বিটিসি বিনোদন ডেস্ক: নানা বাধা-বিপত্তি পেরিয়েই তারকাদের সফলতার মুখ দেখতে হয়। সুযোগ না পাওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ অনেকেই করেন। এমনকি দর্শক-শ্রোতার কাছে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করতেও স্ট্রাগল করতে দেখা যায় তাদের।
তবে সবার দেখানো পথে হাঁটলেও ক্যারিয়ার শুরুর মাত্র ২ বছরেই রেকর্ড গড়ে রীতিমতো তাক লাগিয়ে দেন জনপ্রিয় মার্কিন সংগীতশিল্পী টেইলর সুইফট। নিজের দাদি ছিলেন অপেরা শিল্পী। ছোটবেলায় দাদির গান মুগ্ধ হয়ে শুনতেন তিনি।
তবে সংগীত আবহে বড় হওয়া এই শিল্পীর মঞ্চ যাত্রা শুরু হয় স্কুলে কবিতা আবৃত্তির মধ্য দিয়ে। সে সময়ই তার বাবা-মা লক্ষ্য করেন মেয়ের সংগীতের প্রতি যথেষ্ট প্রেম রয়েছে। অনুপ্রেরণা জোগাতে থাকেন তাকে। তবে তারাও হয়তো সে সময় ভাবেনি তাদের মেয়ে বিশ্বজোড়া খ্যাতি অর্জন করবে।
যাত্রা শুরুর গল্প বলতে গিয়ে এক সাক্ষাত্কারে সুইফট বলেন, ‘আমার বাবা-মা লক্ষ্য করেন যে, একবার আমার শব্দ ফুরিয়ে গেলে আমি নিজেই নতুন শব্দ তৈরি করতে পারি। আমার লেখার প্রতি আত্মবিশ্বাস এবং কথা বলে মুগ্ধ করার মতো গুণ রয়েছে। সত্যি আমি আমার মায়ের কাছে ঋণী। কারণ তিনিই শুরুতে আমাকে গানের প্রতি মনোযাগী করে তুলেছিলেন।’
যদিও কানাডিয়ান কান্ট্রি সংগীতশিল্পী শানায়া টোয়েইন সুইফটকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করে। এর বাইরেও তিনি লিয়েন রাইমস, টিনা টারনার, ডলি পার্টন প্যাটসি ক্লাইনের গানে প্রভাবিত হয়েছেন বলে জানান টেইলর। তবে সংগীত ক্যারিয়ারের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেন ২০০৬ সালে। এ বছরই প্রথম অ্যালবাম প্রকাশ করে রাতারাতি তারকা বনে যান। ২০০৮ সালে জায়গা করে নেন বিলবোর্ডে। তার দ্বিতীয় অ্যালবাম ফিয়ারলেস বিলবোর্ড ২০০ চার্টে ১১ সপ্তাহ ধরে শীর্ষস্থান দখল করেছিল।
এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি সুইফটকে। একের পর এক রেকর্ড গড়ার পাশাশাশি এরই মধ্যে কয়েকশ’ পুরস্কার ঘরে তুলেছেন তিনি। নামের সঙ্গে যুক্ত করেছেন অভিনেত্রী-প্রযোজক! শোবিজের প্রতিটি মাধ্যমে সফলতার পরিচয় দিচ্ছেন নিয়মিত। অভিনেত্রী-প্রযোজক হিসেবেও একাধিকবার সেরার মুকুট পরেছেন তিনি। তবে সবকিছু ছাপিয়ে গত বছরটাকে ক্যারিয়ারের সেরা সময় মনে করেন এই সংগীতশিল্পী-অভিনেত্রী।
যার স্বীকৃতিও চলতি বছর একের পর এক পাচ্ছেন তিনি। এ বছর পুরস্কার দিয়েও সবাইকে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন। সম্প্রতি লস অ্যাঞ্জেলসের ক্রিপ্টোডটকম অ্যারেনায় অনুষ্ঠিত গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডসে ইতিহাসের প্রথম শিল্পী হিসেবে চতুর্থবার ‘অ্যালবাম অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কার জিতে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন তিনি। গত বছর প্রকাশ পাওয়া তার রের্কড গড়া অ্যালবাম মিডনাইটের জন্য এ পুরস্কার ঘরে তুলেছেন তিনি।
গত নভেম্বরে যখন গ্র্যামির মনোনয়ন ঘোষণা হয়—তখন থেকেই সুইফটের রেকর্ডের দিকে চোখ ছিল তার ভক্ত-অনুসারীদের। কারণ এর আগে ৪ বার এ পুরস্কার পাননি আর কোনো শিল্পীই। বিষয়টি নিয়ে উচ্ছ্বসিত টেইলর বলেন, ‘এটা আমার জীবনের সেরা মুহূর্ত। আমাকে ভোট দেওয়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। আমি চাই আরো গান তৈরি করে যেতে। কারণ এটাই আমাকে খুশি রাখে।’ এমনকি পুরস্কার আসরেই আগামী ১৯ এপ্রিল নতুন অ্যালবাম প্রকাশের ঘোষণা দিয়ে ভক্তদের আনন্দ আরো বাড়িয়ে দেন তিনি। সব মিলিয়ে সামনের দিনগুলো সুইফটময় হতে যাচ্ছে বলেই মনে করছেন বিশ্ব সংগীতপ্রেমীরা।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.