ভোটাররা কাকে ভোট দেনে তা সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে।এখন তালবাহানস কওে কোন লাভ নেই। নির্বাচন পেছানোর জন্য জামায়াতে ইসলাম নানা তালবাহানা ও ষড়যন্ত্র করছে। তারা সংস্কার, পিআর ও গণভোট নিয়ে নানা ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করছে, যার কোন ভিত্তি নাই। এগুলো করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান তিনি। কারণ বিএনপি ক্ষমতায় গেঘে জাতীয় সরকার গঠন করবে। এই সরকারে রেসিও অনুযায়ী সব দলের নেতারা থাকবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, সংস্কার অনেক থেকেই শুরু হয়েছে। এটা চলমান প্রক্রিয়া। কারন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারমান সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশের সেবার ভার নিয়ে সংস্কার কার্যক্রম শুরু করেছিলেন। একনায়কতন্দ্রকে রোধ করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতকে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। বাকশাল থেকে আবারও আওয়ামীলীগ তিনি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। এপর জিয়াউর রহমানকে হত্যার পরে বেগম খালেদা জিয়া রাজনীতিতে এসে স্বৈরাচার হটাও আন্দোলনে নামেন। তিনি একটানা আন্দোলন করে স্বৈরাচার এরশাদকে ক্ষমচ্যুত করেন। সে সময়ে জামায়াত এবং পতিত আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ হাসিনা এরশাদ এর সাথে গিয়ে নির্বাচন করায় জাতীয় বেইমান হয়েছিলেন। আর জামায়াতের নেতা গোলাম আজম জাতীয় মোনাফেক হয়েছিলেন। সেই থেকে আওয়ামী লীগ জাতীয় বেইমান ও জামায়াতে ইসলাম জাথীয় মোনাফেক দলে পরিণত হয়।
মিলন বলেন, বেগম খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতি সরকার পরিবর্তন করে সংসদীয় পদ্ধতি চালু করেছিলেন। সংস্কার এখনো চলছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের জন্য ৩১ দফা দিয়েছেন। এই দফা সমুহ বাস্তবায়ন হলে এই মুহুর্তে সংস্কারের কোন প্রয়োজন হবেনা বলে জানান তিনি। বেগম জিয়া স্বামী হারিয়েছেন, বািড় হারিয়েছেন, সন্তান হারিয়েছেন। এরপরেও তিনি দেশ ছেড়ে পালাননি। তিনি বিগত দিনে ২৩টি আসনে নির্বাচন করে সব গুলিতে বিজয়ী হয়েছিলেন। এবারও তিনি তিনটি আসনে নির্বাচন করবেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। তিনি আরো বলেন বিএনপি ক্ষমতায় আসলে ফ্যামিলি কার্ড ও কৃষি কার্ড প্রদান করবেন। সেইসাথে ইমাম মোয়াজ্জিনদের একটি বেতন কাঠামোর নিয়ে আসবেন বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, জামায়াত কোন ইসলামী দল নয়। এই দলের ধোকা থেকে নিজেদের বাঁচানোর জন্য জনগণকে আহ্বান জানান তিনি। সেইসাথে বেহেস্তের টিকি বিক্রি করা বন্ধ করার কথা বলেন। সব শেষে তিনি প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে একটি করে শক্তিশালী সেন্টার কমিটি গঠন করার পরামর্শ দেন ধানের শীষে ভোট প্রার্থনা করেন তিনি।
বাকশিমইল ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামিম আহমেদ এর সভাপতিত্বে এবং মোহনপুর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মেহেদী হাসান টুটন এর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোহনপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি শামিমুল ইসলাম (মুন), সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আর রশিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক-১ বাচ্চু রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক-২ শাহিন আক্তার শামসুজ্জোহা, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল কাদেও মোল্লা ও কাজিম উদ্দিন সরকার ও বাকশিমইল ইউনিয়নের সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম উজ্জলসহ বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীবৃন্দ। #

















