২৫ বছরে প্রথমবার আমেথিতে নেই গান্ধী পরিবারের কোনো প্রার্থী

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কংগ্রেসের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত উত্তর প্রদেশ রাজ্যের রায়বেরেলি ও আমেথি আসনে লোকসভা প্রার্থিতা ঘোষণা করেছে দলটি। তবে গত ২৫ বছরের মধ্যে এবারই প্রথম আমেথিতে নেই গান্ধী পরিবারের কোনো প্রার্থী। এই নির্বাচনে রায়বেরেলি থেকে প্রার্থী হচ্ছেন রাহুল গান্ধী। আর আমেথি থেকে দাঁড়াচ্ছেন কিশোরীলাল শর্মা। চার দশকের বেশি সময় ধরে গান্ধী পরিবারের বিশ্বস্ত অনুগামী তিনি।
উল্লিখিত দুই আসনে সাধারণ মানুষ গান্ধী পরিবারের ম্যানেজার হিসেবে মনে করে কিশোরীলাল শর্মাকে। অতীতে গান্ধী পরিবারের একাধিক সদস্যের ওই আসনে জয়ের পেছনে তার বড় ভূমিকা ছিল বলে মনে করা হয়ে থাকে। ২০ মে পঞ্চম দফায় ভোট হবে রায়বেরেলি ও আমেথিতে। চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করা হবে ৪ জুন।
কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে রায়বেরেলির প্রার্থী হিসেবে রাহুলের নাম ঘোষণা করল কংগ্রেস। শুক্রবারই তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেবেন। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া শেষে মিছিল করবেন, যেখানে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব ছাড়াও উপস্থিত থাকবেন তার মা সোনিয়া গান্ধী ও বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। এই মিছিলে রায়বেরেলি বিরাট জমায়েত দেখতে পাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এই আসন থেকে গান্ধী পরিবারের একাধিক সদস্য অতীতে নির্বাচনে জিতেছেন, যাদের মধ্যে রয়েছেন রাহুল গান্ধীর দাদা ফিরোজ গান্ধী, দাদি ইন্দিরা গান্ধী ও মা সোনিয়া গান্ধী। ২০০৪ সাল থেকে একটি উপনির্বাচনসহ পরপর পাঁচটি লোকসভা নির্বাচনে রায়বেরেলি থেকে জিতেছেন সোনিয়া। অতীতে একবার জনতা পার্টি ও একবার ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) রায়বেরেলি আসন জিতলেও এটিকে গান্ধী পরিবারের নিরাপদ আসন বলে মনে করা হয়।
৫ বছর আগে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে পাশের আসন আমেথি থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন রাহুল। হেরেছিলেন এক সময়ের জনপ্রিয় টেলিভিশন তারকা, বিজেপির নেত্রী স্মৃতি ইরানির কাছে। স্মৃতি ইরানি এবারও আমেথিতে বিজেপির প্রার্থী। সম্ভবত সেই কারণেই আমেথি থেকে রাহুলকে সরিয়ে প্রার্থী করা হয়েছে রায়বেরেলিতে।
আমেথিতে দাড়িয়েছেন চার দশক ধরে গান্ধী পরিবারের বিশ্বস্ত নেতা কিশোরীলাল শর্মা। আদতে পাঞ্জাবের লুধিয়ানার মানুষ কিশোরীলালকে ১৯৮৩ সালে আমেথিতে প্রার্থী করা হয়েছিল। তাকে সেখানে নিয়ে আসেন রাজীব গান্ধী। তখন থেকেই পরিবারের পক্ষে এই আসন ও পাশের রায়বেরেলি দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছেন কিশোরীলাল।
ধারণা করা হয়ে থাকে, ওই অঞ্চলে সামান্য সময় কাটিয়েও সোনিয়া গান্ধীর পরপর পাঁচবার জয়ের পেছনে রয়েছে কিশোরীলালের মস্তিষ্ক ও পরিশ্রম।
গতবারের হারের পরে আমেথি থেকে রাহুল গান্ধী দাঁড়াবেন কি না—তা নিয়ে দীর্ঘ জল্পনার পরে তিনি রায়বেরেলিতে সরে যান। স্বাভাবিকভাবেই এটিকে তার সার্বিক পরাজয় হিসেবে ব্যাখ্যা করছে বিজেপি। বিজেপির প্রার্থী স্মৃতি ইরানি আগেই বলেছেন, জেতার ব্যাপারে রাহুল গান্ধীর আত্মবিশ্বাস এতটাই কম যে তিনি সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না।
আজ আরও একধাপ এগিয়ে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানে এক জনসভায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রায়বেরেলি থেকে রাহুল গান্ধীর দাঁড়ানোর প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি আগেই বলেছিলাম, (কেরালার) ওয়েনাড়ে পরাজয়ের ভয়ে রাজপুত্র নিজের জন্য অন্য আসন খুঁজছেন। এখন তাকে আমেথি থেকে পালিয়ে রায়বেরেলি আসন বেছে নিতে হয়েছে৷ এই নেতারা লোকেরা ঘুরে ঘুরে সবাইকে বলে, ডরো মৎ! ভয় পেয়ো না! আমি তাদের ওই একই কথা বলব, ‘ডরো মৎ! ভাগো মৎ! ভয় পেয়ো না! পালিয়ে যেয়ো না!’ #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.