১৫০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়ে ১৩৩ জনকে গ্রেপ্তার!

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী যোদ্ধা ও ইসরায়েলের মধ্যকার যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী চার দিনে দেড়শ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে তেল আবিব। এর মধ্যেই ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে অভিযান ও গ্রেপ্তার অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। ফাত্তাহ শাসিত ফিলিস্তিনের এই অঞ্চলে প্রায় বিনা বাধায় আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে নেতানিয়াহুর সেনারা। যুদ্ধবিরতির এই সময়ে অঞ্চলটি থেকে ঠিক কতজন ফিলিস্তিনিকে বন্দি করা হয়েছে তা জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
স্থানীয় সময় শুক্রবার শুরু হওয়া হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির অন্যতম শর্ত ছিল গাজায় কোনো প্রকার সামরিক অভিযান ও গ্রেপ্তার বন্ধ রাখতে হবে। এ ছাড়া প্রতি একজন ইসরায়েলি বন্দি মুক্তির বিনিময়ে মুক্তি দিতে হবে তিনজন ফিলিস্তিনি বন্দিকে। এই শর্তের আওতায় মুক্ত ফিলিস্তিনিদের সবাই ছিলেন পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমের বাসিন্দা। তবে শর্তে পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে গ্রেপ্তার বন্ধের উল্লেখ না থাকায় সেখানে এখনও নির্বিচার অভিযান গ্রেপ্তার চালিয়ে যাচ্ছে নেতানিয়াহুর সেনারা। ফলে এই সময়ে মুক্তিপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনিদের সমান সংখ্যক নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে ইসরায়েল।
চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতির প্রথম চার দিনে ১৫০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয় ইসরায়েল। তাদের মধ্যে ১১৭ জন শিশু ও ৩৩ জন নারী। একই সময়ে হামাস ৬৯ জিম্মিকে মুক্তি দেয়। যাদের মধ্যে ৫১ জন ইসরায়েলি ও ১৮ জন অন্যান্য দেশের নাগরিক। আর এই সময়ে পূর্ব জেরুজালেম ও পশ্চিম তীর থেকে অন্তত ১৩৩ জন ফিলিস্তিনি নাগরিককে আটক করে ইসরায়েল। প্যালেস্টাইন প্রিজনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কাছ থেকে এমন তথ্য পাওয়া যায়।
সংগঠনটির মুখপাত্র আমানি সারাহনেহ জানান, যত দিন ইসরায়েলি দখলদারিত্ব বজায় থাকবে, তত দিন ফিলিস্তিনিদের গ্রেপ্তার বন্ধ হবে না। মানুষকে অবশ্যই বুঝতে হবে, এটি ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে দখলদারদের একটি কেন্দ্রীয় নীতি। এটি ফিলিস্তিনিদের যে কোনো ধরনের প্রতিরোধ আটকানোর একটি কৌশল। আমানি সারাহনেহ বলেন, ফিলিস্তিনিদের গ্রেপ্তার ইসরায়েল শুধু গত ৭ অক্টোবরের পর থেকেই করছে না। বিষয়টি ইসরায়েলের একটি দৈনন্দিন কাজ। যুদ্ধবিরতির প্রথম চার দিনে আরও বেশিসংখ্যক ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করা হবে বলে তারা ধারণা করেছিলেন।
গেল ৭ অক্টোবর অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড নামে ইসরায়েলে সামরিক অভিযান চালায় গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এ সময় প্রায় আড়াইশ ব্যক্তিকে আটক করে হামাস সদস্যরা। তারপর থেকেই অবরুদ্ধ গাজায় নির্বিচার বোমাহামলা চালাতে থাকে ইসরায়েল। তেল আবিবের এমন হামলায় প্রায় ১৫ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে অন্তত ছয় হাজার শিশু রয়েছে। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.