নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁ সদর উপজেলার কীর্ত্তিপুর উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সিফাত হোসেনকে (১৪) আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলায় চার শিক্ষকসহ পাঁচজনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২১ মার্চ) বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাসুদ রানা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে সোমবার (২০ মার্চ) তারা আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে তাদের জামিন নামঞ্জুর করে আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেন অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইমতিয়াজুল ইসলাম।
কারাগারে পাঠানো ব্যক্তিরা হলেন, কীর্তিপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আজাহারুল ইসলাম (৫৬), সহকারী শিক্ষক মো. সাজেদুর রহমান সাজু (৪৩), শ্রী সুবল মণ্ডল (৩৯), মো. নজরুল ইসলাম (৫১) ও দাসকান্দি গ্রামের মৃত হক সাহেবের ছেলে মিঠু।
মামলার এজাহার সূত্র থেকে জানা গেছে, গত বছরের ৩১ মে সকালে স্কুলের অ্যাসেম্বলিতে দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে ওই বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী সিফাত হোসেনকে বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী স্মরণ শাহরিয়ার, হৃতিক ও রিয়াদ হোসেন মারধর করে। ঘটনাটি সিফাত তার পরিবারকে জানালে একই দিনই সিফাতের বাবা মিজানুর রহমান প্রধান শিক্ষক আজহার আলীর কাছে অভিযোগ করেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক বিষয়টিতে কর্ণপাত না করে উল্টো সিফাতকেও মারপিট করতে বলেন, নতুবা হাতে মেয়েদের চুড়ি পরে থাকতে বলেন।
এদিকে এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযোগ করায় বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী স্মরণ শাহরিয়ারের বাবা সাজেদুর রহমান শিক্ষার্থী সিফাতকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন এবং বিদ্যালয় হতে টিসি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি প্রদান করেন। এ সময় বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুবল মণ্ডল ও নজরুল ইসলাম ও সিফাতকে নিয়ে হাসাহাসি করেন। ন্যায়বিচার না পাওয়ায় মনে কষ্ট নিয়ে বাড়ি ফিরে ওই দিন রাতে গ্যাস বড়ি (কীটনাশক) খায় সিফাত। পরে গুরুতর অবস্থায় প্রথমে তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতাল এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরের দিন ১ জুন দুপুরে তার মৃত্যু হয়।
আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাসুদ জানান, এ ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থীর বাবা মিজানুর রহমান বাদী হয়ে আটজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও চার থেকে পাঁচজনের বিরুদ্ধে নওগাঁ আমলী আদালতে ওই বছরের ৯ জুন মামলা দায়ের করেন।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.