আগামীকাল ১লা ফাল্গুন, ঋতুরাজ বসন্ত ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবস

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রকৃতির দক্ষিণা দুয়ারে বইছে ফাগুনের হাওয়া। কোকিলের কণ্ঠে আজ বসন্তের আগমনী গান। ফুলে ফুলে ভ্রমরও করছে খেলা। গাছে গাছে পলাশ আর শিমুলের মেলা। সব কিছুই জানান দিচ্ছে কাল পহেলা ফাগুন। বিদ্রেহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম এ ফাগুনকে নিয়ে গান লিখেছেন দোল ফাগুনের দোল লেগেছে এই উৎসবটি তখন ফাগুনের পূর্ণিমায় দোল উৎসব হিসেবে পালন করা হতো।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তি নিকেতনে বসে এই বসন্ত উৎসব পালন করেছেন। তাছাড়া আদিকালের ধারাবাহিকতায় এখন বৈষ্ণবদের রাধা কৃষ্ণের প্রণয় লীল দোল উৎসব। সেটি রবীন্দ্রনাথ পরবতীতে শান্তি নিকেতনের বসন্ত উৎসব উদযাপিত হত।
ধর্মীয় আনুষাঙ্গিকতা বাদ দিয়ে প্রেম ও প্রকৃতির আহবানে এবং লেখা আজ গান ও নাচ নিয়ে এই বসন্ত উৎসব পালণ করার জন্য রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর চলে এলেন প্রকৃতির কোলে।

বসন্তের আনান্দ অনুভবকে আবির খেলায়। ষার্টের দশকে ছায়ানট তার বাঙালি আনার ধারায় এটি পালন করত। এ বছর পহেলা ফাগুন ও ১৪ ফেব্রুয়ারী একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে।

একই সাথে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস পালণ করা হবে। সরকারি এক প্রজ্ঞাপনে জানা যায়, এখন থেকে বসন্ত উৎসব ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ১৪ ফেব্রুয়ারী পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ফাগুনের হাত ধরেই ঋতুরাজ বসন্তের আগমন। ঋতুরাজকে স্বাগত জানাতে প্রকৃতির আজ এতো বর্ণিল সাজ। বসন্তের এই আগমনে প্রকৃতির সাথে তরুণ হৃদয়েও লেগেছে দোলা। সকল কুসংস্কারকে পেছনে ফেলে, বিভেদ ভুলে, নতুন কিছুর প্রত্যয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা নিয়ে বসন্তের উপস্থিতি। তাই কবির ভাষায়-‘ফুল ফুটুক আর না-ই ফুটুক আজ বসন্ত’।আবাল-বৃদ্ধা, তরুণ-তরুণী বসন্ত উম্মাদনায় আজকে মেতে উঠবে। শীতকে বিদায় জানানোর মধ্য দিয়েই বসন্ত বরণে চলবে ধুম আয়োজন। শীত চলে যাবে রিক্ত হস্তে, আর বসন্ত আসবে ফুলের ডালা সাজিয়ে। বাসন্তী ফুলের পরশ আর সৌরভে কেটে যাবে শীতের জরা-জীর্ণতা। গাছের জড়া পাতা শেষে এখন আবার নতুন পাতায় পল্লবে সেজেছে গাছগুলো।

বসন্তকে সামনে রেখে গ্রাম বাংলায় ভালোবাসার মানুষেরা মন রাঙাবে বাসন্তি রঙ্গেই। শীতের শেষে ঋতুচক্রের এই মাস বাঙালির জীবনে প্রকৃতির রূপ বদলে যায়।

গাছে গাছে ফুল ফুটবার এই দিনটিকে চিরাচরিতভাবে পহেলা ফাল্গুন হিসেবে বাংলা সনের গণনা শুরু হয়। ঝরে পরা শুকনা পাতার মর্মর ধ্বনির দিন শেষ হয়ে আসে। কচি পাতায় আলোর নাচনের মতই বাঙালির মনেও দোলা লাগায়। একই সাথে বাসন্তি রং এর শাড়ি ও পাঞ্জাবি গায়ে জড়িয়ে আনন্দে মেতে ওঠার আবাহন বাংলার তরুণ-তরুণীরা।

বিভিন্ন স্থানে নর-নারীর বাসন্তী সাজ-সেজে মনে করিয়ে দিবে, ফুল ফুটুক আর নাই ফুটুক, আজ বসন্ত। বাসন্তী শাড়ি পরে খোঁপায় গাদা ফুল গুঁজে নারীরা হাজির হয়েছে বসন্ত বরণ উৎসব উদযাপন করতে।

শীতে খোলসে ঢুকে থাকা বনবনানী অলৌকিক স্পর্শে জেগে উঠে। পলাশ, শিমুল গাছে লাগে আগুন রঙের খেলা। প্রকৃতিতে চলে মধুর বসন্তে সাজ সাজ রব, বসন্ত মানেই পূর্ণতা। বসন্ত মানেই নতুন প্রাণের কলরব। মিলনের এ ঋতু বাসন্তী রঙে সাজায় মনকে, মানুষকে করে আনমনা।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মোঃ মাইনুর রহমান (মিন্টু) রাজশাহী।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.