সুন্দরবনে লাগা অগুন শতভাগ নিয়ন্ত্রন হয়নি, ফায়ার লেন কেটে আগুনের বিস্তৃতি ঠেকানোর চেষ্টা, তদন্ত কমিটি গঠন

বাগেরহাট প্রতিনিধি: আবারও আগুন লেগেছে বিশ্ব ঐতিহ্য বাগেরহাটের পুর্ব-সুন্দরবনে। পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের কলমতেজী ফরেস্ট টহল ফাঁড়ির কাছে ওই আগুনের সূত্রপাত হয়।

যা শনিবার সকালে বনরক্ষীদের নজরে আসলে সারা দিনের চেষ্টায়ও আগুন শতভাগ নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। বনের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে দাউদাউ করে জ্বলছে আগুন।
বনরক্ষী ও স্থানীয়রা নালা কেটে (ফায়ার লেন) আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন।
শরণখোলা ও মোরেলগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও পানির অভাবে আগুন নেভাতে কাজ করতে পারেনি।
শরণখোলা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আফতাব আলম এ তথ্য বিটিসি নিউজকে জানিয়ে বলেন, আগুন নেভাতে তারা চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। তবে অগ্নিকান্ডের কারণ এবং কী পরিমাণ বনভূমি আগুনে জ্বলছে তা নিশ্চিত করতে পারেনি বনবিভাগ।
প্রসঙ্গতঃ ২০২৪ সালের ৪ মে চাঁদপাই রেঞ্জের আমুরবুনিয়া বনের লতিফের ছিলা এলাকায় আগুন লেগে ৭.৯৮ একর বনভূমির গাছপালা পুড়ে যায়। এতে ১১ লাখ ৫৮ হাজার ২৫০ টাকার ক্ষতি হয় বলে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়।
র্প্বু-সুন্দরবন বাগেরহাট বিভাগীয় অফিস সূত্র জানায়, পুর্ব- সুন্দরবনে গত ২২ বছরে ২৫ বার আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। সবই ঘটেছে পূর্ব সুন্দরবন এলাকায়। এসব আগুনের ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন বলছে, বেশির ভাগ আগুন লেগেছে জেলে-মৌয়ালদের অসাবধানতায়।
পূর্ব সুন্দরবন চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা ফরেস্টার বিপুলেশ্বর দাস বিটিসি নিউজকে জানান, শনিবার সকাল ৭টার দিকে কলমতেজী টহল ফাঁড়ির আওতাধীন টেপারবিল নামক এলাকার বনের ওপর থেকে ধোঁয়ার কুন্ডলী দেখতে পান স্থানীয় গ্রামবাসী। তারা অফিসে এসে এ খবর জানালে লোকজন নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান বনরক্ষীরা। তাৎক্ষণিক আগুন নিয়ন্ত্রণে রাখতে অগ্নিকান্ড এলাকায় নালা কাটা শুরু করেন। যাতে বনের ব্যাপক এলাকায় আগুন ছড়াতে না পারে।
তিনি আরও জানান, অগ্নিকান্ডের স্থান বন অফিস থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে। কাছাকাছি কোথাও পানির কোনো উৎস নেই। বনের খাল তার দূরত্বও ঘটনাস্থল থেকে দুই থেকে আড়াই কিলোমিটার। জোয়ার হলে নৌপথে পাম্প মেশিন নিয়ে পানি দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।
শরণখোলা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আফতাবি আলম বিটিসি নিউজকে জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও পানির অভাবে কাজ শুরু করতে পারেনি। পরে মোংলা ও কচুয়া থেকেও ফায়ার সার্ভিসের আরও দুটি ইউনিটকে নেওয়া হয়েছে।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ বাগেরহাটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নূরুল করীম রবিবার সকালে বিটিসি নিউজকে বলেন ফায়ার সার্ভিস ও বনরক্ষীরা শনিবার দিন ব্যাপী চেষ্টা করে কলমতেজী এলাকার আগুন নিয়ন্ত্রনে নিয়েছে। আগুন শতভাগ নিয়ন্ত্রনে না আসলেও আগুনের বিস্তৃতি ঠোকাতে ফায়ার লেন কাটা হয়েছে। আর সুন্দরবনের আগুনের সুত্রপাত কিভাবে হয়েছে এবং কতটুকু এলাকা পুড়েছে তা খোজ খবর নেয়া হচ্ছে,। অগ্নিকান্ডের ঘটনা তদন্তে একটি ৩ সদস্যেও তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বাগেরহাট প্রতিনিধি মাসুম হাওলাদার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.