১১টি ধান কাটা মেশিন উধাও বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ কৃষি অফিসে দুদকের অভিযান 

বাগেরহাট প্রতিনিধি: অনিয়ম ও দুর্নীতিতে আলোচিত বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার কৃষিদপ্তরে এবার দুদক  অভিযান চালিয়েছে। অভিযানকালে এ অফিসের মাধ্যমে সরকারীভাবে বরাদ্দ দেয়া কৃষি যন্ত্রাংশের মধ্যে ১১টি ধানকাটা মেশিনের হদিস মিলছে না। প্রাথমিক তদন্তে মেশিন বিতরনে অনিয়ম প্রমানিত হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
তালিকায় নাম রয়েছে সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নূরুন্নবী পরাগসহ ইউনিয়ন পর্যায়ের প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরে বাগেরহাট জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সহকারি পরিচালক মো. সাইদুর রহমানের নেতৃত্বে একটি টিম ঘন্ট্যাব্যাপী অভিযান পরিচালনাকালে এ তথ্য ধরা পড়ে।
অভিযান শেষে উপস্থিত সংবাদকর্মীদের সাথে এক প্রেস ব্রিফিং-এ দুদক কর্মকর্তা মো. সাইদুর রহমান বলেন, সরকারি ভাবে এ উপজেলায় ৭০% ভর্তুকী মূল্যে ২০২১-২২ ও ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে সাধারণ কৃষকদের মাঝে স্বল্প সময়ে ধান কাটার সুবিধার্থে ১৪টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার কৃষি যন্ত্রাশং (ধানকাটা মেশিন) কৃষি অফিস থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিতরণ করা হয়েছে। যা প্রতিটি মেশিনের মূল্য ধরা হয়েছে ৩০ লাখ থেকে ৩২ লাখ টাকা।
এর মধ্যে কৃষক বহন করেছে ৯ লাখ টাকা। বাকি টাকা সরকার ভতুর্কী দিয়েছেন। কাগজে কলমে এ মেশিনগুলো বিতরণ দেখানো হলেও বাস্তবে তা নেই। ১১টি মেশিনের কোন হদিস মিলছে না। প্রাথমিক তদন্তে কৃষি অফিস থেকে এ কৃষি যন্ত্রাংশ বিতরণে অনিয়ম প্রমানিত হয়েছে। পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এদিকে তালিকা প্রাপ্ত সুবিধাভোগী অনেকেই বলছেন, ন্যাশনাল আইডি কার্ড তার নিকট থেকে নিয়ে তালিকায় নাম সংযুক্ত করা হয়েছে। মেশিন আদৌ তিনি পাননি। আবার মেশিন প্রাপ্ত সুবিধাভোগীরা কেউ কেউ বলছেন, অফিসের অনুমতি নিয়ে অন্য উপজেলায় মেশিন পাঠানো হয়েছে। এ ধান কাটা মেশিন বিতরণে চরম অনিয়ম হয়েছে। সরকার অধিক মূল্যে ভতুর্কী দিয়ে সাধারণ কৃষকের সুবিধার্থে এ মেশিন দিয়েছেন। তা কোন কাজেই আসছে না। ভেস্তে গেছে কৃষি সেক্টরে সরকারের বরাদ্দ দেয়া কোটি কোটি টাকা।
এ বিষয়ে মোরেলগঞ্জ উপজেলায় চলমান কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, এ উপজেলায় গত ৩ অর্থ বছরে সাধারণ কৃষকদের মাঝে ধান কাটা মৌসুমে স্বল্প সময়ে ফসল কাটার সুবিধার্থে ১৪টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬টি মেশিন বিভিন্ন ইউনিয়নে ফসল কর্তন কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। বাকি ৫টি মেশিন এর পূর্বের কর্মকর্তা আকাশ বৈরাগীর অনুমতি নিয়ে অন্য উপজেলায় রয়েছে বলে এ কর্মকর্তা জানান।
তবে, তিনি আসার পরে কোন অনুমতি দেননি। মোরেলগঞ্জের কৃষি অফিসের সাবেক কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আকাশ বৈরাগী বলেন, ধান কাটা ১৪টি মেশিনই নিয়ম অনুযায়ী তালিকাপ্রাপ্তদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। বিতরণে অনিয়মের বিষয়ে তালিকায় নাম রয়েছে অথচ তিনি মেশিন পাননি এ রকম কোন অভিযোগ ইতোপূর্বে কেউ এসে তার দপ্তরে লিখিত বা মৌখিকভাবে বলেননি।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বাগেরহাট প্রতিনিধি মাসুম হাওলাদার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.