অনলাইনে যৌন হয়রানি : দ. কোরিয়ায় যুবক’র ৪০ বছর’র জেল

(অনলাইনে যৌন হয়রানি : দ. কোরিয়ায় যুবক’র ৪০ বছর’র জেল)
বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দক্ষিণ কোরিয়ায় অনলাইনে চ্যাটিংয়ের মাধ্যমে নারীদের যৌন হয়রানি করতো বৃহত্তম একটি দল। তাদের মূল হোতা বা মাস্টারমাইন্ড চো জু-বিন নামে এক যুবক। তাকে ৪০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির আদালত।
চো জু-বিন এমন একটি দলের প্রধান ছিলেন, যারা কিশোরী থেকে নারীদের যৌন ভিডিও সংগ্রহ করে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে অর্থ আদায় করতো। টাকা হাতে পাওয়ার পরও তারা ভুক্তভোগীদের ভিডিও বা ছবি একটি চ্যাটরুমে প্রকাশ করে দিতো। এতে ভুক্তভোগীদের কাছে লোকজন বা পরিচিতরা তার কাছ থেকে সুযোগ নিতে চাইতো।
যৌন হয়রানিকারীদের চ্যাটরুমটিতে ১০ হাজারের বেশী ব্যবহারকারী রয়েছেন। তারা প্রায় ১ লক্ষ টাকা (১২০০ ডলারের বেশী) দিতেন ওই চ্যাটরুমে জায়গা পাওয়ার জন্য।
১৭ থেকে ৭৪ বছর বয়সী কিশোরী-নারীদের ব্যক্তিগত ও সংসর্গের ভিডিও গ্রুপটিতে ছাড়া হয়েছিল। চো জু-বিনের দলের লোকজন ভুক্তভোগীরে কাছ থেকে টাকাও হাতিয়ে নিয়েছিল।
আজ বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলের কেন্দ্রীয় জেলা আদালতের বরাত দিয়ে ইউনহাপ নিউজ এজেন্সি জানায়, অভিযুক্ত ব্যক্তি বৃহত্তরভাবে বহু নারীর যৌন সংসর্গের ছবি-ভিডিও একটি সামাজিকমাধ্যমের বার্তা কক্ষের মাধ্যমে প্রকাশ করেছে। এ ছাড়া তিনি বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের হুমকি দিয়ে অর্থসহ নানা জিনিস আদায় করেছেন।
ইউনহাপ নিউজ এজেন্সি আরও জানিয়েছে, অভিযুক্ত যুবক চো জু-বিন শিশুদের যৌন নির্যাতনের বিরুদ্ধে যে আইন আছে, তা ভেঙেছেন। তার বিরুদ্ধে যৌন ভিডিও তৈরী, প্রকাশ ও তা বিক্রি করে অর্থ আদায়ের অভিযোগে একটি ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
চো জু-বিনের লোকজন টেলিগ্রাম অ্যাপে গোপনীয় চ্যাটরুমগুলোতে ওই ভিডিও-ছবি বিক্রি করতো। আবার ভুক্তভোগীদের ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে নিজেরাও সুযোগ নিতো বলে জানিয়েছে ইউনহাপ নিউজ এজেন্সি।
এদিন চো জু-বিনকে আদালতে তোলা হলে তিনি চিৎকার করে কান্না শুরু করেন। আদালতে তিনি বলেন, ‘আমি তাদের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি, যারা আমার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।’
গত মার্চে প্রায় সিউল পুলিশের একটি দল চো’র বিরুদ্ধে একটি পদক্ষেপ গ্রহণ করে। স্নাতক পাস ২৫ বছরের এ যুবকের বিরুদ্ধে প্রায় ৫ লক্ষ লোক একটি পিটিশনে স্বাক্ষর করে। চো’কে গ্রেপ্তারের পর ভুক্তভোগীরা পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলে, একটা শয়তানকে থামিয়ে দেওয়ায় ধন্যবাদ।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সিউল পুলিশ দাবী করেছে, গত বছরের শেষ দিক থেকে এ জাতীয় যৌন অপরাধ নিয়ে তদন্তের পর টেলিগ্রাম এবং অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চ্যাটসহ কমপক্ষে ১২৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়, যাদের মধ্যে ১৮ জন ছিলেন বিভিন্ন গ্রুপের অপারেটর। ৫ আসামী ৭ থেকে ১৪ বছর পর্যন্ত সাজা পেয়েছে। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.