অস্তিত্ব সংকটে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল


রাবি প্রতিনিধি: বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয় দাপিয়ে বেড়ালেও মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে ক্যাস্পাসে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল। তবে রাজনীতি বিশেষজ্ঞরা বলছেন ক্যাম্পাসে ক্ষমতাসীন ছাত্রলীগের প্রভাব এবং নতুন নেতৃত্বের অভাবে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে দলটি।

দলটির ৫ বছরের বেশী সময় ধরে ক্যাম্পাসে নেই কোন কার্যক্রম। কেন্দ্রঘোষিত কোন কর্মসূচিও পালন হয় না ক্যাম্পাসে। হয় না মিটিং-মিছিল বা সমাবেশও। সব মিলিয়ে প্রায় অস্তিত্বহীন বিএনপি’র এই ছাত্র সংগঠনটি।

অন্যদিকে দলটির নেতাকর্মীরা বলছেন, ছাত্রলীগ এবং পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপের কারনে ক্যাম্পাসে তাঁরা কোনো কর্মসূচি করতে পারে না।

তবে রাবি ছাত্রলীগ সভাপতি সাধারণ সম্পাদক বিটিসি নিউজকে বলেন, তাদের সাংগঠনিক দুর্বলতা এবং কর্মী সংকটের কারণে বিভিন্ন সাংগঠনিক কার্যক্রম করতে ব্যর্থ হচ্ছে এখানে আমাদের কোন হস্তক্ষেপ নেই।

সাধারণ শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, যারা নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে পারে না তারা ছাত্রদের জন্য কিসের রাজনীতি করবে? জাতীয় দিবস থেকে শুরু করে কোনো উপলক্ষে তাদের কার্যক্রম দেখা যায় না। প্রতিপক্ষের হামলা নির্যাতন থাকলেও নিজেদের কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে তাদের কাজ করতে হবে।

এদিকে ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের অনুপস্থিতির কারণে দলের নবীন-প্রবীণ নেতাকর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভ আর হতাশা কাজ করছে বলে জানিয়েছেন ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা। বাধ্য হয়েই তারা এখন অনাগ্রহ প্রকাশ করছেন এই সংগঠনটির প্রতি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রায় একযুগ কমিটিহীন থাকার পর ২০১৪ সালের ২৪ জুলাই ছাত্রদলের তৎকালীন কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব রাবির ছয় সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন। ছয় সদস্যবিশিষ্ট কমিটিতে ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ আহমেদকে সভাপতি ও মার্কেটিং বিভাগের ই-এমবিএর (তৎকালীন) শিক্ষার্থী কামরুল হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।

তবে অস্তিত্ব সংকটের কথা অস্বীকার করে রাবি শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘বিভিন্ন সময় প্রক্টরিয়াল বডির উপস্থিতে ক্যাম্পাস কিংবা পরীক্ষার হল থেকে বের করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের কর্মীদেরকে মারধর করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষেকে এসব ব্যাপারে অভিযোগ দিলেও তারা কর্ণপাত করে না। তাই কিছু প্রতিবন্ধকতা আর কৌশলগত কারণে আমরা প্রকাশ্যে কোনো কর্মসূচিতে যাচ্ছি না।’

আমাদের নেতাকর্মীরা নিয়মিতই ক্যাম্পাসে বসে। তবে বিভিন্ন সমস্যার কারণে সাংগঠনিকভাবে বসতে পারছে না। সরকারবিরোধী প্রতিটি আন্দোলনেই আমরা ছিলাম। কিন্তু বর্তমান সময়ে শুধু ছাত্রলীগ নয় বরং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও আমাদের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই একটু ভিন্ন পথ অবলম্বন করতে হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সম্মেলনের পর শিগগিরি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের মধ্যে থেকে যোগ্যদের নির্বাচিত করে রাবি ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে। এমনটাই বলছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের এক সিনিয়র নেতা।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর রাবি প্রতিনিধি মো: মুজাহিদ হোসেন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.