রুদ্ধশ্বাস লড়াই ড্র, সুপার ওভারে জিতে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস

বিটিসি স্পোর্টস ডেস্ক: ইতিহাস গড়তে প্রয়োজন ১৬০ রান।জবাব দিতে দিতে নেমে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাটিং ছিল দারুণ পরিণত। জয়ের জন্য একপর্যায়ে ৩৬ বলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রয়োজন ছিল ৫০ রান। হাতে ৮ উইকেট।
ক্রিজে আছেন দুর্দান্ত খেলতে থাকা ক্যাপ্টেন মোনাক পাটেল ও আগের ম্যাচের হিরো আন্দ্রেস জোন্স।জয় তখন স্বাগতিকদের হাতের মুঠোয়। খাদের কিনারা থেকে এরপর পাকিস্তানের  দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন। আমির-আফ্রিদি-হারিসের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে খেই হারায় যুক্তরাষ্ট্র,সমীকরণ নেমে আসে ৩ বলে ১২ রানে।স্বস্তির জয়ের স্বপ্ন তখন পাকিস্তানের সমর্থকদের।
আগের তিন বল দারুণ তিনটি ইয়ার্কার করা হারিস রউফ পরের বল করেলন ফুলটস।সীমানা ছাড়া করতে ভুল করেননি লড়াকু এক ইনিংস খেলা জোন্স। পরের ব্ল ফের ইয়ার্কার, সিঙ্গেলই নিতে পারলেন জোন্স। স্ট্রাইকে নিতিশ কুমার।রউফ ফের করলেন ফুলটস। বাবর আজম যেন বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না। মিড অফে বৃত্তের ভেতরে থাকা প্লেয়ারের উপরে নিতিশ উড়িয়ে নিতিশ মারলেন চার।ম্যাচ ড্র !
খেলা গড়ালো সুপার ওভারে।আগে ব্যাটিংয়ে যুক্তরাষ্ট্র।যেখানে ভুলে যাওয়ার মতো এক ওভার করলেন মোহাম্মদ আমির। একের পর এক ওয়াইডে অবসর ভেঙে ফেরা এই বাঁহাতির করা ওভার যেন চলল ‘অনন্তকাল’ ধরে।বাউন্ডারি, দৌড়,ও এক্সটা মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্র নিলো ১৮ রান। পরে সেটি ঠেকিয়ে ইতিহাস গড়লো ক্রিকেট বিশ্বের নতুন চমক যুক্তরাষ্ট্র।
জবাব দিতে নেমে স্টিভেন ও মোনাক প্যাটেল  উইকেট বাঁচিয়ে খেলেছেন দেখেশুনে। পাকিস্তানের তিন তারকা পেসারদের সামলে প্রথম পাঁচ ওভারে দুজনে মিলে তুলেন ৩৬ রান।ষষ্ঠবারের প্রথম বলে স্টিভেনকে(১৬ বলে ১২ রান) উইকেট কিপারের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান নাসিম শাহ।প্রথম ৬ ওভারে ১ উইকেটে ৪৪ রান তোলে আমেরিকা।দুই উইকেট বেশি হারিয়ে যেখানে পাকিস্তান তুলেছিল কেবল ৩০ রান।
দ্বিতীয় উইকেটের জুটিতে মোনাকের সঙ্গে আন্দ্রিস গাউস মিলে যুক্তরাষ্ট্রকে জয়ের পথে রাখেন। দুজনে মিলে ৪৮ বলে গড়েন ৬৮ রানের জুটি।১৪ তম ওভারে দারুণ এক বলে গাউসকে বোল্ড করেন হারিস রউফ। এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান করেন ২৬ বলে ৩৫ রান। তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে দলকে এগিয়ে নেন মোনাক। পূর্ণ করেন ফিফটি। তবে এরপরই আমিরের বলে আউট হয়ে ফিরেন। তবে এরপরও ম্যাচের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ছিল স্বাগতিকদের। জয়ের জন্য ২৪ বলে প্রয়োজন ছিল ৩৫ রান।তবে দারুন বোলিংয়ে পাকিস্তান ম্যাচে ফিরলেও শেষ রক্ষা হয়নি।
এর আগে ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে  পাকিস্তানের শুরুটা হয়েছিল দুঃস্বপ্নের মত। পাওয়ারপ্লেতেই ৩ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা পাকিস্তান শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৫৯ রান তুলে। দলকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেওয়ার মূল কৃতিত্ব বাবর আজম ও শাদাব খানের। ২৬ রানে তিন উইকেট হারানো পর চতুর্থ উইকেটে এই দুজনে মিলে ৪৮ বলে যোগ করেন ৭২ রান।
ঘরের মাঠে পাকিস্তানকে শুরু থেকে চাপে রাখে যুক্তরাষ্ট্রের পেসাররা।ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ব্যক্তিগত ৯ রান করে ফেরেন রিজওয়ান। তিন নামে উসমান খান ফিরেছেন ৩ রান করে।সুবিধা করতে পারেননি ফখর জামানও (৭ বলে ১১ রান)।
পাওয়ারপ্লেতে পাকিস্তান ৩ উইকেটে হারিয়ে তুলতে পেরেছে কেবল ৩০ রান।যার মধ্যে ১৪ বল খেলে মাত্র ৪ রান করেন বাবর। চাপ সামলে ধীরে ধীরে অবশ্য দুইজনই হাত খুলে খেলতে শুরু করেন। ৯ ওভারে ৪৬ রান থাকা পাকিস্তান বাবর-শাদাবের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে পরের চার ওভারে যোগ করেন ৫২ রান। দলীয় ৯৮ রানের মাথায় ভাঙে এ দুজনের ৭২ রানের জুটি।তবে ক্রিজে আজম খান প্রথম বলেই ডাক মেরে ফিরলে চাপ বাড়ে পাকিস্তানের উপর।সেখান থেকে দলকে একাই টেনে নেন বাবর।
১২৫ রানে ফিরে যান তিনিও। দুটি ছক্কা ও তিন চারে ৪৩ বলে ৪৪ রানের ইনিংস খেলেন পাকিস্তান অধিনায়ক। শেষদিকে ১৫ বলে ২৩ রান আসে শাহিন শাহ আফ্রিদির ব্যাট থেকে। এছাড়া ১৪ বলে ১৮ রান করেন ইফতেখার আহমেদ।
যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে নশতুশ কেনজিগে তিনটি এবং পাওয়ারপ্লে দুর্দান্ত এক স্পেল উপহার দেওয়া সৌরভ নেথ্রালভাকার দুটি উইকেট নেন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.