অনাহারে-অর্ধাহারে ননিয়াদের খোঁজ নেয়নি কেউ

নাটোর প্রতিনিধি: ”এক সপ্তাহ ধরে অর্ধাহারে-অনাহারে আছি; খাবার পাচ্ছিনা, আটদিন ধরে কাজ পাইনা। করোনায় মারা না গেলেও ক্ষুধায় মারা যাবো আমরা। নেতা-ক্ষেতা, এমপি, মেয়র, কাউন্সিলর খোঁজ নেয়নি কেউ।” কথাগুলো বলছিলেন নাটোর শহরের মল্লিকহাটি ননিয়াপাড়ার নারী পুরুষেরা।

নাটোর শহরের ৮ নং ওয়ার্ডের মধুমিয়ার আমবাগানে ননিয়া পাড়ার গিয়ে জানা যায়, এ পাড়ার ৫৭টি পরিবারের প্রায় তিন”শ নারী পুরুষ ও শিশুদের বাস। ইটের খোঁয়া ভেঙ্গে জীবীকা নির্বাহ করেন তারা। কিন্তু করোনার কারণে সামাজিক বিচ্ছিন্নতা করণ শুরু হওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে নির্মাণ কাজ। বেকার হয়ে পড়েছেন ওই পাড়ার বাসিন্দারা ।

জানা যায়, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে নানা পদক্ষেপের কারণে বিপাকে পড়েছে নিু আয়ের মানুষ। দিন এনে দিন খাওয়া এসব মানুষের হাতে সঞ্চিত টাকা না থাকায় সংসার চালানোর দুশ্চিন্তায় ভুগছেন তারা। দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করে তারা সংসার চালান। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে করোনাভাইরাসের কারণে কাজ পাচ্ছেন না তারা।

এদেরই মধ্যে বয়োবৃদ্ধ শংকর বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, কাজ মিলছে না। প্রথম দুই তিনদিন ধার কর্জ করে ৫ সদস্যর পরিবার চালিয়েছি। এখন সেটাও পাচ্ছিনা । আশেপাশের লোকেরা পৌরসভার দেয়া ত্রাণ সামগ্রী পেলেও আমরা ননিয়ারা পাচ্ছিনা।

ননীয়াপাড়ার প্রধান প্রদীপ সরকার বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, আমাদের এ পাড়ার দুইশ মানুষ ইটের খোঁয়া ভেঙ্গে প্রতিদিন যে ২শ থেকে তিনশ টাকা মজুরী পায় তা খাবার কিনতে চলে যায়। সঞ্চয় বলতে আমাদের কিছু নেই। কয়েকদিন ধরে আমরা বেকার সময় পার করছি। যার ফলে পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম কষ্টে দিনাতিপাত করছি।

অশীতিপর বৃদ্ধ রঘু চৌহান (৮৫) বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানালেন, এমন দিন আসলো কেউ কাজে নেয়না, সবাই কয় ভাইরাস ভাইরাস। একদিন কাজ না করলে আমাদের সেদিন পেটে ভাত জোটেনা। এখন শুনি কোথায় চাল, ডাল, তেল , লবণ বিতরণ করছে। ননীয়ারা যে কিছুই পাচ্ছেনা।

তিনি বলেন, আমাদের খোঁজ নিতে আসেনি কোন জনপ্রতিনিধি এমনকি কাউন্সিলর পর্যন্ত। পৌরসভা নানা জনকে ত্রাণ দিলেও আমরা পাইনি। ফলে কষ্টেই চলছে আমাদের দিন।

প্রতিবেশী ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম বাবু জানান, ননিয়ারা কুব কষ্টে আছে। তারা আমার দোকান থেকেই কেনা কাটা করতো। সবাই বাকী চায়। আমি সাধ্যমত তাদের দুর্দিনের কথা চিন্তা করে বাকী দিচ্ছি। কিন্তু এভাবে কত দিন। তিনি জনপ্রতিনিধি ও বিত্তবানদের তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আহবান জানান।

এ বিষয়ে নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরী বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, পৌরসভার বরাদ্দ ওয়ার্ড ভিত্তিক ভাগ করে দেয়া হয়েছে। তারা যে পাননি বিষয়টি আমার জানা ছিলনা। বরাদ্দ শেষ হয়ে গেছে। তারপরেও মানবিক কারণে আমি যতটুকু পারি সহায়তা করব।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.