হবিগঞ্জে ড্যান্ডি নেশার কবলে কোমলমতি শিশুরা

হবিগঞ্জ শহর ও আশ-পাশ এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে এর ব্যাপকতা। শহরের এক শ্রেণির রং ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফার আশায় কোমলমতি শিশুদের হাতে ছাড়া মুল্যে বিক্রি করছে। ফলে স্কুল পড়ুয়া ও পথশিশুরা এ নেশায় আসক্তির সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
বিশেষ করে ছিন্নমূল শিশুদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে এ নেশা। এ সব শিশুরা সারাদিন রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে-ঘুরে ভিক্ষা করে। সারাদিনে যে টাকা হাতে আসছে সে টাকা দিয়ে সংগ্রহ করছে ড্যান্ডি নামক নেশার দ্রব্য।
এ মরণঘাতী নেশা শুধুমাত্র পথশিশু বা ছিন্নমুল শিশুদের মধ্যে নয় ড্যান্ডিতে আসক্ত হয়ে পড়ছে। স্কুলগামী অল্প বয়সী ছেলেরাও। শিশুদের মাদকে নতুন করে সংযোজিত হয়েছে এ ড্যান্ডি।
জুতা কিংবা ফোমে ব্যবহৃত সলিউশন (আঠা) পলিথিনে ভরে কিছুক্ষণ পরপর মুখের সামনে নিয়ে শ্বাস টেনে নেশা করছে তারা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, শহরের থানার মোড়, সদর হাসপাতাল এলাকা, আদালত পাড়া, নতুন বাস স্যান্ড, চৌধুরী বাজার নদীর পাড়, শায়েস্তানগর, শায়েস্তানগর রেলওয়ে জংশন এলাকাগুলোতে প্রকাশ্যে ড্যান্ডি নেশা গ্রহন করছে কোমলমতি শিশুরা। আইন-শৃংঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ সাধারন মানুষ এসব দেখেও না দেখার ভান করছে।
থানার মোড় এলাকায় ড্যান্ডি সেবনকারী শিশু শিহাব জানায়, সারাদিন খাটুনির পর হাত-পা ব্যথা করে। তখন পলিথিনে ফুঁ দিয়ে নিশ্বাস নিই। প্রথমে বুক জ্বালা করে, কিছুক্ষণ পর ভালো লাগে, ঘুম আসে। ঘুমালে কোনো কষ্ট থাকে না। এমনকি ক্ষুধাও লাগে না।
এ বিষয়ে একজন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, এর প্রতিক্রিয়া খুবই বিপদজনক। অতিমাত্রায় এসব নেয়ার ফলে মানুষের মস্তিকে সুস্থ ভাবে চিন্তা করার ক্ষমতা যে কেমিকেল বিক্রিয়ার ফল, লাইক সিরোটনিনকে এতো কমিয়ে দেয় আর অক্সিজেনের অভাব ঘটিয়ে মারাত্মক হেলোসিয়েসন তৈরি করে।
এর ব্যবহারকারীরা সাধারণত হায়পক্সিয়া (অক্সিজেনের অভাব) মারা যায় কারণ, এটি অক্সিজেন বন্ধ করে মস্তিক এবং শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে যেটি মৃত্যুর কারণ পর্যন্ত হতে পারে।
এ ব্যাপারে সরকারি শিশু পরিবারের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা তত্ত্বাবধায়ক নিপুন রায় বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, ‘শুধুু ড্যান্ডি কেন যে কোন নেশা নির্মূল করা কোন কালেই সম্ভব হয়নি। আর হয়ত হবেও না, কিন্তু নিজের-নিজের জায়গা থেকে আমাদের কাজ করে যেতে হবে।
তিনি আরো বলেন, এই ব্যাপারে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে, রাস্তাঘাটে এরকম দেখলেই ওদের নিবৃত্ত করতে হবে। ওদের বোঝাতে হবে সাময়িক সুখের নেশায় কি সর্বনাশের দিকে ওরা যাচ্ছে।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.