অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙ্গে পাটের দামে রেকর্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক: পাটের দাম নিয়ে সংশয় এ কথা এবছর ভুলেছে কৃষক। সোনালী আঁশে ফিরেছে সুদিন। পাট ওঠার শুরুর দিকে ১৬শ’ থেকে ১৮শ’ বা ২ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন- বর্তমানে সাড়ে ৫ হাজার টাকা মণ দরে পাট বিক্রি হচ্ছে। যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এমন দাম এই প্রথম- বলছেন সংশ্লিষ্টরা। পাটের বেশি দাম পাওয়ায় খুশি কৃষক ও ব্যবসায়ীরাও।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামসুল হক বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, রাজশাহী জেলায় গত বছর (২০২০) পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৪ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু ২৬ হেক্টর বেড়ে চাষাবাদ হয়েছে ১৪ হাজার ৭৯৬ হেক্টর জমিতে। আর ২০১৯ সালে ১৩ হাজার ৮৪৬ হেক্টর জমিতে পাটের চাষাবাদ হয়েছিল। পাটের চাষ বেশি, ফলন ভালো ও দামও বেশি। পাটের এতো দাম এই প্রথম শুনলাম- বলেন এই কৃষিবিদ।
পাট ব্যবসায়ী সাইদুর রহমান বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, গত বছর (২০১৯) এক মণ পাট বিক্রি হয়েছে ১৪শ’ থেকে ১৫শ’ টাকায়। পরের দিকে দাম বাড়ে কিছুটা। পাট উঠার শুরুর দিকে ১৬শ’ থেকে ১৮শ’ বা ২ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হয়েছে। পরের দিকে প্রতি সপ্তায় দুই-তিনশ’ টাকা করে বেড়েছে প্রতি মণে। এ ভাবে বাড়তে বাড়তে সাড়ে ৫ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে। তবে এখনও বলা যাচ্ছে না, পাটের দাম আরও বাড়বে কিনা। কারণ বিশ্ব বাজারে সুতার দাম বেড়েছে, তাই পাটের দাম বেড়েছে বলে বড় বড় আড়ৎদাররা জানায়।’
পবা উপজেলার বড়গাছি গ্রামের পাটচাষি ইমরান আলী বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, ৭ বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছিলাম। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছিল। দাম পাবো না বলে প্রথমের দিকে পাট বিক্রি করেছিলাম। তবে সেই তুলনায় এখন ডাবল পাটের দাম। ভাবতে পারিনি পাটের এতো দাম এবার।
রাজশাহী রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর সহকারী পরিচালক কাজী সাইদুর রহমান বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, দেশ থেকে প্রতিবছরই পাট রফতানি বেড়েছে। এ কারণে পাটের দামও বাড়ছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এক কোটি ৮৮ লাখ ১৫ হাজার ৫৮৫.৭৪ ডলার, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এক কোটি ৯৯ লাখ ৯০ হাজার ৮৭৯. ৫৫ ডলার ও ২০১৯-২০ অর্থবছরে দুই কোটি ৩৪ লাখ ৭ হাজার ৫২৮.১৫ ডলারের পাট রফতানি হয়েছে রাজশাহী থেকে। পাটের দাম বাড়ার পেছনে এটিও একটি কারণ বলে মনে করছেন এই কর্মকর্তা।
কৃষিবিদ শামসুল হক আরও বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, পাটের দাম ভালো থাকায়, কয়েক বছর থেকে পাটের আবাদ বেড়েছে। এ কথার উত্তরে তিনি জানান, সরকারি পাটকল বন্ধ। তবুও পাট বিক্রিতে কৃষকের সমস্যা হবে না। কারণ বে-সরকারি পাট কলগুলো রয়েছে। এছাড়া বিদেশে পলিথিন ও প্লাস্টিক জাতীয় জিনিস থেকে মানুষ ফিরে আসছে। তাদের মধ্যে পাটের তৈরি ব্যাগের চাহিদা বেশি। পাট চাষে কৃষকের সুদিন ফিরেছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মোঃ মাইনুর রহমান (মিন্টু) রাজশাহী।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.