অবৈধ ইট ভাটা নির্মান কাজ বন্ধে জেলা প্রশাসক বরাবর পৃথক দুটি অভিযোগ

লালমনিরহাট প্রতিনিধি: লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় কোন ধরনের অনুমোদন ছাড়াই ফসলি জমির উপর গড়ে তোলা হচ্ছে অবৈধ ইটভাটা। এই ইটভাটা বন্ধের দাবিতে পৃথক দুটি অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী।
গত মঙ্গলবার (০১ ডিসেম্বর) জেলার আদিতমারী উপজেলার নামুড়ী টেপাটরী ও পশ্চিম ভেলাবাড়ী গ্রামের সাধারণ কৃষকেরা লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক বরাবর এই অভিযোগ দুটি দায়ের করেন।
অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারী মাসে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করার পর, প্রশাসন কর্তৃক ঐ ইট ভাটার কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের নামুড়ি চন্দ্রপুর গ্রামের বারবিষার দোলায় বছরে তিনটি বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ করে জিবিকা নির্বাহ করে স্থানীয় কয়েক গ্রামের প্রায় শতধিক কৃষক পরিবার। কৃষকদের চাষাবাদে সেচ সুবিধা দিতে বারবিষার দোলায় একাধিক সেচ পাম্প স্থাপন করেছে বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।
প্রতিবছর তিনটি ফসল ঘরে তুলে বেশ সুখেই ছিলেন কৃষকরা। কিন্তু আবারও চলতি মাসে সেই বারবিষার দোলার নামুড়ি চন্দ্রপুর গ্রামের দুলাল, মান্নান, সালামের নিকট ১৮ দোন ও কেরামত আলীর নিকট থেকে ৬ দোন (এক দোন= ২৭ শতক)  জমি চুক্তিতে লিজ নিয়ে একটি ইটভাটা নির্মাণের কাজ শুরু করেন লালমনিরহাট শহরের নামাটারী এলাকার ইট ব্যবসায়ী এন্তাজ আলী।
পাশ্ববর্তি জমির মালিকদের না জানিয়ে কৃষকদের জমির উপর ভাটার মাটি ফেলে স্তুপ করেন। ফলে এসব কৃষক চলতি ইরি বোরো চাষাবাদ করতে পারছেন না। ফসলি জমির উপর ইটভাটা নির্মাণের প্রতিবাদে এবং ভাটাটি বন্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে স্থানীয় কৃষকরা গত ৩০ নভেম্বর  একটি মানব বন্ধনও করেন ।
নির্মানাধীন ইট ভাটার পাশের জমির মালিক আব্দুস সালাম (৪০) জানান, তার ৩১.৫ শতক জমির উপরে জোড় পূর্বক ঐ ভাটার মাটি ফেলা হয়েছে। তাই ইচ্ছা থাকলেও জমিতে চাষাবাদ করতে পারছেন না। অপর দিকে ভাটা নির্মাণ কাজ চলমান থাকায় চলতি ইরিবোরো চাষাবাদসহ আগামী দিনে ভাল ফসল পাওয়া নিয়েও শ্বঙ্কিত অন্যান্য কৃষকরা।
ভাটার আশ পাশের গ্রামের কৃষক সাইদুল ইসলাম, মোস্তাফিজার রহমান, আফরোজা বেওয়া, মোহাম্মদ আলীসহ অনেকেই দাবী করেন বারবিষার দোলার জমির ফসল দিয়েই চলে তাদের পুরো পরিবার। ইরি বোরোতে প্রতি শতাংশে এক মণের অধিক ধান ফলে। এমন জমিতে ইটভাটা করায় ভবিষ্যতে ফসলহানীর আশংকাও করেন তারা। অথচ ভাটা মালিক বীরদর্পে আবারও ঐ ভাটার নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন।
কৃষকরা বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন ফসলি জমি নষ্ট করে কোন কারখানা গড়ে তোলা যাবে না। নির্মানাধীন ঐ ভাটার মালিক এন্তাজ আলী বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, সবেমাত্র ভাটা নির্মাণ করা হচ্ছে। আগুন দেয়ার আগে পরিবেশ অধিদফতরসহ সকল বিভাগের অনুমোদন নেয়া হবে।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোঃ আবু জাফর এর সাথে কথা বললে তিনি বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান,  লিখিত অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর লালমনিরহাট প্রতিনিধি হাসানুজ্জামান হাসান। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.