রিয়াল মাদ্রিদের কিছু বাজে পরাজয়ের ইতিহাস

 

বিটিসি স্পোর্টস ডেস্ক: লা লিগায় চার ম্যাচ বাকি থাকতেই নিজেদের ৩৬তম শিরোপা নিশ্চিত করে ফেলেছে রিয়াল মাদ্রিদ। রোববার (১২ মে) দলটির ট্রেনিং গ্রাউন্ড মাদ্রিদের ভালদেবেবাস পার্কে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় লা লিগার ট্রফি।
এ সময় দলের জার্মান মিডফিল্ডার টনি ক্রুস বলেন, ‘তিন সপ্তাহ পর আরেকবার এখানে উদযাপন করব।’ আগামী ১ জুন চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে রিয়ালের প্রতিপক্ষ বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। সেই ম্যাচ জিতে ১৫তম চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা নিয়েই উদযাপনের আগাম ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন ক্রুস।
লস ব্ল্যাঙ্কোসদের এমন আনন্দঘন মুহূর্ত ছাড়াও রয়েছে কিছু বাজে পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ। চলুন দেখে নেওয়া যাক লা লিগা চ্যাম্পিয়নদের এমন কয়েকটি পরাজয়ের ইতিহাস:
অলিম্পিক লিঁও ৩-০ রিয়াল মাদ্রিদ

olympique-lyonnais-v-real-madrid-pre-season-friendly-5c7f9b0da67ccae7dd000002jpg

২০০৫ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বে ফ্লোরেন্ট মালুদা এবং জুনিনহোর লিঁওর মুখোমুখি রিয়াল মাদ্রিদ। ওই ম্যাচে রবিনহো এবং রাউলের দুর্দান্ত​আক্রমণকে ঠেকিয়ে দেয় লিঁও’র রক্ষণভাগ। ওই ম্যাচে জন কেরেউ, জুনিনহো এবং সিলভিয়ান উইল্টর্ড স্বাগতিকদের হয়ে গোলের দেখা পেয়েছিলেন।
বরুশিয়া ডর্টমুন্ড ৪-১ রিয়াল মাদ্রিদ

real-madrid-v-borussia-dortmund-uefa-champions-league-5c7f9f4fa67ccad7e6000020jpg

২০১২-১৩ মৌসুমে ইউরোপের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দলগুলোর মধ্যে একটি ছিল বরুসিয়া ডর্টমুন্ড। জার্গেন ক্লপের অধীনে সেবারের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে রিয়াল মাদ্রিদের মুখোমুখি হয় বরুসিয়া ডর্টমুন্ড। ওই ম্যাচে রিয়ালের রক্ষণকে রীতিমতো তছনছ করে জয় পায় জার্মান ক্লাবটি। রবার্ট লেভানডফস্কি তার ক্যারিয়ারের সেরা পারফরম্যান্স করে লস ব্লাঙ্কোসদের বিপক্ষে। সেই ম্যাচে তিনি চারবার রিয়ালের জালে বল জড়িয়েছিলেন। রিয়ালের রক্ষণভাগে রীতিমতো ঝড় তুলেছিলেন পোলিশ এ স্ট্রাইকার। তার ৪ গোলের তিনটিই এসেছিল ১৬ মিনিটের ব্যবধানে।
বায়ার্ন মিউনিখ ৪-১ রিয়াল মাদ্রিদ

morientes-kuffour-fc-bayern-muenchen-real-madrid-4-1-5c7fa08cb66f151b9b000001jpg

১৯৯৯-২০০০ মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গ্রুপ সি’র ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল দুই ইউরোপীয় হেভিওয়েট বায়ার্ন মিউনিখ ও রিয়াল মাদ্রিদ। গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় লিগে মিউনিখে বায়ার্নের মুখোমুখি হয় রিয়াল। সেই ম্যাচে স্বাগতিকদের কাছে পরাজয় বরণ করে লস ব্ল্যাঙ্কোসরা। তবে ৪-১ গোলের ওই ম্যাচে ফলাফল আরও খারাপ হতে পারত।
প্যারিস সেন্ট জার্মেই ৪-১ রিয়াল মাদ্রিদ

luis-enrique-martinez-of-real-madrid-5c7fa242b66f15cb0a000001jpg

১৯৯২-৯৩ উয়েফা কাপে কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে প্যারিস সেন্ট জার্মেইর মুখোমুখি হয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। সেই ম্যাচে ৩-১ গোলে এগিয়ে থেকেও পিএসজির কাছে পরাজয় বরণ করতে হয় লস ব্ল্যাঙ্কোসদের। ৪-১ গোলের ওই হারে সেবার টুর্নামেন্ট থেকেই ছিটকে পড়ে স্প্যানিশ জায়ান্টরা। ওই ম্যাচের ৩৪তম মিনিটে পিএসজির হয়ে গোলের সূচনা করেন জর্জ ওয়েহ এবং ম্যাচের শেষ ১০ মিনিটে হয়েছিল তিনটি গোল। প্রথম লেগের বাজে খেলার পর ওই পিএসজি দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন করে।
ডার্বি কাউন্টি ৪-১ রিয়াল মাদ্রিদ

image-placeholder-title

১৯৭৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স কাপে দ্বিতীয় রাউন্ডে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ডার্বি কাউন্টি মুখোমুখি হয়েছিল। ঘরের মাঠে প্রথম লেগে ৪-১ গোলে জিতে সবাইকে অবাক করে দিয়েছিল ডার্বি। চার্লি জর্জ ডার্বি কাউন্টির হয়ে ওই ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেন। তবে রিয়াল শেষ পর্যন্ত ঘুরে দাঁড়ায়, দ্বিতীয় লেগে ৫-১ গোলে জিতে পরের রাউন্ডে যায়।
আয়াক্স ৪-১ রিয়াল মাদ্রিদ

fbl-eur-c1-real-madrid-ajax-5c7fb310b66f151ba3000001jpg

ইউরোপে রিয়াল তাদের সবচেয়ে বাজে পরাজয়ের শিকার হয় আয়াক্সের বিপক্ষে। পুরো ম্যাচে লস ব্ল্যাঙ্কোসদের সুযোগ ছিল, কিন্তু নিয়তি আয়াক্সের পক্ষে ছিল এবং তারা একটি ঐতিহাসিক ৪-১ গোলের জয় নিয়ে ঘরে ফিরে। এটি রিয়াল মাদ্রিদের ইতিহাসে ঘরের মাঠে সবচেয়ে বাজে পরাজয়।
লিভারপুল ৪-০ রিয়াল মাদ্রিদ

liverpool-v-real-madrid-uefa-champions-league-5c7fa696c4cbcce871000003jpg

২০০৮-৯ মৌসুমে চ্যাম্পিনস লিগের দ্বিতীয় রাউন্ডে লিভারপুলের কাছে হেরেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। ঘরের মাঠে প্রথম লেগে ১-০ গোলে হারার পর, অ্যাওয়ে লেগে রিয়াল সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছিল। লিভারপুলের হয়ে অ্যানফিল্ডে সেদিন গোল করেছিলেন ফার্নান্দো টরেস এবং স্টিভেন জেরার্ড। ম্যাচটি পরে ৪-০ গোলে শেষ হয়।
হামবুর্গ ৫-১ রিয়াল মাদ্রিদ

kevin-keegan-1980-european-cup-final-5c7fa7cbc4cbccd921000001jpg

১৯৮০ সালের উয়েফা কাপের ফাইনালে যাওয়ার পথে সেমিফাইনালে জার্মান ক্লাব হামবুর্গের মুখোমুখি হয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে রিয়ালের ২-০ গোলে জয়ের পর অনেকটা নির্ভার ছিল। তবে হামবুর্গ নিজেদের মাঠে প্রথমার্ধে ৪ টি এবং ম্যাচের শেষ মিনিটে আরেকটি গোল করে রিয়ালের আরেকটি শিরোপার স্বপ্ন ভেস্তে দেয়। হামবুর্গ পরে নটিংহাম ফরেস্টের বিপক্ষে ফাইনালে ১-০ গোলে পরাজিত হয়।
বরুশিয়া ম’গ্লাডবাখ ৫-১ রিয়াল মাদ্রিদ

fc-bayern-muenchen-borussia-moenchengladbach-5c7faae6c4cbcc3652000001jpg

১৯৮৫-৮৬ মৌসুমে উয়েফা কাপে বরুসিয়া ম’গ্লাডবাখের মুখোমুখি হয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। সেই ম্যাচের প্রথম লেগে নিজেদের মাঠে জার্মান ক্লাবটি লস ব্ল্যাঙ্কোসদের ৫-১ গোলে বিধ্বস্ত করে। তবে দ্বিতীয় লেগে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে রিয়াল অন্যতম সেরা প্রত্যাবর্তন করে। ৪-০ গোলে জিতে অ্যাওয়ে গোলের সুবাদে ফাইনালে উঠে স্প্যানিশ জায়ান্টরা।
বেনফিকা ৫-১ রিয়াল মাদ্রিদ

di-stefano-5c7fac1fc4cbcc214e000001jpg

১৯৬৪-৬৫ সালের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল তখনকার দুই পরাশক্তি রিয়াল মাদ্রিদ এবং বেনফিকা। হোসে অগাস্টো, ইউসেবিও, সিমোস এবং কলুনার গোলে প্রথম লেগে রিয়ালকে ৫-১ গোলে বিধ্বস্ত করেছিল বেনফিকা। তবে ঘরের ম্যাচে সম্মানজনক ২-১ গোলের ফলাফল সত্ত্বেও বাঁচতে পারেনি রিয়াল।
কাইজারস্লটার্ন ৫-০ রিয়াল মাদ্রিদ

spanish-cup-final-5c7faf19b66f155e0b000001jpg

অনেকেই হয়তো কাইজারস্লটার্নের কথা শুনেননি। এই দলের কাচে রিয়াল মাদ্রিদ তাদের ইতিহাসে সবচেয়ে বাজে পরাজয় বরণ করে। ১৯৮২ সালের উয়েফা কাপে কাইজারস্লটার্নের বিপক্ষে প্রথমার্ধে দুটি লাল কার্ড এবং দ্বিতীয়ার্ধে আরও তিনটি গোল এবং একটি লাল কার্ড পায়। ওই ম্যাচে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত হয় লস ব্লাঙ্কোসরা। তবে একটি ম্যাচে তিনজনের লাল কার্ডে এমন পরাজয় একপ্রকার স্বাভাবিকই ছিল। তবে রিয়াল তাদের হোম লেগে ৩-১ গোলে জিতলেও এটি তাদের পরবর্তী রাউন্ডে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল না।
মিলান ৫-০ রিয়াল মাদ্রিদ

ruud-gullitt-5c7feac1c4cbcc97bc000004jpg

১৯৮৮-৮৯ চ্যাম্পিয়ন্স ক্লাব কাপের সেমিফাইনালে ইউরোপীয় হেভিওয়েট এসি মিলান এবং রিয়াল একে অপরের বিরুদ্ধে লড়েছিল। মিলান মাঠে নামিয়েছিল কিংবদন্তি যেমন কার্লো আনচেলত্তি, ফ্রাঙ্ক রিজকার্ড, রুড গুলিট এবং মার্কো ভ্যান বাস্টেনকে। সেই ম্যাচে মিলানে রিয়াল ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়। ওই ম্যাচে আনচেলত্তি, রিজকার্ড, রুড গুলিট, মার্কো ভ্যান বাস্টেন ও ডোনাডুনি একটি করে গোল করেছিলেন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.