রেমালের ব্যাপক তাণ্ডবে এবারও বুক চিতিয়ে লড়েছে সুন্দরবন

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: বঙ্গোপসাগরে বিভিন্ন সময়ে জন্ম নেওয়া ঘূর্ণিঝড়ে স্থলভাগের ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি ঠেকাতে বরাবরই ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছে সুন্দরবন। রেমালের ব্যাপক তাণ্ডবে এবারও বুক চিতিয়ে লড়েছে সুন্দরবন। ঝড়ের সামনে লড়াই করে বাতাসের গতিবেগ অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে এই বন।
গতকাল রবিবার থেকে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাব পড়তে শুরু করে উপকূলে। সময় পার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডব বাড়তে থাকে। গভীর রাত পর্যন্ত বাতাসের গতিবেগের সাথে ভারী বৃষ্টি হয়। সকাল থেকে বাতাসের সঙ্গে ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে।
জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছিল ১৬৩ আশ্রয়ণ কেন্দ্র। সাড়ে ৩ হাজারের মত সেচ্ছাসেবী, পুলিশ সদস্যরা, নৌপুলিশ, কোস্টগার্ড, বিজিবির সদস্য, বনবিভাগের সদস্য, গ্রাম পুলিশসহ বেসরকারি সংস্থার কয়েকটা দল কাজ করেছে।
উপজেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, শ্যামনগর উপকূলের প্রায় ৫৪১ শত কাঁচা ঘরবাড়ি মধ্যে আংশিক নষ্ট হয়েছে ৪৪৮, সম্পূর্ণ নষ্ট হয়েছে ৯৩টি কাঁচা ঘরবাড়ি। ৫০০ মৎস্য ঘের ভেসে গিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
সমাজিক বন বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার গাছের ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয় কৃষকের রোপণকৃত সবজির ৭০-৭২ জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলায় ১২৯ কিলোমিটার বাঁধের মধ্যে ২ কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। এখনো পর্যন্ত বাঁধ ভাঙনের খবর পায়নি।
বুড়িগোয়ালিনি ইউনিয়নের আব্দুল হালিম বলেন, ‘সুন্দরবন আমাদের মায়ের মত। প্রতিবছর মে মাসে বড় ঝড় হয়ে থাকে। আমাদের উপকূল এলাকা সুন্দরবনের কোল ঘেষে, তাই যত বড় ঝড় আসুক সুন্দরবন আমাদের রক্ষা করে।
গাবুরা ইউপি চেয়ারম্যান মো. মাসুদুল আলম বলেন, ‘গাবুরা একটা দ্বীপ ইউনিয়ন। এখনো কোনো বাঁধ ভাঙনের ঘটনা ঘটেনি। সুন্দরবন না থাকলে আমাদের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যেত না। ’
সাতক্ষীরা পশ্চিম সুন্দরবনের রেঞ্জ কর্মকর্তা কেএম ইকবল হোসাইন চৌধুরী বলেন, ‘সুন্দরবন এ উপকূলের পাশে থাকার কারণে বড় ক্ষতির হাত রক্ষা পায়। সুন্দরবনের ক্ষতির পরিমাণ এখনো জানাযায়নি। নেটওয়ার্কের সমস্যা, যে কারণে জানতে দেরি হবে।’
শ্যামনগর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নজিবুল আলম বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রেমাল রাতে আঘাত হানার পরে দুর্বল হয়ে পড়ছে। কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে আমরা খোঁজ খবর নিয়েছি। ঝড়রে পরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর সাতক্ষীরা প্রতিনিধি মো. সেলিম হোসেন #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.