সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে : মির্জা আব্বাস

কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘আজকে দেশ যে অবস্থায় আছে, এখন থেকে জাতিকে মুক্ত করতে হলে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দরকার। আমরা দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলব, সেই কারণে এই সমাবেশ। আপনাদের আমন্ত্রণ জানাতে এসেছি। আমরা ঢাকা শহরসহ সারা বাংলাদেশে এমন অবস্থা সৃষ্টি করব- এই সরকার পদত্যাগে বাধ্য হবে।’
আজ মঙ্গলবার ঢাকা জেলা বিএনপির উদ্যোগে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের জিনজিরায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। সরকারের পদত্যাগসহ একদফা দাবিতে ১৫ দিনব্যাপী লাগাতার কর্মসূচির প্রথম দিনে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
দেশবাসীর উদ্দেশে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘যুবক ভাইয়েরা, আমার মায়েরা, আমার বোনেরা- যারা বাইরে থেকে শুনছেন; আপনারা কেউ ঘরে বসে থাকবেন না। যদি ঘরে বসে থাকেন, আর মনে করেন তারেক রহমান, মির্জা আব্বাস আন্দোলন করছেন, এতেই হয়ে যাবে; না এতে কিছুই হবে না।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘যদি আপনারা অংশগ্রহণ না করেন, শেখ হাসিনা সরকারকে সরানো যাবে না। কারণ, তাদের হাতে পুলিশ আছে, বিজিবি আছে, র‌্যাব আছে, কোর্ট আছে। সুতরাং আমরা সব কিছুকে ছাপিয়ে, সব কিছু প্রতিরোধ করে দেশ ও দেশের জনগণকে মুক্ত করব, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব।’
তিনি বলেন, ‘আমরা শুধুমাত্র এই কেরানীগঞ্জে নয়; প্রত্যন্ত অঞ্চলে রোডমার্চ হচ্ছে, জনসভা হচ্ছে। একটাই কারণ এই যে সরকার- এটা সরকার নয়। জোর জবরদস্তি করে শেখ হাসিনা ওয়াজেদ রাজত্ব কায়েম করেছে। এই রাজত্ব আর করতে দেওয়া যায় না। এ জন্য আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েম করতে হবে। এ জন্য দেশনেত্রীকে মুক্ত করতে হবে।’
চোর-ডাকাতদের বিচার হয় না, বিচার হচ্ছে বিএনপি নেতাকর্মীদের উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘কেন বিএনপি নেতাকর্মীদের বিচার হবে? তারা গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের পক্ষে কথা বলে, দেশকে ভালোবাসে- এসব কি তাদের অপরাধ?’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এই সরকার বলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বলে কিছু নেই, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। এই সরকারের অবস্থা হচ্ছে, তোরা যে যা বলিস ভাই, আমার সোনার হরিণ চাই; তত্ত্বাবধায়ক বল, আর নিরপেক্ষ সরকার বল- আমি ক্ষমতায় থাকতে চাই। ক্ষমতায় থাকার বড় মজা, লুট করা যায়, বিদেশে টাকা পাচার করা যায়, দেশে-বিদেশে বাড়ি কেনা যায়, কানাডায় বেগম পাড়া করা যায়- এখানে লোভনীয় বিষয়গুলো জড়িত আছে। আর ৫০ বিঘার ওপর লাল বিল্ডিংয়ে থাকা যায়।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমরা আপনাদের কিছু করব না, দয়া করে ক্ষমতাটা ছাড়েন। পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করাবেন, আর কোর্ট দিয়ে আমাদের শাস্তি দেবেন- এটা হয় না। পাকিস্তানের আইয়ুব খানও ক্ষমতায় থাকতে পারেনি, আপনিও পারবেন না।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা বারবার বলেন সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবেন। আমিও বলি সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। কোন সংবিধান? বিচারপতি খায়রুল হকের মিথ্যা রায়ে সংশোধন করেছেন সেই সংবিধান? আমি বলতে চাই, ৯৬ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচন যে সংবিধানে হয়েছিল, সেই সংবিধান অনুযায়ী এবার নির্বাচন হবে। এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে ভয় কেন? ভয় হলো ওনারা ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না।’
ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরীর পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ডা. দেওয়ান সালাউদ্দিন বাবু, তমিজ উদ্দিন, নাজিম উদ্দিন মাস্টার, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, মৎস্যজীবী দলের সদস্যসচিব আবদুর রহিম, ঢাকা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার ইরফান ইবনে আমান অমি প্রমুখ।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জাহাঙ্গীর। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.