অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র অসুস্থ হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী পেশ করেন বাজেট

(অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র অসুস্থ হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী পেশ করেন বাজেট–ছবি: প্রতিনিধির)
কলকাতা প্রতিনিধি: রাজ্যে বিধানসভায় ভোট অন অ্যাকাউন্ট পেশ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র অসুস্থ হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী পেশ করেন বাজেট৷ বিধানসভা ভোটের দামামা বেজে গিয়েছে। স্বাভাবিকভাবে দ্বিতীয় তৃণমূল সরকারের এটাই শেষ বাজেট। সব মিলিয়ে এই বাজেট বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট পেশের আগে যদিও বিধানসভায় হইচই হয়৷ অধিবেশন বয়কটের সিদ্ধান্ত নেয় বাম-কংগ্রেস৷
নির্বাচনের আগের বাজেটে একেবারে মা অন্নপূর্ণার ভূমিকায় মুখ্যমন্ত্রী৷ দরাজ বাজেটের ঘোষণা করলেন তিনি৷ সেখানে উল্লেখযোগ্যভাবে উঠে এল পার্শ্ব শিক্ষকদের বেতন প্রসঙ্গ৷ প্রতি বছর রাজ্যের পার্শ্ব শিক্ষকদের ৩ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি হবে৷ একই সঙ্গে অবসরের পর, অর্থাৎ ৬০ বছর পূর্ণ হলে অবসরকালীন ভাতা মিলবে ২ লক্ষ টাকা৷ অন্তর্বতী বাজেটে এই ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এর ফলে রাজ্যের পার্শ্বশিক্ষকদের দীর্ঘদিনের যে বেতন সমস্যার অভিযোগ উঠে আসছে, তাতে অনেকটাই সুরাহা হবে৷
আগামী পাঁচ বছর নেপালি, হিন্দি কামতাপুরী উর্দু এবং কুড়মালি ভাষাতে মোট ১০০ টি স্কুল রাজ্যজুড়ে তৈরি করা হবে। এই ভাষা গুলিতে শিক্ষকতার জন্য মোট ৩০০ প্যারা টিচার নিয়োগ করা হবে বলেও এদিনের বাজেটে ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এর পাশাপাশি চা বাগান এলাকায় সাদরি ভাষার জন্য ১০০ টি ও নতুন স্কুল তৈরি করা হবে আগামী পাঁচ বছরের জন্য বলে এদিনের অর্থ বাজেট ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ভাষাতেও পড়ানোর জন্য মোট ৩০০ প্যারা টিচার নিয়োগ করা হবে। এর পাশাপাশি রাজবংশী ভাষাতেও ২০০ টি স্কুল তৈরি তৈরি করার কথা এদিনের বাজেটে ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত এদিনই বেতন কাঠামো নির্দিষ্ট করার দাবিতে পার্শ্বশিক্ষকদের আন্দোলনে উত্তাল হল মধ্য কলকাতা চত্বর। নতুন বছরের প্রথমদিক থেকেই তাঁদের আন্দোলন জোরদার হচ্ছিল। ১৮ জানুয়ারি থেকে সল্টলেকের বিকাশ ভবনের কাছে মঞ্চ বেঁধে অবস্থান বিক্ষোভ করেন তাঁরা। শুক্রবার তাঁরা নবান্ন অভিযানের সিদ্ধান্ত নেন। সুবোধ মল্লিক স্কোয়্যার থেকে মিছিল করে নবান্নমুখী হওয়ার সময়েই ধুন্ধুমার বেধে যায়।
ভোটের আগে রাজ্যের প্রবীণ নাগরিক এবং বিধবাদের জন্য অন্তর্বর্তী বাজেটে বড় ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ মুখ্যমন্ত্রী এ দিন জানিয়েছেন, ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে রাজ্যের সব বাসিন্দাই মাসিক পেনশন পাবেন৷
এর পাশাপাশি বিধবাদের জন্যও বড় ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি জানিয়েছেন, ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে প্রত্যেক বিধবাকে মাসিক ভাতা দেবে রাজ্য সরকার৷ সব ধর্ম, বর্ণের বিধবারাই এই সুবিধে পাবেন৷
এই দুই প্রকল্পের জন্য মোট ১০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করার ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ভোটের আগে শেষ বাজেটে সবক্ষেত্রেই কল্পতরু হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷
তবে মাসিক কত টাকা করে পেনশন বা ভাতা পাওয়া যাবে, এ বিষয়ে কিছু উল্লেখ করেননি মুখ্যমন্ত্রী৷ বাজেট পুস্তিকাতেও তার স্পষ্ট উল্লেখ নেই৷
আদিবাসী, তফশিলি জাতি থেকে শুরু করে স্কুল পড়ুয়া বা পার্শ্ব শিক্ষক৷ নির্বাচনের আগে শেষ বাজেটে কাউকেই যেন অভিযোগের সুযোগ দিতে চাননি মুখ্যমন্ত্রী৷ অর্থমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে এ দিন নিজেই ভোট অন অ্যাকাউন্ট পেশ করেন মমতা৷(
আগামী দিনে গতি বাড়ছে কলকাতা শহরের। মহানগরে শীঘ্রই শুরু হতে চলেছে চার সেতু তৈরির কাজ। সেই লক্ষ্যেই বাজেটে বড় ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ যদিও অনেকদিন ধরেই এই উড়ালপুলগুলি তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছিল রাজ্য৷
মুখ্যমন্ত্রী বাজেট পেশ করার সময় জানিয়েছেন, প্রথম ব্রিজ হবে উল্টোডাঙা থেকে পোস্তা বাজার পর্যন্ত। দ্বিতীয় ব্রিজ হবে পাইকপাড়া থেকে শিয়ালদহ স্টেশন অবধি। তৃতীয় ব্রিজ হবে জীবনানন্দ সেতু থেকে টিপু সুলতান মসজিদের কাছে দেশপ্রাণ শাসমল রোড মোড় পর্যন্ত। যা যাবে প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড বরাবর। চতুর্থ উড়ালপুল হবে রাজা সুবোধ চন্দ্র মল্লিক রোড বরাবর গড়িয়া থেকে যাদবপুর পর্যন্ত ৷
এ ছাড়াও শহর এবং শহরতলিকে যানজট মুক্ত করতে আরও বেশ কয়েকটি উড়ালপুলের কথা শোনা গিয়েছে৷ তার মধ্যে রয়েছে যশোর রোড থেকে ভিআইপি রোড, বাঙুর থেকে উল্টোডাঙা, রুবি থেকে কালিকাপুর, নিউ টাউন থেকে ই এম বাইপাস, মা উড়ালপুল থেকে সৈয়দ আমির আলি অ্যাভিনিউ সহ আরও কয়েকটি উড়ালপুলের কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷  একসঙ্গে এতগুলি উড়ালপুলের ঘোষণা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পথ মসৃণ হবে, সরকারও মসৃণ ভাবে চলবে৷’ কলকাতার পাশাপাশি নন্দীগ্রাম থেকে হলদিয়া সংযোগকারী সেতুর কথাও ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷
অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র অসুস্থ হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী পেশ করেন বাজেট৷ বিধানসভা ভোটের দামামা বেজে গিয়েছে। স্বাভাবিকভাবে দ্বিতীয় তৃণমূল সরকারের এটাই শেষ বাজেট। সব মিলিয়ে এই বাজেট বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট পেশের আগে যদিও বিধানসভায় হইচই হয়৷ অধিবেশন বয়কটের সিদ্ধান্ত নেয় বাম-কংগ্রেস৷
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ (বাংলাদেশ) এর বিশেষ (কলকাতা) প্রতিনিধি রাজশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.