শেখ হাসিনা পঞ্চাশ বছর ধরে প্রতিশোধ ও  জাতিকে বিভক্ত করার রাজনীতি করেছেন – আল্লামা মামুনুল হক 

খুলনা ব্যুরো: কারা নির্যাতিত মজলুম জননেতা এবং বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আল্লামা মামুনুল হক বলেছেন, ইতিহাসের শ্রেষ্ট ফ্যাসিবাদী শাসক শেখ হাসিনা ৫০ বছর ধরে প্রতিশোধ ও জাতিকে বিভক্ত করার রাজনীতি করেছেন। গত ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে ১৬টি লাগেজ নিয়ে ভারতে পালিয়ে গিয়ে এখনও সেখানে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। ভারতের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কেউ প্রতিবেশিসুলভ আচরণ করলে প্রতিবেশীর ন্যায়ই ব্যবহার পাবে আর যদি কেউ প্রভুসুলভ আচরণ করে তাহলে দাঁতভাঙ্গা জবাব দেওয়া হবে।
তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর)  নগরীর ডাকবাংলায় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস খুলনা মহানগর ও জেলা শাখার উদ্যোগে এ গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, মোদীবিরোধী আন্দোলন ও শাপলা চত্বরে হেফাজতের আন্দোলন, পিলখানাসহ সকল শাহাদত বরণকারীদের মাগফিরাত কামনা ও হত্যাকারীদের বিচার আহতদের সু-চিকিৎসা এবং সকলের ক্ষতিপূরণের দাবিতে গণসমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের অভিভাবক পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা রফিকুর রহমান।
মজলিসের খুলনা জেলা সভাপতি মাওলানা মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন, মুফতি ওয়ালিউল্লাহ মাহমুদ, মুফতি জিহাদুল ইসলাম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি, খুলনা জেলা ইমাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা গোলাম কিবরিয়া, ইসলামী আন্দোলনের নগর সহ-সভাপতি শেখ মোঃ নাসির উদ্দিন, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের প্রতিনিধি মুফতি ইউসুফ আজাদী, নগর খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত সভঅপতি এসএম হারুনুর রশীদ, নওয়াপাড়া খেলাফত মজলিসের নেতা মাওলানা মাসুম বিল্লাহ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতা মাওলানা আবু বকর সিদ্দিক, মাওলানা জালালুদ্দীন আহমাদ, মাওলানা শারাফাত হুসাইন, মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী, মাওলানা মুশতাক আহমাদ, অধ্যক্ষ মাওলানা আঃ আউয়াল, মুফতী শরীফ সাঈদুর রহমান, মাওলানা ইমদাদুল হক, জহুরুল তানভীর, মাওলানা নাসিরুদ্দীন কাসেমী, মুফতী গোলামুর রহমান, মুফতী আব্দুল্লাহ ইয়াহ্ইয়া, মুফতী ওলীউল্লাহ মাহমুদ, হাফেয শহীদুল ইসলাম, মোল্লা খালিদ সাইফুল্লাহ, মাওলানা আসআদুল্লাহ, মুফতী রমিজ উদ্দীন, মুফতী রমিজ উদ্দীন, মাওলানা মুহসিন উদ্দীন, মাওলানা মাসুম বিল্লাহ, মাওলানা মুশতাক আহমাদ, মাওলানা আঃ রহমান, মুফতী মাহফুজুর রহমান, মাওলানা মুহিব্বুল মুরসালিন, হাফেয সৈয়দ ইমদাদুল্লাহ, মাওলানা মুজাহিদুর রহমান, মুফতী মাসুম বিল্লাহ রাহমানী, মুহাঃ আরিফুল ইসলাম, মুফতী আজিজুল হক, মুফতী সালিম, মাওলানা আমিরুল ইসলাম, মাওলানা মানসুরুর রহমান, মাওলানা আহমাদুল্লাহ, মুফতী আঃ কাদের, মাওলানা আঃ রহমান, মাওলানা মুনির আহমাদ প্রমুখ।
প্রধান বক্তা আল্লামা মামুনুল হক আরও বলেন, সৈরাচারী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানানোর চেষ্ঠা করেছিলেন। একই সাথে তিনি এদেশের হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। ৫ আগষ্টের গণঅভ্যুত্থানকে ব্যর্থ করে দিতে ভারতে বসে একের পর এক ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। ষড়যন্ত্রকারী থেকে সতর্ক থাকারও আহবান জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ আর কোন দিন ভারতের সেবাদাসে পরিনত হবে না। ভারতের কোন দালাল সরকার বাংলাদেশের ক্ষমতায় বসতে পারবে না।
তিনি বলেন, ৭২এর সংবিধান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী। যে মুক্তিযুদ্ধের সূচনা হয়েছিল জালেমের বিরুদ্ধে মজলুমের এ লড়াইয়ের শ্লোগানের মধ্যদিয়ে ৭২-এর সংবিধানের মাধ্যমে তা’ হত্যা করা হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সাথে ইসলাম ওতপ্রোতভাবে জড়িত। যারা ইসলামের বিরুদ্ধে অবস্থান নিবে বাংলাদেশে তাদের জায়গা হবে না উল্লেখ করে তিনি সকল ইসলামী দলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
বাগেরহাট ব্যুরো জানায়, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, ‘হিন্দুরা যত ইচ্ছা মূর্তি তৈরি করতে পারবে কিন্তু মুসলমানের কোনও স্থাপনার সামনে মূর্তি থাকতে পারবে না। হিন্দুদের পূজাকে সামনে রেখে নৈরাজ্যবাদীরা যাতে কোন নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকে খেলাফত মজলিস, হেফাজতে ইসলামসহ সব ইসলামি দলকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। হিন্দুদের কোন মুর্তিতে কেউ হাত দেয়ার চেষ্টা করলে সেই হাত ভেঙ্গে দেয়া হবে।’
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে বাগেরহাট জেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে জেলা খেলাফত মজলিসের আয়োজনে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিনতাইয়ের মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী বন্ধুরূপী রাষ্ট্র বাংলাদেশের বুকের ওপর মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী নীতিমালার আলোকে গণঅভিপ্রায় বিরোধী সংবিধান বাংলাদেশের মানুষের ওপর চাপিয়ে দিয়েছিল।
তিনি বলেন, ৫ আগস্ট একটি সংগ্রামের মধ্যদিয়ে  নতুন বাংলাদেশ রূপান্তরিত হওয়ার স্বপ্ন মানুষের চোখে ভেসে উঠেছে। ছাত্রসমাজ ও আলেম সমাজকে আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। সব ইসলামপন্থি দল ঐক্যবদ্ধ হয়ে ন্যায় ও ইনসাফপূর্ণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। কেউ যাতে ঐক্য বিনষ্ট করতে না পারে, সেদিকে ছাত্র এবং উলামায়ে কেরামকে সচেতন থাকতে হবে।’
‘আওয়ামী লীগের রাজনীতি ছিল বিভাজনের রাজনীতি। আমরা আর বিভাজন চাই না, আমরা সবাই মিলে একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবো। সেখানে সব ধর্মের লোক সমান অধিকার ভোগ করবে বলে উল্লেখ করেন মাওলানা মামুনুল হক।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস বাগেরহাট জেলা শাখার আহ্বায়ক মাওলানা রমিজউদ্দীনের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, যুগ্ম মহাসচিব মুফতি শারাফাত হোসাইন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হাসনাত জালালী, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মাওলানা রুহুল আমিন খানসহ বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের বিভিন্ন পর্যয়ের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর খুলনা ব্যুরো প্রধান এইচ এম আলাউদ্দিন এবং মাশরুর মুর্শেদ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.