বিটিসিবিজ্ঞান–প্রযুক্তিডেস্ক: মার্কিন মহাকাশ সংস্থা বলেছে, নাসা এবং স্পেসএক্স হাবল স্পেস টেলিস্কোপকে উচ্চতর কক্ষপথে নিয়ে যাওয়ার জন্য ইলন মাস্কের কোম্পানির সঙ্গে একটি চুক্তির ব্যাপারে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে সম্মত হয়েছে। মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা বৃহস্পতিবার এ কথা জানায়।
বিখ্যাত মানমন্দিরটি ১৯৯০ সাল থেকে পৃথিবীর প্রায় ৩৩৫ মাইল (৫৪০ কিলোমিটার) উপরে একটি নির্দিষ্ট কক্ষপথে কাজ করছে এবং এটি সময়ের সাথে ধীরে ধীরে ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে।
মহাকাশের এই অঞ্চলে বায়ুমন্ডলীয় প্রভাব থাকায় হাবলকে ধীরে ধীরে পৃথিবীর দিকে আরো কম উচ্চতায় টেনে নেয় কিন্তু বিদ্যমান বায়ুমন্ডলীয় টানাকে মোকাবেলা করার জন্য হাবলের কোনো অন-বোর্ড প্রপালশন নেই এবং এর উচ্চতা পূর্বে স্পেস শাটল মিশনের সময় পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। হাবলকে আরো অধিক উচ্চতায় নিয়ে গেলে এটি কার্যকালের মেয়াদ আরো বৃদ্ধি পাবে।
প্রস্তাাবিত নতুন প্রচেষ্টায় একটি স্পেসএক্স ড্রাগন ক্যাপসুল ব্যবহৃত হবে।
‘একটি বাণিজ্যিক ক্রু আমাদের হাবল মহাকাশযানকে পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করতে পারে কিনা এ বিষয় গবেষণার জন্য স্পেসএক্স কয়েক মাস আগে নাসার সাথে যোগাযোগ করেছিল।’
এ কথা উল্লেখ করে নাসার প্রধান বিজ্ঞানী টমাস জুরবুচেন সাংবাদিকদের বলেছেন, এজেন্সি এ জন্য কোন অর্থ ছাড়াই সম্ভাব্যতা নিয়ে গবেষণায় সম্মত হয়েছে।
তিনি জোর দিয়েছিলেন যে প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জগুলি আরও ভালভাবে বোঝা না যাওয়া পর্যন্ত এই ধরণের মিশন পরিচালনা বা অর্থায়নের জন্য বর্তমানে কোন সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই।
প্রধান বাধাগুলির মধ্যে একটি হ’ল ড্রাগন মহাকাশযান, এটিতে স্পেস শাটলগুলির মতো রোবোটিক বাহু নেই এবং এই ধরনের মিশনের জন্য ড্রাগন মহাকাশযানের পরিবর্তনের প্রয়োজন হবে।
বিলিয়নিয়ার জারেড আইজ্যাকম্যানের অর্থায়নে বেসরকারি মহাকাশ ভ্রমণ স্পেসফ্লাইট পরিচালনায় পোলারিস প্রোগ্রামের সাথে অংশীদারিত্বে ধারণাটি প্রস্তাব করেছে স্পেসএক্স। জারেড আইজ্যাকম্যান গত বছর অন্য তিনজন ব্যক্তিগত মহাকাশচারীর সাথে কক্ষপথে পৃথিবী প্রদক্ষিণ করার জন্য একটি স্পেসএক্স ক্রু ড্রাগন ভাড়া করেছিলেন।
হাবলকে পুনরুদ্ধার করা ভবিষ্যতে পোলারিস মিশনের লক্ষ্য হতে পারে কি-না সেই প্রশ্নের জবাবে আইজ্যাকম্যান বলেন, ‘পোলারিস প্রোগ্রামের জন্য আমরা যে প্যারামিটারগুলি প্রতিষ্ঠিত করেছি তার মধ্যে এটি অবশ্যই মানানসই হবে।’
বৈজ্ঞানিক ইতিহাসের সবচেয়ে মূল্যবান উচ্চ প্রযুক্তির হাবল টেলিস্কোপ মহাবিশ্বের রহস্য উম্মোচনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। যার মধ্যে রয়েছে এই বছরে মহাবিশ্বে সবচেয়ে দূরের নক্ষত্র শনাক্ত করা, যা এর আগে মানুষের দৃষ্টিতে আসেনি। মহাবিশ্বের শুরুর দিকের এই নক্ষত্রের নাম রাখা হয়েছে ইরেন্ডেল, যার অর্থ প্রথম ভোরের আলো। এই নক্ষত্র থেকে আমাদের কাছে আলো পৌঁছাতে সময় লেগেছে ১২.৯ বিলিয়ন বছর৷
হাবল স্পেস টেলিস্কোপ প্রজেক্ট ম্যানেজার প্যাট্রিক ক্রুস ২০৩৭ সালে কক্ষপথে পুন:স্থাপনের ৫০ শতাংশ সম্ভাবনাসহ এই দশক জুড়ে এটি চালু থাকবে বলে আভাস দিয়েছেন। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.