হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি: বর্তমানে প্রচলিত আইন অনুযায়ী স্ত্রী ডিভোর্স দিলেও তাকে দেন মোহর পরিশোধের বিধান রয়েছে। আইনটি সংশোধনের দাবি জানিয়ে গতকাল বিকালে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় ৷ ‘স্ত্রী ডিভোর্স দিলে দেনমোহরের টাকা পাবে কেন?’ এমন স্লোগানকে সামনে রেখে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
হবিগঞ্জ মেন’স রাইটস রুলাল সোসাইটি ফাউন্ডেশন। আলোচনা সভায় বক্তারা তাদের দাবির পক্ষে নানা যুক্তি তুলে ধরেন।
সংগঠনটির চেয়ারম্যান সাংবাদিক মো:ইমদাদুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের দেশে সাধারণত বিয়ের সময় পাত্রী পক্ষ জোরপূর্বক পাত্রকে সাধ্যের অতিরিক্ত টাকা কাবিন নামায় ধার্য করতে বাধ্য করেন। আর অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসব কাবিন হয় বাকিতে। অর্থাৎ দেখা গেল কনে পক্ষের দাবি অনুযায়ী, কাবিন করা হল ১০ লাখ।
এর মধ্যে গহনা ও অন্যান্য জিনিস বাবদ ২ থেকে ৩ লাখ টাকা পরিশোধ দেখিয়ে পুরোটাই বাকি রাখা হয়।’
তিনি বলেন, ‘ইসলামী বিধান হল বিয়ের সময়ই দেনমোহর পুরোটা পরিশোধ করা। তবে এই কথা শুনে কে? বাকি থাকা বা বাড়তি এই দেনমোহন পরে কাল হয়ে দাড়ায়। বিভিন্ন মামলা স্টাডি থেকে জানা গেছে, অতিরিক্ত দেনমোহরের কারনে স্বামী তার স্ত্রী ও পরিবারের লোকজনের অনৈতিক দাবি মেনে নিতে বাধ্য হন।’
বক্তারা বলেন, ‘পবিত্র কোরআনের সুরা বাকারার আয়াত নং- ২২৯ অনুসারে যদি কোন স্ত্রী তার স্বামীর কাছ থেকে মুক্ত হতে চান তবে কোন কিছুর বিনিময় হতে হবে, যা তার মোহরানার অতিরিক্ত হবে না।
তাই ইসলাম অনুসারে দেখা যায়, স্ত্রী কর্তৃক স্বামী ক্ষতিগ্রস্ত হলে স্ত্রী স্বামীকে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য। কিন্তু আমাদের দেশীয় আইন অনুযায়ী স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে তালাক প্রদান করা হলেও স্বামীকে দেনমোহর প্রদান করতে হয়, যা ইসলামের সঙ্গে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।’
বক্তরা অভিযোগ করেন, ‘এই আইনটিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে কিছু সংখ্যক ‘দুষ্টু’ নারী বিয়ের নামে কাবিনের ব্যবসা করছে। ঐ সমস্ত নারীরা বিয়ে করে এবং ১ থেকে ৬ মাস পরে স্বামীকে তালাক দিয়ে কাবিনের টাকা আদায় করে। অথচ স্বামীরা নিরুপায়। কারণ আইনে আছে স্বামীকে কাবিনের টাকা পরিশোধ করতে হবে।’
বিশেষ আলোচক হিসেবে বক্তব্যবে সাংবাদিক জুনাইদ চৌধুরী বলেন, ‘লন্ডন প্রবাসী এক নারী প্রতি বছর বাংলাদেশে এসে বিয়ে করে কাবিনের ২০ লাখ টাকা নিয়ে যায়। যার শিকার হয়েছে আমার পাশের গ্রামের এক ছোট ভাই। অনেক নারী কাবিনের ব্যবসা করে কোটিপতি হয়েছে। তাই বহু বিবাহ রোধে বিবাহের রেজিষ্ট্রেশন ডিজিটালাইজেশন করা হোক। এভাবে চলতে পারে না।’ পাশাপাশি বাংলাদেশ মেন’স রাইটস রুলাল ফাউন্ডেশন -এর পক্ষ থেকে এই আইনটির সংশোধনের দাবি জানানো হয়।
আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, সংগঠনটির মহাসচিব হাফেজ মুজাহিদুল ইসলাম চৌধুরী উজ্জ্বলসহ জে.এইচ. খান শাহীন, মোঃ আনোয়ার হোসেন, হবিগঞ্জ জেলা শাখার আহ্বায়ক হাফেজ তাজুল ইসলাম,মুস্তাফা হোসাইন, আমিনুল ইসলাম,মিছবাউর রহমান,সাইদুল ইসলাম প্রমুখ।
আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান সাংবাদিক ইমদাদুল হক চৌধুরী।
অনুষ্টানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে সুরা পাঠ করেন জাকারিয়া ইমতিয়াজ রিয়াজ।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.