আওয়ামী লীগ অসংখ্য আজিজ-বেনজীর তৈরি করেছে : মির্জা ফখরুল

 

ঢাকা প্রতিনিধি: আওয়ামী লীগ একজন আজিজ বা বেনজীর নয়, অসংখ্য আজিজ-বেনজীর তৈরি করেছে। যারা লুট করে খাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ বুধবার বিকেলে রমনা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে দলের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি প্রয়াত জিয়াউর রহমানের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকীর আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। দলের ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা  লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি এই যুক্ত হয়ে আলোচনা সভায় বক্তাদের বক্তব্য শুনেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তথাকথিত বিনা ভোটের এমপিকে টুকরা টুকরা করে কেটে নাকি ফেলে দিয়েছে। কি অবস্থা! আপনি (প্রধানমন্ত্রী) কোন অবস্থায় বাংলাদেশকে নিয়ে এসেছেন। সাবেক পুলিশ প্রধান তার আজকে হাজার হাজার দুর্নীতির চিত্র পত্রপত্রিকায় বেরিয়ে আসছে। তাকে আপনি লালন করেছেন। অনেকে আগে স্যাংশন দেওয়ার পরও তাকে আপনি আইজি বানিয়েছেন। আজকে একইভাবে সাবেক সেনা প্রধান তাকে স্যাংশন দেওয়া হয়েছে একটা মাত্র কারণে। সে বাংলাদেশে লুট করেছে, চুরি করেছে এবং নির্বাচনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই দায় কি শুধু ওদের? এই দায় এই সরকারের, যারা আজকে জোর করে ক্ষমতা দখল করে বসে আছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ জন্য আমি বার বার বলছি আপনাদের রিজাইন করা উচিত।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘এই আলোচনা সভায় উপস্থিত সবার বিরুদ্ধেই মামলা আছে। কেউ কেউ সম্প্রতি কারাগার থেকে বেরিয়েছেন। মহাসচিবসহ আমরা জেলে যারা গিয়েছিলাম তারা ভালোই ছিলাম। কিন্তু অতোটুকু ভালো নয়, যতটুকু মনে প্রশান্তি পাওয়া যায়। আমাদের সকল ভাইয়েরা যে অবস্থায় কারাগারে ছিলেন অকল্পনীয় অমানবিক অবস্থায় কাটিয়েছেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলটাকে ধরে রেখেছেন। আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে, আমাদের নেতা তারেক রহমানকে প্রবাসে ঠেলে দিয়ে তারা দেশটাকে দখল করে নিয়েছেন। আমরা কী এই দখলসত্ত্ব মেনে নেব। জিয়াউর রহমান আমাদের প্রতিবাদ প্রতিরোধ করতে শিখিয়ে গেছেন।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, ‘জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় ছিলেন সাড়ে তিন বছর। এই সময়ে তিনি দেশকে গভীর খাদ থেকে তুলে নিয়ে উন্নতির শিখরে নিয়ে গেছেন। বাংলাদেশকে বিশ্বের মানচিত্রে একটি গৌরবজনক স্থানে তিনি প্রতিষ্ঠিত করেছিল। জিয়াউর রহমান যেভাবে দেশে বহু দলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল, সেভাবে আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলাম। সে জন্য আমরা গত দেড় যুগের বেশি সময় ধরে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আন্দোলন করছি।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করেননি। সিপাহী-জনতার বিপ্লব তাকে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এসেছে। যখন তিনি ক্ষমতাপ্রাপ্ত হন তখন কোনো মন্ত্রিপরিষদ ছিল না, কোনো সংসদ ছিল না। আগেই তা বাতিল করেছে। দেশে তখন সর্বক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা ছিল। কোনো সাধারণ মানুষের পক্ষে ওই সময়ে দায়িত্ব নেওয়া অসম্ভব ছিল। তার সাহসিকতা, সততা, নিষ্ঠা দায়িত্ব নিতে উদ্বুদ্ধ করেছে। দায়িত্ব নিয়ে দেশ ও মানুষের সমস্যা চিহ্নিত করে একটার পর একটা সমাধান করেছেন।’
জিয়াউর রহমান আমাকে বীর শ্রেষ্ঠ খেতাবের জন্য সুপারিশ করেছিলেন বলে জানান মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ ক্ষেত্রে জিয়াউর রহমান ছিলেন সিনিয়র অফিসার। যুদ্ধের ময়দানে তার না আসলেও চলত। অন্যান্য সেক্টর কমান্ডদের মতো ভারতের অভ্যন্তরে থেকে নেতৃত্ব দিতে পারতেন। গৌরীপুরে ভয়াবহ যুদ্ধে জিয়াউর রহমানের সফল নেতৃত্বের ৩১ পাঞ্জাব রেজিমেন্ট নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।’
দেশের চলমান পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আজ এই দেশ চোরের দেশ। সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান আর পুলিশের সাবেক প্রধান চোর। এটাই হলো দেশ। মুক্তিযুদ্ধের সমস্ত স্বপ্ন ধূলিসাৎ করেছে আওয়ামী লীগ।’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘এতো অন্যায়-অত্যাচারের পরও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার গত ১৭/১৮ বছরে বিএনপিকে ন্যূনতম দুর্বল করা যায়নি। তখনো আওয়ামী লীগ ব্যর্থ, জিয়াউর রহমান সফল, খালেদা জিয়া সফল। চলমান আন্দোলনে তারেক রহমান শতভাগ সফল। তবে, এই সরকার শুধুমাত্র টিকে আছে, পুলিশ,আজিজ, দুর্নীতিবাজ,সন্ত্রাসীদের কারণে। যদি গনেশ উল্টে যায় কই যাবে (আওয়ামী লীগ নেতারা)?’
দলের প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান,এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, অধ্যাপক মামুন আহমেদসহ আরও অনেকে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ঢাকা প্রতিনিধি মো: মাসুদ রানা খন্দকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.