৪০ শট নিয়ে স্রেফ ১ গোল, তবু উচ্ছ্বসিত বার্সা কোচ

বিটিসি স্পোর্টস ডেস্ক: “৪০টি শট নিয়েছি আমরা… ৪০টি শট…,” হান্সি ফ্লিক যখন বলছিলেন, তার চোখেমুখে তখন ঝলমল করছে বিস্ময় আর আনন্দ। সেই ৪০ শটের স্রেফ একটিই প্রবেশ করেছে জালে। তাতেও ফ্লিকের মনে খুশির জোয়ার। জয়ের ব্যবধান নিয়ে তার আক্ষেপ খুব একটা নেই। বরং একাদশে অনেক পরিবর্তনের ম্যাচে দল যেভাবে খেলেছে, সেটিই তৃপ্তি দিচ্ছে বার্সেলোনা কোচকে।
সামনেই রেয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে কোপা দেল রের ফাইনাল। লা লিগায় মঙ্গলবার রেয়াল মায়োর্কার বিপক্ষে ম্যাচটিতে তাই বেশ কজন ফুটবলারকে বিশ্রাম দেন ফ্লিক। পাউ কুবার্সি, ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং, রাফিনিয়াকে এ দিন শুরুর একাদশে রাখেননি বার্সেলোনা কোচ। ক্লাবের হয়ে টানা ৮৬ ম্যাচ খেলার পর একটি ম্যাচের বিশ্রাম পান জুল কুন্দে।
গত অক্টোবরের পর প্রথমবার শুরুর একাদশে জায়গা পান আনসু ফাতি। তরুণ ডিফেন্ডার এক্তর ফোর্ত পান সুযোগ।
এত পরিবর্তন নিয়েও আক্রমণাত্মক ফুটবলের পসরা সাজায় বার্সেলোনা। প্রথমার্ধেই গোলে শট নেয় তারা ২৪টি! কিন্তু গোল বের করতে পারেনি। অবশেষে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে গোল করেন দানি ওলমো।
চলতি মৌসুমে বার্সেলোনার পঞ্চম ফুটবলার হিসেবে ১০ গোল স্পর্শ করেন ওলমো। আগেই তা করেছেন রবের্ত লেভানদোভস্কি, রাফিনিয়া, লামিনে ইয়ামাল ও ফেররান তরেস।
ওলমোর গোলের পর আরও অনেক আক্রমণ করেও আর গোল পায়নি বার্সেলোনা।
গোটা ম্যাচের ৭৮ শতাংশ সময় বল ছিল তাদের পায়ে। গোলে শট নেয় ৪০টি, এর ১৩টি ছিল লক্ষ্যে। কিন্তু গোল ওই একটিই। গাভির শট লাগে পোস্টে, সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন রোনাল্দ আরাউহো।
১২টি সেভ করেন মায়োর্কার গোলকিপার লেও রোমান।
ম্যাচ শেষে রোমান ও তার দলকে কৃতিত্ব দিলেন ফ্লিক। নিজেদের পারফরম্যান্সেও সন্তুষ্ট বার্সা কোচ।
“আমার মনে হয়, আমরা ভালো একটি ম্যাচ খেলেছি। গোলের অনেক সুযোগ তৈরি করেছি ও আরও বড় ব্যবধানে জেতার সুযোগ ছিল, তারপরও আমি খুশি।”
“ওদের গোলকিপার লিও রোমান ভালো খেলেছে এবং দারুণ প্রদর্শনী মেলে ধরেছে। সেই কৃতিত্ব দিতেই হবে। সত্যি বলতে, মায়োর্কার গোটা রক্ষণভাগই আজকে ভালো খেলেছে, রক্ষণভাগ দারুণভাবে সামলেছে এবং এই কারণেই আমাদের জয়টি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।”
লিগের এখন যে অবস্থা, তাতে একটি ম্যাচে পয়েন্ট হারালেও বড় খেসারত দিতে হতে পারে। তবু সূচি এখন এতটাই ঠাসা, ক্লান্ত-শ্রান্ত ফুটবলারদের বিশ্রাম দেওয়ার বিকল্প দেখেননি কোচ।
“এটা তো আমার দায়িত্ব (ফুটবলারদের বিশ্রাম দেওয়া)। সূচির বিরামহীন ব্যস্ততার মধ্যে মৌসুমে অনেকবারই এটা করতে হয়েছে আমাকে এবং সামনেও করতে হবে। পরের ম্যাচটি সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ এবং আমরা এভাবেই তা সামলাব।”
অনিয়মিত বেশ কজনকে একাদশে নিয়েও যেভাবে খেলেছে দল, কোচ তাতে মুগ্ধতার অনেক উপকরণ দেখছেন। তারকাদের কয়েকজনকে বিশ্রাম দিলেও জয়ের বিশ্বাস তার ছিল ভালোভাবেই।
“৪০টি শট নিয়েছি আমরা… সবকটিই লক্ষ্যে ছিল না, কিন্তু ৪০টি শট! যেভাবে খেলেছি আমরা, দারুণ ছিল। অনেক সুযোগ তৈরি করেছি, হাতছাড়াও করেছি অনেক, তবে গোল হজমও করিনি। এত পরিবর্তনের পরও জিতেছি, সেটা ১-০ ব্যবধানেই হোক… আমরা যেভাবে খেলেছি, প্রশংসা করতেই হবে।”
“আমি সবসময়ই ইতিবাচক ভাবি। কাজেই আমার মাথায় কখনোই ছিল না যে আমরা ম্যাচটি হারব। আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল ম্যাচটি নিয়ন্ত্রণ করা ও খুব বেশি ভুল না করা। সেটি করতে পেরেই আমি খুশি। কখনও কখনও ১-০ ব্যবধানও ভালো। আগের ম্যাচগুলোর চেয়ে রক্ষণ অনেক ভালো সামলেছি আমরা। আমরা ভালো পথেই আছি।”
এই জয়ের স্বস্তিকে সঙ্গী করেই শনিবার কোপা দেল রের ফাইনালে রেয়াল মাদ্রিদের মুখোমুখি হবে বার্সেলোনা। আগামী মাসে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দলটির বিপক্ষে লা লিগার ম্যাচও আছে, যেটি শিরোপা লড়াইয়ে হয়ে উঠতে পারে নিয়ামক। ফ্লিকের মনোযোগ এখন এই দুই ম্যাচে।
“বার্সা ও রেয়াল মাদ্রিদ দুটি দুর্দান্ত দল এবং এটাই স্বাভাবিক যে শিরোপার ফয়সালা হবে সেরা দুই দলের লড়াইয়ে। ওদের বিপক্ষে মৌসুমে দুটি ম্যাচ আছে আমাদের। আমরা কাপ ও লিগ, দুটিই জিততে চাই। কাজেই ওদেরকে হারাতেই হবে। কাজটা সহজ হবে না, তবে মনোযোগ ওদের দিকে রাখতে হবে।” #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.