অসলোকে কার্বন নিরপেক্ষ করতে কী করছে নরওয়ে?

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নিরপেক্ষ শহর হতে চায় নরওয়ের রাজধানী অসলো৷ শুধু কার্বন নি:সরণ বন্ধই নয়, সব দিক দিয়েই পরিবেশবান্ধব হতে চায় শহরটি।
যেকারণে গড়ে তোলা হচ্ছে পরিবেশবান্ধব ভবন। সেইসঙ্গে আরও কিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷ চলুন দেখে নিই কী কী উদ্যোগ নিয়েছে নরওয়ে সরকার।

মানুষ যাতে ব্যক্তিগত গাড়ি না নিয়ে গণপরিবহনে যাতায়াত করতে বাধ্য হয় এ জন্য অসলোর বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়নি৷ মূলত সাইকেল ও গণপরিবহনের কথা মাথায় রেখে শহরের যাতায়াত ব্যবস্থাও নতুন করে গড়ে তোলা হচ্ছে৷

অনেকদিন ধরে অসলোর নগর পরিকল্পনায় নজর রাখছেন স্থপতি আনে মারিট লুন্ডে৷ তিনি বলেন, ‘‘গত ২০ বছরে অসলোতে অনেক পরিবর্তন এসেছে৷ শহরের মধ্য থেকে অনেক গাড়ি সরিয়ে নেয়া হয়েছে৷ সংস্কৃতি সংশ্লিষ্ট অনেকগুলো ভবন গড়ে উঠেছে, মূলত হার্বার ঘিরে৷ এটি আরও প্রাণবন্ত, খোলামেলা ও সবাইকে কাছে টানার মতো শহর হয়ে উঠেছে বলে আমার মনে হয়৷”
নব্বই শতকের শেষদিক পর্যন্তও শহরের বিওরভিকা বন্দর ঘিরে অনেক পরিবহণ দেখা যেত৷ কিন্তু এখন সেটা মানুষ, সংস্কৃতি ও পরিবেশের মিলনস্থল হয়ে উঠেছে৷  সোনেও কোনো পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নেই৷ ফলে গণপরিবহন ব্যবহার করতেই হবে জনসাধারণকে।
২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নিরপেক্ষ হতে চায় অসলো৷ সে কারণে সাইকেল ও গণপরিবহনের কথা মাথায় রেখে নতুন যাতায়াত ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে৷ ইলেক্ট্রিক গাড়ি কেনার জন্য বোনাস, কর সুবিধাও দেয়া হচ্ছে৷ গাড়ি চার্জ করার জায়গাও বানানো হচ্ছে৷
অসলোতে দেখার মতো আরেকটা জায়গা হচ্ছে ভুলকান৷ আগে সেটা শিল্পাঞ্চল ছিল৷ এখন সেখানে পরিবেশবান্ধব আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন গড়ে উঠেছে৷ এছাড়া জিওথার্মাল জ্বালানি ও সোলার প্যানেলের সাহায্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখান থেকে আশেপাশের এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়৷
অসলোর পরিবেশবান্ধব নীতি প্রাণিদের জন্যও সুফল বয়ে এনেছে৷ বিভিন্ন ভবনের ছাদে প্রায় ৪৫টি মৌচাকে মৌ পালন করা হচ্ছে। আর মৌমাছিদের খাবারের জন্য অসলোর মধ্য দিয়ে একটি হাইওয়ে তৈরি করা হয়েছে৷ যেখানে এমন সব গাছ লাগানো হয়েছে যা থেকে মৌমাছি মধু সংগ্রহ করতে পারে৷ ফলে আশেপাশে উড়ে বেড়ানোর সময় মৌমাছিকে আর তার খাবার নিয়ে চিন্তা করতে হয় না৷
অসলোর ভবিষ্যৎমুখী নগর পরিকল্পনা অন্য শহরগুলোর জন্য শিক্ষনীয় হতে পারে বলেই মনে করছেন নগর পরিকল্পনাবিদ এবং পরিবেশবিদেরা। (সূত্র: ডয়চে ভেলে) #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.