বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইসরায়েলের সশস্ত্র ও নিরাপত্তা বাহিনী, ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ও ইসলামিক জিহাদ এবং সুদানের বিদ্রোহী দলগুলোর নাম জাতিসংঘের কালো তালিকায় রাখা হয়েছে।
২০২৩ সালে শিশুদের ওপর করা সহিংসতার দায়ে তাদের নাম তালিকাভুক্ত করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। মঙ্গলবার শিশুদের বিরুদ্ধে লঙ্ঘনবিষয়ক অপরাধীদের একটি বার্ষিক বৈশ্বিক তালিকায় তাদের নাম যুক্ত করেছেন তিনি।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ঐ প্রতিবেদনে, স্কুল ও হাসপাতালে হামলার জন্য ইসরায়েল ও সুদানের সশস্ত্র বাহিনী এবং শিশুদের অপহরণের জন্য হামাস ও ইসলামিক জিহাদের নিন্দা করেছেন গুতেরেস।
গত বছরের এপ্রিল থেকে সুদানের সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে আধা-সামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স। শিশুদের নিয়োগ ও ব্যবহার, ধর্ষণ ও অন্যান্য যৌন সহিংসতা এবং স্কুল ও হাসপাতালে হামলার জন্য তাদের নামও তালিকায় রাখা হয়। শিশু ও সশস্ত্র সংঘাতের জন্য গুতেরেসের দূত ভার্জিনিয়া গাম্বা সংকলিত এই প্রতিবেদনে ছয়টি গুরুতর সহিংসতার কথা বলা হয়েছে। সেগুলো হলো—হত্যা ও বিকলাঙ্গ করা, যৌন সহিংসতা, অপহরণ, শিশুদের নিয়োগ ও ব্যবহার, সাহায্য প্রবেশে অস্বীকার এবং স্কুল ও হাসপাতালে হামলা।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ‘২০২৩ সালে সশস্ত্র সংঘাতে শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার মাত্রা চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। এর মধ্যে গুরুতর লঙ্ঘন বৃদ্ধি পেয়েছে ২১ শতাংশ। আর হত্যা ও বিকলাঙ্গের ঘটনার সংখ্যা বিস্ময়করভাবে ৩৫ শতাংশ বেড়েছে।’
প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়, ‘ইসরায়েল ও অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চল, কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র, মিয়ানমার, সোমালিয়া, নাইজেরিয়া ও সুদানে সর্বোচ্চসংখ্যক গুরুতর লঙ্ঘনের ঘটনা নিশ্চিত করা হয়েছে।’
ইউক্রেনে শিশুদের হত্যা ও বিকলাঙ্গ করা এবং স্কুল ও হাসপাতালে হামলার জন্য রুশ সশস্ত্র বাহিনী ও সহযোগী গোষ্ঠীগুলোকে গত বছর এ তালিকায় যুক্ত করা হয়। এ বছরও গোষ্ঠীগুলো তালিকায় রয়ে গেছে।
এ বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধ করা হলে রাশিয়ার জাতিসংঘ মিশন তাত্ক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি। তবে ২০২২ সালে ইউক্রেনে সর্বাত্মক হামলা চালানোর পর থেকেই বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে মস্কো।
গাজায় লাশের সারি বাড়ছেই
এদিকে গাজায় লাশের সারি বাড়ছেই। প্রতিদিনই ইসরায়েলি আগ্রাসনে নিরীহ ফিলিস্তিনিরা প্রাণ হারাচ্ছে। সেখানে অধিকাংশ হতাহতই নারী ও শিশু। ছোট ছোট শিশু জানেও না যে কেন তাদের ওপর এভাবে হামলা চালানো হচ্ছে। সেখানে ইসরায়েলি আগ্রাসন কবে শেষ হবে তা-ও অনিশ্চিত।
অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় প্রায় আট মাস ধরে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে ৩৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। অন্যদিকে হামাস ও ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে যে, তারা কাতার এবং মিশরের মধ্যস্থতাকারীদের কাছে জাতিসংঘ-সমর্থিত যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়া জমা দিয়েছে।
গাজায় অবস্থানরত ইউনিসেফের মুখপাত্র জেমস এল্ডার বলেছেন, সেখানকার বাড়ি, হাসপাতাল, স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষি, অর্থনীতি সবকিছুই ধ্বংস হয়ে গেছে। সেখানে এখনো বোমা ফেলা হচ্ছে। হিজবুল্লাহ এক ঘোষণায় জানিয়েছে যে, লেবাননে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় তাদের এক শীর্ষ কমান্ডার নিহত হয়েছেন। বেশ কিছু প্রতিবেদনে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে যে, আবু তালেব নামেও পরিচিত ছিলেন তালেব আবদুল্লাহ।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরই গাজায় পালটা আক্রমণ চালায় ফিলিস্তিন।
গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সেখানে ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৭ হাজার ১৬৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরো ৮৪ হাজার ৮৩২ জন। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.