অবশেষে কলম্বিয়ার মাদক সম্রাট অ্যাতোনিয়েল আটক

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কলম্বিয়ার সবচেয়ে বড় অপরাধ চক্রের প্রধান, সেই মাদক সম্রাটকে অবশেষে ধরতে সক্ষম হয়েছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এই মাদক ব্যবসায়ীকে বহুদিন ধরে খোঁজা হচ্ছিল। তার খোঁজ পেতে সাত কোটি টাকার বেশি পুরস্কার ঘোষণা করেছিল কলম্বিয়ার সরকার। 
গতকাল শনিবার (২৩ অক্টোবর) কলম্বিয়ার সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী এবং পুলিশের যৌথ অভিযানে দাইরো আন্তোনিও উসুগাকে আটক করা হয়। যিনি অ্যাতোনিয়েল নামেই বেশি পরিচিত।
অ্যাতোনিয়েল সম্পর্কে তথ্য পেতে সাত কোটি টাকার বেশি পুরস্কার ঘোষণা করেছিল কলম্বিয়ার সরকার। এছাড়া এই মাদক সম্রাটকে ধরিয়ে দিতে পাঁচ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৪৫ কোটি টাকা) ঘোষণা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।
তাকে আটকের পর একটেলিভিশন বার্তায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আইভ্যান ডুকে।
তিনি বলেন, “এই শতকের মধ্যে মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে এটা সবচেয়ে বড় আঘাত। একে শুধুমাত্র নব্বইয়ের দশকে পাবলো এসকোবারের পতনের সঙ্গে তুলনা করা যায়।”
পানামা সীমান্তবর্তী অ্যান্টিকোয়া প্রদেশের প্রত্যন্ত আস্তানা থেকে অ্যাতোনিয়েলকে আটক করা হয়।
কলম্বিয়ান প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, এই অভিযানে একজন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।
আটকের পর কলম্বিয়ার সশস্ত্র বাহিনী একটি ছবি প্রকাশ করেছে, যেখানে দেখা যায় হাতকড়া লাগানো অ্যাতোনিয়েলকে সৈনিকরা পাহারা দিয়ে রেখেছে।
৫০ বছর বয়সী এই মাদক সম্রাটকে ধরতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অসংখ্য অভিযান চালানো হয়েছে। সেসব অভিযানে হাজার হাজার কর্মকর্তা অংশ নিয়েছেন। কিন্তু কোন অভিযান সফল হয়নি।
দশ বছর আগে নববর্ষের পার্টিতে পুলিশের একটি অভিযানে তার ভাই নিহত হওয়ার পর গালফ ক্ল্যানের প্রধান হয়ে ওঠেন অ্যাতোনিয়েল। যেটি আগে উসুগা ক্ল্যান নামে পরিচিত ছিল।
কলম্বিয়ার নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, এই দলটি হচ্ছে ওই দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী অপরাধী চক্র। যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষের বর্ণনা অনুযায়ী, ‘এরা হচ্ছে ভারী অস্ত্রে সজ্জিত চরম সহিংস একটি দল।’
কলম্বিয়ার অনেকগুলো প্রদেশে এই চক্রটি বিস্তৃত। তাদের বিদেশেও ভালো যোগাযোগ রয়েছে। এরা মাদক ব্যবসা, মানব পাচার, অবৈধভাবে সোনা আহরণ এবং চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত।
ধারণা করা হয়, এই দলে ১৮শ’ সশস্ত্র সদস্য রয়েছে। যাদের অধিকাংশকে চরম ডানপন্থী আধাসামরিক বাহিনীগুলো থেকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কলম্বিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্র, এমনকি রাশিয়ায় মাদক পাচারের রুটগুলো নিয়ন্ত্রণ করে এই চক্রটি।
তবে কলম্বিয়ার সরকার মনে করে, সাম্প্রতিক সময়ে তারা এই দলটিকে অনেকটাই দমন করতে পেরেছে। কারণ তাদের অভিযানে এদের অনেক নেতা জঙ্গলের প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে লুকাতে বাধ্য হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পাচার, পুলিশ কর্মকর্তাদের হত্যা এবং শিশুদের নিয়োগ দেয়ার মতো অনেকগুলো অভিযোগের মুখোমুখি হতে হবে অ্যাতোনিয়েলকে।
২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিচারে অভিযুক্ত হয়েছেন অ্যাতোনিয়েল। ফলে তাকে বিচারের জন্য বহিঃসমর্পণ চাইতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। সেক্ষেত্রে তাকে নিউইয়র্কের আদালতেও হাজির হতে দেখা যেতে পারে। (সূত্র: বিবিসি)। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.